শুভেন্দু অধিকারী। — ফাইল চিত্র।
আদালতের লড়াই শেষে শর্তসাপেক্ষে অনুমতি মিললেও উলুবেড়িয়ায় সভা করবে না বিজেপি। বুধবার সন্ধ্যায় উলুবেড়িয়ায় গিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই ঘোষণা করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, ২১ জুলাইয়ের সভা করতে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে আগামী ২৭ তারিখ হাওড়ায় পাল্টা প্রতিবাদ সভা করবে দল। হাওড়া গ্রামীণের পুলিশ সুপারের অফিস অভিযানের ডাক দিয়েছেন শুভেন্দু। আদালতের অনুমতি পাওয়ার পরেও বিজেপির সমাবেশ না করার সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘লোক হবে না বলেই সমাবেশ বাতিল করে দিয়েছে বিজেপি।’’
উলুবেড়িয়ায় সভা হবে কি না তা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই শুনানি চলছিল কলকাতা হাই কোর্টে। বুধবার বিকেলে রায় দেয় আদালত। সভার অনুমতি দিলেও ছিল একগুচ্ছ শর্ত। সেই শর্তের অন্যতম, ওই দিন রাত ৮টার পর সভা করতে হবে। একই সঙ্গে সভার জায়গা বদলে তা উলুবেড়িয়ায় বিজেপির দফতরের সামনে করার নির্দেশ দেয় আদালত। স্থান ও সময় পছন্দ না হওয়াতেই সমাবেশ বাতিল করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘কার্যত হাই কোর্টকে দিয়ে যে সব শর্ত দেওয়া হয়েছে, তা সভা করার বিপক্ষে। কিন্তু বিজেপি বিশ্বের সর্ববৃহৎ পার্টি। দেশ চালায়। ১৮টি রাজ্য চালায়। তাই বিজেপিকে সভা করতে দেওয়ার ঝুঁকি হয়তো মহামান্য উচ্চ আদালত নিল না।’’
সমাবেশের শর্ত হিসাবে আদালত জানায়, রাত ৮টায় সভা শুরু করা যাবে এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে লোক সভায় যোগ দিতে যেতে পারবে। রাত ১০টার পরে সভা চালানো যাবে না। একই সঙ্গে বলা হয়, সভায় ব্যবহার করা যাবে না ২০টির বেশি লাউডস্পিকার। উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসককে এমন স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে যাতে তিনি মাইক কোথায় লাগানো যাবে তা ঠিক করতে পারবেন। ২০টির বেশি লাউডস্পিকার হলে বাদও দিতে পারবেন তিনি। ওই জায়গায় গত কয়েক মাসের আইনশৃঙ্খলার কথা মাথায় রেখে সভা থেকে কোনও উস্কানিমূলক মন্তব্য করা যাবে না।
আদালতের নির্দেশে আগে যে জায়গায় সভা হওয়ার কথা ছিল, সেখানে অনুমতি মেলেনি। বিজেপির দলীয় দফতরের সামনে সভা হবে। বুধবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে স্থানীয় থানাকে সভাস্থল সম্পর্কে অবগত করতে হবে। পুলিশ সভাস্থল পরিদর্শন করবে এবং দেখবে যে দু’হাজার লোকের জন্য জায়গাটি পর্যাপ্ত কি না। যদি দেখা যায় দু’হাজার মানুষের জন্য সভাস্থল পর্যাপ্ত নয়, তা হলে কত মানুষ নিয়ে সভা করা হবে সে বিষয়ে পুলিশকে অবগত করবে বিজেপি। জাতীয় সড়ক যাতে অবরুদ্ধ না হয়, তা-ও খেয়াল রাখতে হবে। হাওড়ার স্থানীয় মানুষ ছাড়া বাইরের লোক যেন সভায় না আসেন তা নিশ্চিত করতেও বলা হয় বিজেপিকে।
আদালতে বিজেপি জানিয়েছিল, উলুবেড়িয়ায় জাতীয় সড়ক থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে বাউড়িয়ায় হবে সভা। এক মাস আগে সেখানে সভা করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। বিজেপির আইনজীবী আদালতে বলেন, ‘‘হাওড়া পুলিশ সুপার (গ্রামীণ)-এর কাছে সভার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। চার দিন আগে পুলিশ জানায় যে, অনুমতি দেওয়া হবে না।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘এক ব্যক্তি তাঁর জায়গায় সভার অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু মনে হয় তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। পরে তিনি ২১ জুলাইয়ে ওই জায়গা দিতে রাজি হননি।’’ এই মন্তব্য বিচারপতি বলেন, ‘‘কোনও ব্যক্তি তাঁর জায়গা ব্যবহার করতে দেবেন কি না, তা আদালত বলে দিতে পারে না। আদালতের সেই এক্তিয়ার নেই।’’ তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘অন্য দিন কর্মসূচি করতে আপনাদের অসুবিধা কোথায়?’’ বিজেপির আইনজীবীর দাবি করেন, ‘‘সভার জন্য সমস্ত লোককে বলা হয়ে গিয়েছে। দিল্লি থেকে নেতারা আসছেন। কলকাতায় অন্য সভা থাকার কারণে তাঁরা ভুবনেশ্বর থেকে গাড়িতে করে আসবেন। ওই জায়গার অনুমতি না পাওয়া গেলেও আমাদের কাছে আরও দু’টি বিকল্প রয়েছে। দু’হাজারের মতো লোক হবে।’’ এর পরেই অনুমতি দেয় আদালত। এটাকে বিজেপি দলের নৈতিক জয় বলেই দাবি করেছে। তবে সেই জয়ের পরে আদালতের রায়কে সম্মান জানিয়েও তিনি সমাবেশ করবেন না বলে জানান শুভেন্দু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy