তন্ময় ভট্টাচার্য। —ফাইল ছবি।
মহিলা সাংবাদিককে ‘হেনস্থার’ অভিযোগে তন্ময় ভট্টাচার্যকে তলব করল বরাহনগর থানা। সাসপেন্ড হওয়া সিপিএম নেতা আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “দুপুর দেড়টায় আমায় থানায় যেতে বলা হয়েছে। আমি এখনই যাচ্ছি।” রবিবারই তন্ময়কে থানায় ডেকে একপ্রস্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল বরাহনগর থানার পুলিশ। সিপিএম সূত্রে খবর, সেই জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি দলকে জানিয়েওছিলেন তন্ময়। রবিবারের পর সোমবারও তাঁকে ফের তলব করল পুলিশ। তন্ময়ের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, তিনি ইতিমধ্যেই আইনজীবীর পরামর্শ নিয়েছেন।
রবিবার দুপুরে ফেসবুক লাইভে এক মহিলা সাংবাদিক অভিযোগ করেন, সকালে তিনি তন্ময়ের সাক্ষাৎকার নিতে গিয়েছিলেন, সেই সময় সিপিএম নেতা তাঁর কোলে বসে পড়েন। ওই ফেসবুক লাইভ বিকেলের মধ্যেই দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে সমাজমাধ্যমে, যার জেরে শোরগোল পড়ে যায় সিপিএমের অন্দরেও। তন্ময় অভিযোগ প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছিলেন, “আমি স্বভাবগত ভাবেই সকলের সঙ্গে ইয়ার্কি করি। এর আগে ওই মেয়েটি অন্তত দশ বার আমার সাক্ষাৎকার নিয়েছে। ওর সঙ্গে আমি এর আগেও ইয়ার্কি করেছি। কিন্তু আজকে হঠাৎ করে কী হল আমি জানি না।’’
পরোক্ষে চক্রান্তের অভিযোগও তুলেছিলেন প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক তন্ময়। তাঁর বাড়ি থেকে বরাহনগর থানার দূরত্ব হাঁটাপথে মাত্র ৫ মিনিটের হলেও অভিযোগকারিণী অভিযোগ দায়ের না করে কেন ফেসবুক লাইভ করলেন, সেই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। পরে অবশ্য তন্ময়ের বিরুদ্ধে বরাহনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন অভিযোগকারিণী। তার ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানান থানার এক পুলিশ আধিকারিক। রবিবারই সিপিএম বিবৃতি জারি করে জানিয়ে দেয়, তন্ময়কে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
সন্ধ্যায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘আমাদের দলে ইন্টারনাল কমপ্লেন কমিটি রয়েছে। তার একটা পদ্ধতিও আছে। কিন্তু তার জন্য সময় লাগে। তাই তার আগেই আমরা তন্ময়কে সাসপেন্ড করব। কত দিনের জন্য, সেটা দেখতে হবে। অভ্যন্তরীণ তদন্ত কত দিনে শেষ হবে, তার উপরেই নির্ভর করছে। পরে তদন্ত কমিটি যে প্রস্তাব দেবে, সেটাকেই আমরা গ্রহণ করব।’’
সোমবার সমাজমাধ্যমে অভিযোগকারিণী অবশ্য সিপিএমের অভ্যন্তরীণ কমিটির তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। রাজনৈতিক পরিচয় দূরে সরিয়ে প্রতিবাদ জানানোর কথা বলেন তিনি। অভিযোগকারিণী সমাজমাধ্যমে লেখেন, “কোনও রাজনৈতিক দল কারও বিচার করতে পারে বলে আমি মনে করি না। তা হলে দেশ জুড়ে সালিশি সভা করেই সব সমস্যার সমাধান করে দেওয়া যেত। আইন-আদালতের প্রয়োজন পড়ত না।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি। তারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে আশা করি। এটা রাজনীতি করার সময় নয়, সমাজ সংস্কারের সময়।”
এই ঘটনায় তন্ময়কে তো বটেই, সিপিএমকেও আক্রমণ করছে বিরোধী দলগুলি। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ সরাসরি তন্ময়কে গ্রেফতার করার দাবি তুলেছেন। এই বিষয়ে সিপিএমের অবস্থান কী বলেও খোঁচা দিয়েছিলেন তিনি। সোমবার এই বিষয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। তৃণমূলের শাসনে নিরপেক্ষ তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তাই বিরোধীদের নিরপেক্ষ তদন্ত চাওয়া উচিত। অবশ্য সিপিএম বিরোধী দল কি না আমার জানা নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy