সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়
সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেছিলেন ওই সংস্থার অন্যতম কর্ত্রী ও অভিযুক্ত দেবযানী মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তারই শুনানিতে সিবিআইয়ের তরফে জানানো হল, মূল অভিযুক্ত সুদীপ্ত সেন ও দেবযানীকে ফের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চায় তারা। এই মামলার পরবর্তী শুনানির আগেই সেই যৌথ জেরার বন্দোবস্ত হচ্ছে।
হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এ দিনই দেবযানীর জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় ও অয়ন চক্রবর্তী। তাঁদের বক্তব্য, প্রায় সাত বছর কেটে গিয়েছে। সারদা মামলায় বিভিন্ন অভিযুক্ত জামিন পেয়েছেন। কিন্তু তদন্তের দীর্ঘসূত্রতার জেরে দেবযানীর জামিন নামঞ্জুর হচ্ছে। ‘‘আমাদের মক্কেল সাত বছর ধরে বন্দি। তবু বিচারই শুরু হল না। একই মামলার চার্জশিটে অভিযুক্ত কুণাল ঘোষ যদি জামিন পেতে পারেন, আমাদের মক্কেল কী দোষ করলেন,’’ প্রশ্ন তোলেন দেবযানীর কৌঁসুলিরা।
দেবযানীর জামিনের আবেদনের প্রেক্ষিতে সিবিআইয়ের আইনজীবী ওয়াই জ়েড দস্তুর আদালতে জানান, সম্প্রতি সারদা মামলা সংক্রান্ত একটি নতুন ভয়েস রেকর্ড তদন্তকারী সংস্থার হাতে এসেছে। ওই ভয়েস রেকর্ডিং লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। সেই জন্য সুদীপ্ত ও দেবযানীকে আবার মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। যৌথ জেরার সেই আবেদন নিম্ন আদালতে মঞ্জুরও হয়েছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এ বারের জেরা পর্বের আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
দেবযানী জেরায় সহযোগিতা করেন না বলে অভিযোগ করেন, সিবিআইয়ের আইনজীবী। দেবযানীর অন্যতম আইনজীবী অয়নবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের মক্কেল তদন্তে সহযোগিতা করেছেন। ভবিষ্যতেও করবেন।” অয়নবাবুই এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত কুণালের জামিনে মুক্তির বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “এই মামলায় কয়েক বছর আগেই কুণালবাবুর জামিন মঞ্জুর হয়েছে। অথচ কুণালবাবুর থেকে বেশি দিন জেল হেফাজতে রয়েছেন দেবযানী।” সিবিআইয়ের আইনজীবীর বক্তব্য, কুণাল চাকরি করতেন সারদার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে। সরাসরি আমানতকারীদের টাকা লুটের ঘটনায় তিনি জড়িত ছিলেন না । তাই নিম্ন আদালতে তাঁর জামিন মঞ্জুর হয়েছে।
এই মামলার তদন্তে দীর্ঘসূত্রতার কারণ কী, সিবিআইয়ের আইনজীবীর কাছে তা জানতে চান বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআইয়ের কৌঁসুলি জানান, নিম্ন আদালতে সাক্ষী ও নথিপত্র নিয়ে অনেক সমস্যা রয়েছে। এক পদস্থ পুলিশকর্তার জন্য নথিপত্রে গরমিল ঘটেছে। বিচারপতি ওই পদস্থ পুলিশকর্তার বিষয়ে জানতে চাইলে সিবিআইয়ের কৌঁসুলি বলেন, ‘‘এক্স কমিশনার।’’ বিচারপতি জানতে চান, ‘এক্স কমিশনার’ কে? সিবিআইয়ের আইনজীবী তখন রাজীব কুমারের নাম উল্লেখ করেন। বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় দেবযানীর আইনজীবীদের বলেন, ‘‘আপনাদের মক্কেলকে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে।” আর সিবিআইয়ের আইনজীবীর উদ্দেশে তাঁর নির্দেশ, ‘‘তদন্ত সম্পন্ন করতে হবে দ্রুত।’’ আট সপ্তাহ পরে এই জামিনের আবেদনের মামলার শুনানি হবে। তার আগেই সুদীপ্ত ও দেবযানীকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা সেরে নিতে চায় সিবিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy