বৈশালী ডালমিয়া। ফাইল চিত্র।
দলীয় কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে না অনেকদিন। রাজ্য মন্ত্রিসভার একাধিক বৈঠকেও ধারাবাহিক ভাবে অনুপস্থিত। তাই লক্ষ্মীরতন শুক্লর পরে বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে জল্পনা জোরালো হচ্ছে তৃণমূলে। পাশাপাশি সরকার ও দল ছেড়ে যাওয়া লক্ষ্মীরতন শুক্লর পাশে দাঁড়িয়ে এ দিনই যে ভাবে সরব হয়েছেন বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া, তাতে চর্চায় উঠে এসেছেন তিনিও।
রাজনীতি থেকে আপাতত সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়ে পদত্যাগপত্র দিলেও লক্ষ্মীরতন সংবাদমাধ্যমে কিছু বলেননি। তবে তাঁর পদত্যাগের কারণ বুঝিয়ে মুখ খুলেছেন বালির তৃণমূল বিধায়ক বৈশালী। তিনি বলেন, ‘‘দলের একটা অংশ শুধু লক্ষ্মীকে নয়, অনেক বিধায়ককেই কোনও কাজ করতে দিচ্ছে না। পুরনো কর্মীদের কাজ করতে দেয় না।’’ শুধু তাই নয়, দলত্যাগীদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে চিহ্নিত করা নিয়ে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘দল ছাড়লেই তো বেইমান বলা হবে! কিন্তু যারা উইপোকার মতো দলকে কুরে কুরে শেষ করে দিচ্ছে সেই বেইমানদেরই তো তাড়িয়ে দেওয়া উচিত।’’ জেলা সভাপতি হিসেবেও কাজ করতে গিয়ে দলের মধ্যেই লক্ষ্মীরতন বাধা পেয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন বৈশালী। হাওড়া জেলা তৃণমূল নিয়ে সম্প্রতি ক্ষোভ অভিযোগ জানিয়েছিলেন স্থানীয় সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
প্রকাশ্যে দল ও সরকারের কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে জল্পনায় এসেছিলেন বনমন্ত্রী রাজীবও। শুধু তাই নয়, সরকার ও দলের সঙ্গে ক্রমাগত দূরত্ব বাড়ছে তাঁর। মঙ্গলবারও মন্ত্রিসভার যে বৈঠকের শেষে লক্ষ্মীরতন পদত্যাগপত্র দিয়েছেন, সেই বৈঠকেও অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। দলীয় সূত্রে খবর, তাঁর এই অসন্তোষ নিয়ে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যে আলোচনা চলছিল, ইদানিং তাতেও আর রাজীবের আগ্রহ দেখছেন না দলীয় নেতৃত্ব। তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের তরফে পাঠানো ‘মীমাংসা’ প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন বনমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজীবের সঙ্গে দু’দফায় কথা বলেন তৃণমূলের মহাসচিব। কিন্তু এই আলোচনা না এগোনয় রাজীবের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন মমতাও। তাতেও রাজীবের আগ্রহ না দেখে নতুন কোনও সম্ভাবনা দেখছে না তৃণমূলও।
আরও পড়ুন: মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন লক্ষ্মীরতন শুক্ল, কী কারণে ইস্তফা, বাড়ছে জল্পনা
প্রসঙ্গত, এ বার তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের কোনও কর্মসূচিতে অংশ নেননি রাজীব। সাম্প্রতিক অতীতে দলের ঘোষিত অন্য কর্মসূচিতেও সে ভাবে দেখা যায়নি তাঁকে। গত রবিবারও একটি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যেই দলীয় নেতৃত্বের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, ‘দলের কর্মীদের অনেকে চাকর- বাকর ভাবেন। আসলে তাঁরাই দলের সম্পদ। তাঁদের জন্যই নেতারা আছেন।’ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এ সবের মধ্যে দিয়েই রাজীব হয়ত বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথই প্রশস্ত করছেন।
গত কয়েকদিন ধরে দলের শীর্ষনেতৃত্বের তরফে তাঁর কাছে বারবার ‘মীমাংসা’র প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আলোচনায় রাজি থাকলেও সেই প্রস্তাব নিয়ে নিজের আপত্তির কথা তখনই জানিয়ে দিয়েছেন রাজীব।
এ দিকেই বিজেপিতে যোগ দেওয়া শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে দেখা গিয়েছে ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল বিধায়ক দীপক হালদার ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের এক কর্মাধ্যক্ষ আবু তাহেরকে। দীপক অবশ্য জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত প্রয়োজনেই শোভনের কাছে এসেছিলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy