Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
রক্ষীর আত্মহত্যা

লক্ষ্মী-মৃত্যুর নেপথ্যে কি অসন্তোষও, প্রশ্ন তদন্তে

বন্ধুকে ধার দেওয়া টাকা ফেরত পাননি বারবার তাগাদা করেও। নিছক সেই হতাশাতেই লক্ষ্মী বিশ্বাস আত্মঘাতী হলেন, নাকি সিআইএসএফের মহিলা কনস্টেবলটির আত্মহননের নেপথ্যে অন্য বা আরও কোনও কারণ রয়েছে, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৩৫
Share: Save:

বন্ধুকে ধার দেওয়া টাকা ফেরত পাননি বারবার তাগাদা করেও। নিছক সেই হতাশাতেই লক্ষ্মী বিশ্বাস আত্মঘাতী হলেন, নাকি সিআইএসএফের মহিলা কনস্টেবলটির আত্মহননের নেপথ্যে অন্য বা আরও কোনও কারণ রয়েছে, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।

বুধবার গভীর রাতে কলকাতা বিমানবন্দরের ভিতরে কর্তব্যরত লক্ষ্মী নিজের সার্ভিস পিস্তল থেকে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন। দু’-দু’বার ট্রিগার চেপেও গুলি বেরোয়নি। তিন বারের বার নাইনএমএমের বুলেট তাঁর হৃৎপিণ্ড এফোঁড়-ও ফোঁড় করে দেয়। দু’সন্তানের মা, আঠাশ বছরের তরুণীটির জীবনে দাঁড়ি টানার এ হেন নাছোড় চেষ্টা দেখে ঝানু পুলিশ অফিসারেরাও তাজ্জব। লক্ষ্মীর পকেটে যে ‘সুইসাইড নোট’ মিলেছে, সেখানে আঙুল তোলা হয়েছে বাল্যবন্ধু সঞ্জীব দাসের দিকে। লক্ষ্মী তাতে লিখে গিয়েছেন, সঞ্জীবকে তিনি তিন লাখ টাকা ধার দিয়েছিলেন। টাকাটা ফেরত না-পেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হলেন।

তবে সহকর্মীদের একাংশের ইঙ্গিত, লক্ষ্মী ইদানীং আরও বেশ কিছু কারণে বিচলিত ছিলেন। কী রকম?

আধা সামরিক বাহিনীর নিচুতলার বক্তব্য: বাহিনীতে কনস্টেবল থেকে ইন্সপেক্টর পদে যাঁরা চাকরি করেন, তাঁদের অনেকের মধ্যে অসন্তোষ থাকে। ছুটি, কোয়ার্টার্স বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার অভাব যার মূল কারণ। লক্ষ্মীর মধ্যেও তা ছিল বলে সহকর্মীদের কারও কারও দাবি। প্রসঙ্গত, লক্ষ্মীর স্বামী সুকান্ত বিশ্বাসও সিআইএসএফের কনস্টেবল। ওঁরা সম্প্রতি লখনউ থেকে কলকাতায় বদলি হয়ে এসেছিলেন।

বস্তুত সামরিক ও আধা সামরিক বাহিনীতে ছুটি, কোয়ার্টার্সের প্রশ্নে অসন্তোষের অভিযোগ নানা মহলে নানা সময়ে উঠেছে। আর এরই সূত্রে উঠে আসছে ২০০১-র সেই ঘটনা। কলকাতা বিমানবন্দরে মোতায়েন এক সিআরপি-জওয়ান এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে মেরে ফেলেছিলেন অভিবাসনে কর্মরত কলকাতা পুলিশের এক অফিসারকে। কলকাতা পুলিশের আরও তিন অফিসার আহত হন। ঘাতক জওয়ানকে গ্রেফতার করে জানা যায়, তিনি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন, ছুটি চেয়ে না পাওয়াটাও তাঁর ওই অবস্থার অন্যতম কারণ।

লক্ষ্মীর আত্মহত্যার পিছনেও এমন কিছুর ভূমিকা রয়েছে কিনা, পুলিশ তা যাচাই করতে চায়। সে জন্য তদন্তকারীরা সুকান্তবাবুর সঙ্গে কথা বলার অপেক্ষায়। ময়নাতদন্ত সেরে বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীর দেহ পরিজনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। শুক্রবার সকালে স্ত্রীর দেহ নিয়ে সুকান্ত গুয়াহাটি চলে গিয়েছেন

পাশাপাশি যাঁর বিরুদ্ধে লক্ষ্মীর অভিযোগ, সেই সঞ্জীব দাসের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। অসম, বেঙ্গালুরু, লখনউ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, অসমে লক্ষ্মীর সঙ্গে স্কুলে পড়তেন সঞ্জীব।

অন্য বিষয়গুলি:

constable suicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy