Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Suvendu Adhikari

বিচারপতি-বিক্ষোভ: মমতা, অভিষেককে দায়ী করলেন শুভেন্দু

ঝাড়গ্রামের সরডিহায় দলের একটি কর্মসূচিতে বিচারপতি মান্থাকে ঘিরে বিক্ষোভের ঘটনায় বুধবার শাসক তৃণমূলকেই নিশানা করেন শুভেন্দু।

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৪০
Share: Save:

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বিরুদ্ধে যে বিক্ষোভ হয়েছে, তার জন্য সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ, হাই কোর্ট চত্বরে সোমবার আইনজীবীদের একাংশ যে বিক্ষোভ করেছেন তা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে। সেই সঙ্গেই বিচারপতির বিরুদ্ধে পোস্টার লাগানোর ঘটনায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দায়ী করেছেন তিনি। এই গোটা ঘটনায় সিবিআই ও এনআইএ তদন্তও দাবি করেছেন শুভেন্দু।

বিচারপতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ নিয়ে আলোড়নের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তাপ বেড়েছে এই অভিযোগে। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘শুধু মাত্র ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এই রকম কুৎসা ও মিথ্যাচার করে চলেছেন শুভেন্দু। বদ্ধ উন্মাদও এ কথা বলতে পারেন না। এর সঙ্গে রাজনীতি, সমাজ ইত্যাদির কোনও সম্পর্ক নেই।’’

ঝাড়গ্রামের সরডিহায় দলের একটি কর্মসূচিতে বিচারপতি মান্থাকে ঘিরে বিক্ষোভের ঘটনায় বুধবার শাসক তৃণমূলকেই নিশানা করেন শুভেন্দু। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘হাই কোর্টের ঝামেলা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ফোন করে করিয়েছেন। আমার কাছে তথ্য রয়েছে।’’ সেই সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সব কিছুই পছন্দ মতো চান। যখন প্রধানমন্ত্রী চুরি ধরতে চান তখন বলেন কিম্ভূতকিমাকার। আবার প্রয়োজন হলে প্রধানমন্ত্রীর পা ধরেন।’’ হাই কোর্টের ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর ‘দণ্ড’ দাবি করেছেন তিনি।

বিরোধী দলনেতার অভিযোগের সূত্র ধরেই মুখ্যমন্ত্রীর ফোনে আড়িপাতা হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছে তৃণমূল। এবং এই ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করে তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘যাত্রাদলের অধিকারীর মতো বিরোধী দলনেতা মঞ্চে অবতীর্ণ হচ্ছেন। তবে তাঁর এই বক্তব্য যদি সত্যি হয় তা হলে আড়িপাতার তদন্ত হোক।’’

বিচারপতি মান্থার বাড়ির কাছে পোস্টার লাগানোর ঘটনায় অভিষেকের ‘হাত’ আছে বলেও দাবি করেছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘বিচারপতির বাড়ির সামনে পোস্টার ভাইপোর ক্যামাক স্ট্রিটের অফিস থেকে তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে নকশা করে দিয়েছে। বিচার ব্যবস্থাকে আক্রমণ করার মানে সংবিধানকে আক্রমণ। তা দেশবিরোধী কাজ করা।’’

জবাবে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখরের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘ওঁর কাছে পেগাসাস কি আছে? মুখ্যমন্ত্রীর কল্পিত ফোনালাপও শুনতে পায়। আবার অভিষেকের অফিসে ছাপাখানা খুঁজে পায়!’’ পাশাপাশি এই ঘটনায় সিপিএমের সমালোচনার জবাব দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কেউ কেউ বিচারব্যবস্থার জন্য কেঁদে বুক ভাসাচ্ছে। এঁদের নেতাই এক সময় হুঙ্কার দিয়েছিলেন, লালা বাংলা ছেড়ে পালা।’’ বিচারপতির বিরুদ্ধে এই ধরনের বিক্ষোভ অবাঞ্ছিত মনে করলেও তাঁর দাবি, ২০১১ সালে হাই কোর্টের সার্ধ শতবর্ষে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। প্রতিবাদে রাজ্যে আদালত বয়কট করা হয়।

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী অবশ্য এ দিনও বলেন, ‘‘বিমান বসুর সম্পর্কে বস্তাপচা অর্ধসত্য কিছু কথা আবার বলা হচ্ছে। বিমানবাবু কী বলেছিলেন, তা নিয়ে মামলা হয়েছিল। সাংবাদিকেরাও সাক্ষী দিয়েছিলেন। সওয়াল-জবাব কেউ দেখে নিতে পারেন। মামলা সুপ্রিম কোর্টেও গিয়েছিল। বিচারপতির বাড়ির সামনে পোস্টার বা এজলাসে বিক্ষোভের সঙ্গে তার কোনও তুলনা হয়?’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy