Advertisement
E-Paper

হরিপদ-স্মরণে ইঙ্গিতে বার্তা রাহুল-সুকান্তের

প্রাক্তন বিধায়ক হরিপদ ভারতীর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করা হয়। সেখানে যাঁরা স্মৃতিচারণ করেন, তাঁদের মধ্যে রাহুলই ছিলেন শেষ বক্তা।

Sukanta Majumdar.

সুকান্ত মজুমদার। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৩ ০৭:০৫
Share
Save

বিধানসভা ভোটের পর থেকে ‘সন্ত্রাসে’র জন্য তৃণমূলকে প্ররোচিত করেছে বিজেপিরই একাংশ—এই অভিমত রাজ্য বিজেপির কোর কমিটির সদস্য রাহুল সিংহের। তাঁর বক্তব্য, নির্বাচনের পরে বিজেপি কর্মীদের হত্যা করা হয়েছে, বুলডোজ়ার দিয়ে বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এর জন্য শুধু তৃণমূল দায়ী? বিজেপি নেতারা দায়ী নন? তাঁরা নির্বাচনের আগে বলে বেড়িয়েছিলেন, মাটিতে পুঁতে দেব, খুন করে দেব, মাথা নামিয়ে দেব। ভেবেছিলেন, তৃণমূল ক্ষমতা থেকে চলে যাবে। ফলাফল উল্টো হওয়ায় নিউটনের তৃতীয় সূত্র অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া তো হওয়ারই ছিল!

প্রাক্তন বিধায়ক হরিপদ ভারতীর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করা হয়। সেখানে যাঁরা স্মৃতিচারণ করেন, তাঁদের মধ্যে রাহুলই ছিলেন শেষ বক্তা। তাঁর পরে জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে বক্তৃতা করার কথা ছিল বঙ্গ আরএসএসের প্রধান জিষ্ণু বসুর। ততক্ষণে বক্তৃতা শেষ করে চলে গিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রাহুল যখন বলছেন, তখন সভাস্থল অনেকটাই ফাঁকা। এমনকি, প্রচারমাধ্যমের ক্যামেরার ভিড়ও তখন নেই। সূত্রের খবর, সেখানেই রাহুল বলেন, রাজনীতি করতে হলে, নেতৃত্ব দিতে হলে ‘দায়িত্বশীল’ হওয়া উচিত। নিজের প্রচারের জন্য কর্মীদের জীবন অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দেওয়া অনুচিত। সেই সঙ্গে হরিপদ ভারতীর বক্তৃতার সঙ্গে তুলনা টেনে নিজের দলের নেতাদের বক্তব্যেরও সমালোচনা করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, আজকের নেতারা সংবাদমাধ্যমে প্রচার পেতে কু-ভাষায় কথা বলেন। মাষ্টারমশাইয়ের (হরিপদ) বক্তব্য শুনতে দলমত, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে মানুষ আসতেন। আর এখন লরি পাঠিয়ে লোক আনতে হয়!

রাহুলের আগেই ওই সভায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণীর উদাহরণ টেনে দলকে বার্তা দিয়েছেন, ‘‘কোথায় কোন খাতায় আডবাণীজি’র নাম ছিল, কেউ জানত না। তা-ও তিনি পদত্যাগ করেছিলেন। পরে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে ফিরে আসেন। এঁরা আমাদের উদাহরণ হতে পারেন। আজকের নেতাদের এঁদের মতো দৃষ্টান্ত তৈরি করা উচিত।’’ তাঁর এই বার্তার লক্ষ্য কে, তা নিয়েও রাজনৈতিক শিবিরে জল্পনা তৈরি হয়েছে। কারণ, নারদ-কাণ্ডে দুর্নীতির অভিযোগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সংস্থা কেন তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে না, সেই প্রশ্নে প্রতিদিন সরব তৃণমূল।

বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে যে ভাবে ‘সন্ত্রাস’কে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচারের হাতিয়ার করেছিল বিজেপি, রাহুলের এ দিনের বক্তব্যে তা অনেকটাই লঘু হয়ে গিয়েছে বলে রাজনৈতিক শিবিরের ধারণা। রাহুলকে সরিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি হন দিলীপ ঘোষ (বর্তমানে তিনি সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি)। বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বেই বিজেপি লড়ে। রাহুলের এ দিনের নিশানায় কি প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপই, রাজনৈতিক মহলে এমন প্রশ্নও উঠছে। যদিও দিলীপের দাবি, “লোকসভা নির্বাচনের আগেও তো একই রকম আক্রমণাত্মক প্রচার চলেছিল। তা হলে তার পরে কিছু হয়নি কেন? তৃণমূল পরিকল্পনা করেছিল, একমাত্র বিরোধী দল বিজেপিকে শেষ করে দেবে।” দিলীপের বক্তব্য, “কে কী বলেছেন, তাতে লঘু-গুরু কী হল জানি না! তবে বাস্তবে যেটা ঘটেছিল, সেটাই বলেছি। সিবিআই এসেছে, রাজ্যপাল গিয়েছেন। সবাই একই কথা বলেছেন। পশ্চিমবঙ্গের মতো সরকারি মদতে এমন সন্ত্রাস আর কোথায় হয়?” তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের মন্তব্য, ‘‘বিলম্বিত বোধোদয়! রাহুল সিংহ ঠিক কথা বলেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, উনি আন্তরিক ভাবে বলছেন, না দলের মধ্যে কোণঠাসা হয়ে নজরকাড়ার চেষ্টা করছেন?’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Rahul Sinha BJP TMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}