সৌমিত্র খাঁ এবং সুজাতা মণ্ডল। ফাইল ছবি।
সংসদের অধিবেশনে বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁকে ‘থাপ্পড় মারা জবাব’ই দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। বিজেপি সাংসদ সৌমিত্রের উদ্দেশে সৌগতের ‘বৌ পালিয়ে গিয়েছে’ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে এমনই প্রতিক্রিয়া সুজাতা মণ্ডলের। তাঁকে সৌগতের অপমান করার কোনও অভিপ্রায় নেই ধরে নিয়েই তৃণমূল নেত্রী সুজাতা আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, ‘‘উনি (সৌগত) এক জন চরিত্রহীন সাংসদকে যথাযথ জবাবই দিয়েছেন।’’ সৌমিত্র ও সুজাতার বিবাহবিচ্ছেদের মামলা এখনও আদালতে বিচারাধীন। তার মধ্যেই সুজাতার দাবি, স্বামীর অত্যাচারেই বাধ্য হয়ে মধ্যরাতে বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল তাঁকে। সুজাতার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সৌমিত্রের জবাব, ‘‘উন্মাদের কথার কোনও উত্তর হয় না।’’
বৃহস্পতিবার লোকসভার অধিবেশনে সৌগত যখন বক্তৃতা করছিলেন, তখন পাশ থেকে নানাবিধ টিপ্পনি করতে দেখা গিয়েছে সৌমিত্রকে। এ ভাবে বেশ কিছু ক্ষণ চলার পর বিরক্ত হয়েই সৌমিত্রের উদ্দেশে সৌগত বলেন, “তোমার মাথার ঠিক নেই। বৌ পালিয়ে যাওয়ায় তুমি পাগল হয়ে গিয়েছ।’’ সংসদের ভিতর সৌগতের এমন মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। তৃণমূল সাংসদকে সতর্কও করেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। সুজাতার অবশ্য বক্তব্য, সৌগত ভুল কিছু বলেননি। তাঁর কথায়, ‘‘বৌ পালিয়ে যাওয়া মানে কী বলতে চেয়েছেন, সেটা সৌগতবাবুই ভাল বলতে পারবেন। কিন্তু আমি জানি, আমাকে অপমান করার কোনও অভিপ্রায় নেই সৌগতবাবুর। উনি আমাকে মেয়ের মতোই স্নেহ করেন।’’
নিজের মতো করে সৌগতের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দেওয়ারও চেষ্টা করেন সুজাতা। তিনি বলেন, ‘‘সৌগতবাবু হয়তো বলতে চেয়েছেন যে, নিশ্চয়ই তুমি (সৌমিত্র) কিছু করেছ। সেই কারণেই তোমার বৌ বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছে।’’ এর পরেই সৌমিত্র প্রসঙ্গে সুজাতা বলেন, ‘‘উনি সুস্থ নন। মেন্টাল (মানসিক বিকারগ্রস্ত)। সম্পর্কে থাকাকালীন উনি অনেক কিছু করেছেন। কিন্তু সম্পর্কের খাতিরেই আমি চুপ করে থেকেছি। পাবলিক করিনি (প্রকাশ্যে আনিনি)। নানা রকম ভাবে অত্যাচার করেছেন। পরে ভেবে দেখলাম, আমি এই সম্পর্ক থেকে না বেরোলে নিজের স্বার্থে মৃত্যুবরণ করতে বাধ্য করবেন উনি। সেই কারণেই রাত সাড়ে ৩টেয় বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলাম।’’
সুজাতার মন্তব্য শুনে সৌমিত্র বৃহস্পতিবার রাতে আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘উনি কখনও বলেন আমি নপুংসক, সন্তান উৎপাদনে অক্ষম। আবার কখনও বলে আমি নাকি বহু নারীসঙ্গ করি। এ সবের কি উত্তর হয়?’’
২০১৬ সালে বাঁকুড়ার বড়জোড়ার বাসিন্দা সুজাতার সঙ্গে সৌমিত্রের বিয়ে হয়। প্রেম করে বিয়ে করেন তাঁরা। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে সৌমিত্র তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপি তাঁকে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থীও করে। কিন্তু একটি মামলায় আদালতের নির্দেশে সৌমিত্র নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে প্রচারে যেতে পারেননি। তাঁর হয়ে প্রচার সামলান স্ত্রী সুজাতা। বৃহস্পতিবার সৌমিত্রকে কটাক্ষ করতে গিয়ে সেই প্রসঙ্গও টেনেছেন সুজাতা। বলেন, ‘‘সৌমিত্রের সাংসদ হওয়ার পিছনে সুজাতা মণ্ডলের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম রয়েছে।’’
সৌমিত্র অবশ্য নির্বাচনে জয়ের পুরো কৃতিত্ব সুজাতাকেই দিয়েছিলেন। কিন্তু বছর দুয়েকের মধ্যে ‘ছন্দপতন’ ঘটে। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে সুজাতা তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর তাঁরা আলাদা থাকতে শুরু করেন। তার পরেই বিবাহবিচ্ছেদের মামলা হয় আদালতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy