—প্রতীকী ছবি।
খেলতে খেলতে প্রতিবেশীর বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল বছর চারেকের শিশু। দোষ বলতে ওইটুকুই। তাকে ‘শাস্তি’ দিতে হাত-পা বেঁধে দীর্ঘ সময় পিঁপড়ের ঢিবির উপর বসিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী এক যুবকের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি ফিরে শিশুটির মা তাকে উদ্ধার করে। নদিয়ার শান্তিপুরের ঘটনা। শিশুটি শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে। শিশুর পরিবার শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও অভিযোগ না-দায়ের করলেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ‘শাস্তি’র নামে শিশুর উপর অমানবিক অত্যাচারে সরব হয়েছে রাজ্যের শিশু সুরক্ষা কমিশন।
শিশুটির পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শান্তিপুর থানা এলাকায় পরিবারের সঙ্গেই থাকে ওই শিশু। তার বাবা পেশায় চাষি। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ঠাকুরমা ও দাদুর কাছেই ছিল সে। সন্ধ্যায় মা বাড়ি ফিরে ছেলেকে দেখতে না পেয়ে খোঁজ শুরু করেন। তখনই প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে কান্নার আওয়াজ শুনতে পান মহিলা। তড়িঘড়ি তিনি ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন, ছেলেকে হাত-পা বেঁধে একটি কাঁচা ঘরে মেঝেতে পিঁপড়ের ঢিবির উপর ফেলে রাখা হয়েছে। পিঁপড়ের কামড়ে যন্ত্রণায় ছটফট করছে সে। সেখান থেকে মা ছেলেকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যান।পরে ওই দুই পরিবারের মধ্যে অশান্তিও হয়। নির্যাতিত শিশুর বাবা বলেন, ‘‘ছেলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতেই শুক্রবার সকালে হাসপাতালে নিয়ে আসি। চিকিৎসকেরা ছেলেকে ভর্তি করে নেন। প্রতিবেশী যে যুবক আমার ছেলের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটিয়েছে, ওরা আমাকে থানায় না যাওয়ার হুমকিও দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কী করব বুঝে উঠতে পারছি না।’’
হঠাৎ ওই শিশুর উপর এমন নির্মম অত্যাচার কেন?
নির্যাতিত শিশুর পরিবারের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই ওই প্রতিবেশীদের সঙ্গে তাঁদের কথা নেই। হঠাৎ করেই ওই দিন বিকেলে শিশুটি খেলতে খেলতে ওই বাড়িতে ঢুকে যায়। যে কারণেই তাকে ‘শাস্তি’ দিতে প্রতিবেশী এক যুবক এমন অমানবিক কাণ্ড ঘটিয়েছে।
শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সুপার তারক বর্মন বলেন, ‘‘শিশুটির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। আমরা তার স্বাস্থ্যের উপর নজর রাখছি।’’ খবর পেয়ে এ দিন দুপুরে হাসপাতালে পৌঁছয় শান্তিপুর থানার পুলিশ। সন্ধ্যায় রানাঘাটের এসডিপিও সবিতা গটিয়াল বলেন, ‘‘পুলিশের তরফে এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’
রাজ্যের শিশু সুরক্ষা কমিশনের অন্যতম উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই ঘটনা শুধু অমানবিক নয়, শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ক্ষেত্রে জুভেনাইল জাস্টিস আইনের ৭৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী অভিযুক্তের তিন বছরের কারাবাস পর্যন্ত হতে পারে। বিষয়টি আমরাও খোঁজ নিয়ে দেখছি। আমাদের দিক থেকেও ব্যবস্থা নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy