অমিত শাহের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী। নয়াদিল্লিতে মঙ্গলবার। ছবি: টুইটার
রাজ্য নেতাদের নিয়ে কলকাতায় বৈঠকে বসেছেন দিলীপ ঘোষ। কলকাতার হেস্টিংসে যখন রাজ্য বিজেপি সভাপতির ওই বৈঠক চলছে, তখন দিল্লিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি সূত্র জানিয়েছে মঙ্গলবার দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে তাঁর বৈঠক। বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও দিলীপকে ছাড়াই দেখা করার কথা শুভেন্দুর। সোমবার রাতেই দিল্লি পৌঁছে গিয়েছেন তিনি। দিলীপ নয়, শুধু শুভেন্দুকেই শীর্ষতম নেতৃত্বের এই তলব নিয়ে রাজ্য বিজেপি-তে ডালপালা মেলছে নানা জল্পনা। অমিতা শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর শুভেন্দু টুইট করেছেন। লিখেছেন, ‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বাংলা নিয়ে কথা বলেছি। ওঁর আশীর্বাদ চেয়েছি। উনি আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, বাংলার পাশেই থাকবেন।’
শুভেন্দুর সঙ্গে মোদী, শাহ, নড্ডা কী বিষয়ে কথা বলবেন, তা নিয়েও অন্ধকারে রাজ্যের নেতারা। কেউ কেউ বলছেন, দিল্লিতে কোনও সাংগঠনিক বৈঠক নেই। তাই দিলীপকে ডাকা হয়নি। ‘বিরোধী দলনেতা’ হিসেবে তলব পেয়েছেন শুভেন্দু। বিধানসভার বিভিন্ন্য স্ট্যান্ডিং কমিটিতে কোন কোন বিধায়ক থাকবেন বা কারা চেয়ারম্যান মনোনীত হবেন, তা নিয়ে আলোচনা হবে মঙ্গল ও বুধবার। তবে রাজ্য বিজেপি-র বড় অংশই এই সহজ ব্যাখ্যাকে সহজ চোখে দেখছেন না। শীর্ষ নেতৃত্বের অন্য কোনও লক্ষ্য আছে বলেই মনে করছেন তাঁরা। যাঁরা বলছেন, শুভেন্দুর সঙ্গে দিল্লির শীর্ষনেতৃত্বের বৈঠক তো ভার্চুয়ালিও হতে পারত। বিধানসভা সংক্রান্ত ওই সব সিদ্ধান্তের জন্য কি খেবারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে হয়?
বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার পর্বে শুভেন্দুকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের গুরুত্ব দেওয়া, অনেক আসনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তাঁর মতামতকে প্রাধান্য দেওয়া নিয়ে বাংলার আদি বিজেপি নেতাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ছিল। বিশেষত, দিলীপ-অনুগামীদের অনেকে আপত্তি তুলেছিলেন। যে সব নবাগত বিজেপি-তে এসেই টিকিট পেয়েছিলেন, তাঁদের পরাজয় নিয়ে এখন সেই শিবির সরব। শুভেন্দু গেরুয়া শিবিরে যোগদানের পর যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের অনেকে এখন তৃণমূলের দিকে পা বাড়িয়ে। সে সব নিয়ে ‘আদি’ বিজেপি নেতাদের সমালোচনা চলছে। সম্প্রতি চুঁচুড়া ও আসানসোলে ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে দিলীপকে। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী দলনেতাকে কী ভাবে ‘আদি’ ও ‘নব্য’-দের নিয়ে চলতে হবে, তা-ও মঙ্গল এবং বুধবারের বৈঠকে শুভেন্দুকে শীর্ষনেতৃত্ব পরামর্শ দিতে পারেন বলেও অনেকে মনে করছেন।
Met the Honourable Union Home Minister @AmitShah Ji .
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) June 8, 2021
Discussed on several matters and seeked blessings for Bengal .
Honourable HM assured, he was and he will be there for Bengal always . pic.twitter.com/K7fzCjjNCu
বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার পরে কর্মীরা ‘আক্রান্ত ও ঘরছাড়া’ বলে বিজেপি দাবি করছে। কিন্তু তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত সে ভাবে আন্দোলনে নামতে পারেনি দল। রাজ্য সরকার তথা তৃণমূল যে ‘রাজধর্ম’ পালনের নজির দেখাচ্ছে, তাতে ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের ত্রাণ বিলির ক্ষেত্রেও এখনও পর্যন্ত বাধার মুখে পড়েনি বিজেপি। সোমবারই প্রধানমন্ত্রী সমস্ত রাজ্যকে বিনামূল্যে করোনা টিকা এবং দীপাবলি পর্যন্ত বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। যদিও আগে থেকেই ওই দুই ঘোষণাই করে রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে মোদীর ঘোষণার ফয়দা তোলার উপায় থেকে ঘরছাড়া কর্মীদের ফেরানোর দাবিতে আন্দোলন, দলের ভাঙাচোরা সংগঠন মেরামত করা থেকে পরবর্তী আন্দোলনের রূপরেখা ঠিক করা নিয়ে শুভেন্দুর সঙ্গে কথা বলতে পারেন মোদী, শাহ, নড্ডা। কিন্তু সেই সব আলোচনা রাজ্য সভাপতিকে বাদ দিয়ে কেন? এমনই প্রশ্ন উঠেছে বিজেপি-তে।
তবে রাজ্য বিজেপি-র একাংশের বক্তব্য, সাংগঠনিক আলোচনার জন্য নড্ডা তলব করলেও মোদী-শাহের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন খোদ শুভেন্দুই। তাঁদের দাবি, সম্প্রতি শুভেন্দুর বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের মামলা, সেচ দফতর নিয়ে তদন্তের হুঁশিয়ারি এবং তাঁ এক ঘনিষ্ঠকে গ্রেফতার করার পরেই শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছা প্রকাশ করেন শুভেন্দু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy