Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Nandigram Dibas

পিসি-ভাইপোকে গ্যারেজ করে দেব, হুমকি শুভেন্দুর, উনি নিজেই গ্রেফতার হয়ে যাবেন! পাল্টা দিলেন কুণাল

আবার সময়সীমা বাঁধলেন শুভেন্দু অধিকারী। মমতা এবং অভিষেককে ‘গ্যারেজ’ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। তাঁকে ‘জেলে ভরা’র পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কুণাল ঘোষ।

Suvendu Adhikari attacks Mamata Banerjee and Abhishek Banerjee and got a befitting reply from TMC on Nandigram Day

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ শুভেন্দু অধিকারীর। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৩ ১২:১১
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাংসদ তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘একেবারে গ্যারেজ’ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে ‘শহিদ দিবস’ পালন করতে গিয়ে এমনই আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেছেন তিনি। শুভেন্দু অবশ্য সরাসরি মমতা বা অভিষেকের নাম করেননি। তাঁদের তিনি সম্বোধন করেছেন ‘পিসি-ভাইপো’ বলে।

গত ডিসেম্বরে তিনটি তারিখে ‘নজর’ রাখার কথা বলেছিলেন শুভেন্দু। ঘোষণা করেছিলেন, বড় কিছু হবে বলেও। যদিও রাজ্য রাজনীতিতে তেমন ‘বড়’ কোনও পরিবর্তন তখন ধরা পড়েনি। সেই ঘটনাক্রম স্মরণ করিয়ে দিয়ে শুভেন্দুকে জেলে ভরার পাল্টা হুঙ্কার দিয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র তথা দলের তরফে নন্দীগ্রামের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কুণাল ঘোষ।

মঙ্গলবার নন্দীগ্রামের গোকুলনগরে ‘শহিদ দিবস’ পালন করেন শুভেন্দু। প্রসঙ্গত, আদালত তাঁকে ওই সভা করা নিয়ে কিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছিল। সেগুলি মেনেই কর্মসূচি পালন করেন বিরোধী দলনেতা। সেখানে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের এই গণতন্ত্র ধ্বংস! এমনিতেও ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছি। বাকি যা আছে, সাফ করব। আমি এই শহিদ বেদিকে সামনে রেখে বলে গেলাম। সিপিএমকে সাফ করেছি। এ বার পিসি-ভাইপোকেও একেবারে গ্যারেজ করব। আগামী বছর দেখা হবে। তখন ভাইপো বাইরে থাকবে না। ভিতরে থাকবে। আর যাঁরা যা যা করছেন, চন্দ্রগুপ্তের ডায়েরিতে লেখা থাকল।’’

২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে গুলি চলেছিল। সেই দিনটি বরাবরই ‘শহিদ দিবস’ হিসাবে পালন করে আসছেন শুভেন্দু। তিনি বিজেপিতে যাওয়ার পর নন্দীগ্রামে একই দিনে পৃথক কর্মসূচি পালন করে তৃণমূলও। এ বার বিজেপি অভিযোগ তোলে, নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু ‘শহিদ দিবস’ পালনের আর্জি জানিয়ে পুলিশের কাছে সভা করার অনুমতি চাইলেও তা দেওয়া হয়নি। তা নিয়ে সোমবার হাই কোর্টে আবেদন করেছিলেন শুভেন্দু। উচ্চ আদালত তাঁকে ‘শর্তসাপেক্ষে’ সভা করার অনুমতি দেয়। যা নিয়ে শুভেন্দুর ব্যাখ্যা, ‘‘এখানে অধিকার সকলের আছে। সব রাজনৈতিক দলের আছে। সব মানুষের আছে। কী এমন যুদ্ধ এখানে? কেন্দ্রীয় বাহিনী, হাই কোর্ট— সাজ সাজ রব। যুদ্ধ হবে? মানুষ খেতে পায় না। চাকরি পায় না। এই গ্রামের ১০০ ছেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য কর্নাটকে, গুজরাতে গিয়ে না খেয়ে ফ্লাইওভারের নীচে পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে রাত কাটায়।’’

তবে শুভেন্দুর ‘গ্যারেজ’ হুঁশিয়ারি উড়িয়ে দিয়ে তাঁকে ‘জেলে ভরা’র পাল্টা হুঙ্কার দিয়েছেন কুণাল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘উনি তো নিজেই সারদা আর নারদায় অভিযুক্ত। বিজেপি সিবিআই, ইডি চালাচ্ছে। তাই এত বড় বড় কথা। যে দিন বিজেপি সামান্য টাল খাবে, সে দিন শুভেন্দু অধিকারী জেলে ঢুকবে। আমরা দেওয়ালের লিখন পড়তে পারি।’’

গত বছর শুভেন্দু ঘোষণা করেছিলেন, ১২, ১৪, ২১ ডিসেম্বর— এই তিনটি তারিখ খুব গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেছিলেন, ‘‘ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ।” কিন্তু ১২ ডিসেম্বর বগটুইকাণ্ডে অভিযুক্ত সিবিআই হেফাজতে থাকা লালন শেখের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটে। ১৪ তারিখে আসানসোলে বিজেপির কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ৩ জনের। দুর্ঘটনার আগে সেই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু। সেই ঘটনাবলি স্মরণ করিয়ে কুণালের খোঁচা, ‘‘আমরা শুভেন্দু অধিকারীর মতো তারিখ দিয়ে দিয়ে পিছোতে পিছোতে যাই না। শুভেন্দু অধিকারীকে স্পষ্ট বলে দিচ্ছি, আজ না হলে কাল শুভেন্দু অধিকারী জেলের ভিতরে থাকবেই। এই পাপ নিয়ে ও চলতে পারবে না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE