শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ চরিতার্থ করতে এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে কাজে লাগানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করে থাকে শাসকদল তৃণমূল। সেই অভিযোগকেই প্রকারান্তরে মান্যতা দিলেন শুভেন্দু অধিকারী! বিরোধী দলনেতার দাবি, অতীতে কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে রাজ্যকে ‘ঠান্ডা’ করেছেন তিনি। যে ভাবে নন্দীগ্রাম, খেজুরি, শিবপুর, রিষড়া ‘ঠান্ডা’ হয়েছে, একই ভাবে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নাও ঠান্ডা হবে। এ নিয়ে শুভেন্দুকে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘মেগালোম্যানিক। পাগলের প্রলাপ। যাঁকে দল বদলে নিজের গ্রেফতারি এড়াতে হয়, তাঁর মুখে এ সব সাজে না!’’
পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় বিজেপি নেতা বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়ার খুনের ঘটনায় রাজ্য জুড়ে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। নিহত বিজেপি নেতা যে গ্রামের বাসিন্দা, সেই গোড়ামহল গ্রামে শাসক-বিরোধী সংঘর্ষের অভিযোগ উঠেছে। এখনও উত্তেজনা রয়েছে সেখানে। দলীয় খুনের ঘটনায় প্রথম থেকেই সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে আসছে বিজেপি। তার প্রেক্ষিতেই শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমি ঠান্ডা করা লোক। মোমিনপুর, একবালপুর এনআইএ-তে ঠান্ডা হয়েছে। দেবব্রত মাইতির কেসে সিবিআই তদন্ত হচ্ছে বলে নন্দীগ্রামও ঠান্ডা। আমি খেজুরিকে ঠান্ডা করেছি। বোমাকাণ্ডে এনআইএ হয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমরা গণতান্ত্রিক পথে আন্দোলন করব। তবে একটা কথা মনে রাখবেন, শীঘ্রই ভগবানপুরের নায়ড়াবিলাও ঠান্ডা হতে চলেছে। ওখানে এনআইএ আসছে। শিবপুর, রিষড়া, ডালখোলাও ঠান্ডা হচ্ছে। এনআইএ আসছে। এ বার একই কায়দায় ময়নার বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়ার এলাকাও ঠান্ডা হবে। সেই ব্যবস্থা হচ্ছে।’’
গত বৃহস্পতিবার ময়নার বিজেপি নেতার খুনের প্রতিবাদে জেলা জুড়ে ১২ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। তাদের অভিযোগ, সেই দিন পটাশপুরে বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের উপর সিভিক ভলান্টিয়াররা নির্বিচারে লাঠিচার্জ করেছে। গ্রেফতার হয়েছেন কৃষ্ণগোপাল দাস এবং মোহনলাল শী নামে দলের দুই নেতা। তারই প্রতিবাদে রবিবার পটাশপুরে জনসভা করার কথা ছিল শুভেন্দুর। কিন্তু শেষ মুহূর্তে মাঠে সভার অনুমোদন বাতিল করে স্থানীয় দুর্গাপুজো কমিটি। পরে পটাশপুর থানা থেকে রবিবার বেলার দিকে বিজেপিকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, এই সভার অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে। তার পরেও সভা হলে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে। শেষমেশ পূর্ব ঘোষিত সভা বাতিল করে পটাশপুরে মিছিল করে বিজেপি। সেই মিছিল শেষে পথসভা করেন শুভেন্দু।
বিরোধী দলনেতা জানান, আগামী রবিবার বিকেল ৪টেয় পটাশপুরে সভা হবে। আর সেই সভা হবে আদালতের অনুমতি নিয়েই। শুভেন্দু বলেন, ‘‘আগামী বুধবার সুদাম পণ্ডিত কেস ফাইল করবে। সামনের রবিবার। এই পটাশপুরেই বড় সভা হবে। তার আগে কৃষ্ণগোপাল আর মোহনলালকে বের করে আনার দায়িত্ব আমার। পটাশপুর থানার সামনে গোলাপের মালা পরিয়ে সংবর্ধনা দেব ওঁদের। রবিবার ‘পটাশপুর চলো’র ডাক দিচ্ছি। ওই দিন বিকেল ৪টেয় জনসভা হবে। আদালতের অনুমতি নিয়ে ডুগডুগি বাজাতে বাজাতে যাব।’’ দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বিরোধী দলনেতার বার্তা, ‘‘আজ সভা করতে দেয়নি, তার সুদ-আসল তুলতে হবে পরের রবিবার।’’
পটাশপুরে দলীয় কর্মীদের উপর লাঠিচার্জের ঘটনায় সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও নিশানা করেছেন শুভেন্দু। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমরা ৮টা সিভিকের নাম পেয়েছি। সন্ময় ব্যানার্জি রিট ফাইল করে দিয়েছেন। পিসি-ভাইপোকে যেমন ল্যাজেগোবরে করেছি, পটাশপুরের সিভিক মামলা আমার কাছে খুব ছোট কাজ। পটাশপুরের এই ছোট কাজটা আমি হাতে নিলাম।’’
পাল্টা তৃণমূলের অভিযোগ, শান্ত এলাকাকে অশান্ত করার চেষ্টা করছেন শুভেন্দু। তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র পীযূযকান্তি পণ্ডা বলেন, ‘‘পটাশপুরে বিজেপির কোনও সংগঠন নেই। একটা ছোট্ট ঘটনার অজুহাতে পঞ্চায়েত ভোটের আগে এলাকা অশান্ত করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে। এক সময় এখানে প্রতিনিয়ত আগুন জ্বলত। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে এলাকায় কোনও হানাহানির ঘটনা নেই। এটাই শুভেন্দু চাইছেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy