সুরঞ্জন দাস। ফাইল চিত্র।
দুই সহ-উপাচার্যকে নিয়ে বুধবার ইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও ছাত্র সংসদের দাবিতে বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে গিয়ে সব ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের যৌথ বৈঠকে যোগ দেন তিনি। দুপুর থেকে একটানা প্রায় ১৪ ঘণ্টার সেই বৈঠকের পরে শুক্রবার ভোরে বাড়ি ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। তা সত্ত্বেও এ দিন তিনি জানিয়ে দেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ, শনিবার ফের বৈঠক ডাকা হয়েছে। এবং অনলাইনে নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েই তিনি সেই বৈঠকে যোগ দেবেন। পদত্যাগের ইচ্ছা সরিয়ে রেখে তাঁর এই তৎপরতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি পর্বের গোলযোগ মিটিয়ে ক্যাম্পাসে দ্রুত স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার তাগিদই দেখছে শিক্ষা শিবির।
দেশের অন্যতম সেরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাদবপুরে বার বার ঘেরাও-আন্দোলন কেন, শিক্ষা-সহ বিভিন্ন শিবিরে সেই প্রশ্ন উঠলেও পড়ুয়াদের একাংশ নিন্দা-সমালোচনায় ভ্রুক্ষেপ করছে না বলে অভিযোগ। শিক্ষা মহলের একটি বড় অংশের বক্তব্য, প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তিতে আগেকার বিভিন্ন গোলমালের বিরূপ প্রভাব এতটাই পড়েছে যে, ছাত্রছাত্রীরা যাদবপুর-বিমুখ হতে শুরু করেছেন। চলতি দফায় ঘেরাও-আন্দোলন শুরু করেছে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র সংসদ ফেটসু। আর সেই ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগেই এ বার প্রচুর আসন খালি থেকে গিয়েছে। কর্তৃপক্ষ আসন শূন্য পড়ে থাকার নানা ব্যাখ্যা দিলেও ক্যাম্পাসে লাগাতার গোলমালের কুপ্রভাবের বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
তার মধ্যেই কর্তৃপক্ষ আলাপ-আলোচনার পথে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ছাত্র সংসদের দাবি মেনে বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসেই সব ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের যৌথ বৈঠক বসে। সেখানে পড়ুয়াদের স্মারকলিপি দেওয়ার পর্বই চলে বেলা আড়াইটে থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত! তার পরে শুরু হয় আলোচনা, চলে প্রায় ভোর সাড়ে ৪টে পর্যন্ত। ঘেরাও না-হোক, টানা প্রায় ১৪ ঘণ্টা বৈঠকে আটকে থাকার ধকলেই শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন উপাচার্য।
মূলত ভর্তিতে অস্বচ্ছতা, পরীক্ষার ফলাফলে অসঙ্গতি, ফল ঘোষণায় দেরির অভিযোগে চলতি দফায় ঘেরাও-আন্দোলনে নেমেছে ফেটসু। করোনার দৌরাত্ম্যের মধ্যে বৈঠক-কক্ষে এ ভাবে শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্তাদের দীর্ঘ ক্ষণ ঘেরাও করে রাখা সঙ্গত কি না, সেই প্রশ্ন ওঠে। শেষ পর্যন্ত ভর্তি, পরীক্ষা ও ফলপ্রকাশের অনলাইন প্রক্রিয়া (জুমস) ঢেলে সাজানোর জন্য পড়ুয়াদের দাবিতে একটি কমিটি গড়া হয়। সেই কমিটির বৈঠকেই ঘেরাও হচ্ছে বার বার। ফেটসু-র অভিযোগ, জুমসের নিষ্ক্রিয়তায় পড়ুয়ারা ক্ষতিগ্রস্ত। চাকরি পেয়েও হাতছাড়া হয়েছে অনেকের। আটকে গিয়েছে অনেকের স্কলারশিপ। বহু ছাত্রছাত্রী উচ্চতর শিক্ষার ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়ছেন। অবিলম্বে এর সুরাহা চায় তারা। উপাচার্য বাড়ি থেকেই অনলাইনে বৈঠকে যোগ দিচ্ছিলেন। কিন্তু সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যের অসুস্থতার জন্য সুরঞ্জনবাবু নিজেই বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে যৌথ বৈঠকে যোগ দেন। বেলা আড়াইটেয় শুরু হওয়া সেই বৈঠকে ছাত্রছাত্রীদের ৬৪ দফা দাবি শুনতে এবং আলোচনা করতে রাত গড়িয়ে ভোর হয়ে যায়।
‘‘কিছুটা অসুস্থ বোধ করছি। কিন্তু সহ-উপাচার্য আগেই পড়ুয়াদের কথা দিয়েছিলেন, শনিবার বৈঠক হবে। সেই কথা অবশ্যই রাখা হবে। আমি ক্যাম্পাসে গিয়েই ওই বৈঠকে যোগ দেব,’’ এ দিন বলেন উপাচার্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy