Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
TMC

কোচবিহারে বিক্ষোভের মুখে সুব্রত বক্সী, ঢুকতে পারলেন না শীতলকুচিতে

সুব্রত বক্সী বলেছেন, ‘‘অশান্তি এড়াতেই ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ বিজেপি কোচবিহারকে অশান্ত করতে চাইছে বলেও সুব্রত বক্সীর অভিযোগ।

সুব্রত বক্সিকে কালো পতাকা দেখিযে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র

সুব্রত বক্সিকে কালো পতাকা দেখিযে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৯ ১৭:১২
Share: Save:

বিক্ষোভ-অবরোধ-কালো পতাকার মুখে আটকে গেলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি তথা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সোমবার কোচবিহারের শীতলকুচিতে ঢুকতে পারলেন না সুব্রত বক্সী। ফিরতে হল কর্মসূচি বাতিল করে। বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে বক্সীর দাবি, অশান্তি ছড়াতে চাইছে বিজেপি। আর দক্ষিণ কলকাতার প্রাক্তন সাংসদের দাবি নস্যাৎ করে কোচবিহার জেলা বিজেপির সভানেত্রী বলছেন, কোনও দল নয়, বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সাধারণ জনতা।

লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই কোচবিহারে উত্তেজনা ছিল চরমে। ভোট মেটার পড়েও তাতে ভাটা পড়েনি। উত্তেজনা সবচেয়ে বেশি শীতলকুচি, সিতাই এবং মাথাভাঙায়। সেই শীতলকুচিতেই এ দিনকর্মসূচি ছিল সুব্রত বক্সীর। এলাকায় শান্তি ফেরানোর জন্য তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলোকে নিয়ে বৈঠকে বসার পরিকল্পনা ছিল বক্সীর, দাবি তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের। কিন্তু সে বৈঠকে এ দিন বসতে পারেননি বক্সী। বিক্ষোভের মুখে পড়ে শীতলকুচি থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হন তিনি।

সুব্রত বক্সীর পথ আটকানোর জন্য এ দিন বড়সড় জমায়েত হয়েছিল। কালো পতাকা এবং পোস্টার-ফেস্টুন নিয়ে জড়ো হয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। পোস্টারে লেখা ছিল, ‘সুব্রত বক্সী গো ব্যাক’, ‘টিএমসি নিপাত যাক’। রাস্তা পুরোপুরি আটকে দিয়ে এমন ভাবে বিক্ষোভ শুরু হয় যে, গাড়ি ঘুরিয়ে নেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি।

বক্সী শুধু দলের রাজ্য সভাপতি বা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক নন, তিনি কোচবিহার জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষকও। লোকসভা নির্বাচনে যে ধাক্কা তৃণমূল খেয়েছে সে জেলায়, তা মেরামত করতে দলের নেতৃত্ব সচেষ্ট। ইতিমধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহারে সাংগঠনিক রদবদল ঘটিয়ে দিয়েছেন। জেলা সভাপতি পদ থেকে রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে সরিয়ে বিনয় বর্মণকে সে পদে বসিয়েছেন তিনি। বিনয় আবার সবক’টি ব্লক কমিটি ভেঙে দিয়েছেন এবং আপাতত বিধায়করাই ব্লকে ব্লকে সংগঠন দেখভাল করছেন। সংগঠন ঢেলে সাজাতে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বকে এখন যে মাঝেমধ্যেই কোচবিহারে ছুটতে হতে পারে, তা নিয়ে সংশয় নেই। কিন্তু সে কাজ যে সহজ হবে না, তা সোমবার টের পেয়ে গেলেন সুব্রত বক্সী।

সুব্রত বক্সির রাস্তা আটকে চলছে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র

আরও পড়ুন: সব প্রদেশ কমিটি ভেঙে দিল কংগ্রেস, নতুন সভাপতি নির্বাচনের ইঙ্গিত? ইস্তফায় অবিচল রাহুল

যেখানে পৌঁছনোর কথা ছিল, সেখানে তিনি জোর করে পৌঁছনোর চেষ্টা করলে অশান্তি বাড়ত বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন সুব্রত বক্সী। তিনি বলেছেন, ‘‘অশান্তি এড়াতেই ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ বিজেপি কোচবিহারকে অশান্ত করতে চাইছে বলেও সুব্রত বক্সীর অভিযোগ।

জেলা বিজেপির সভানেত্রী মালতী রাভা রায় অবশ্য তীব্র কটাক্ষ করেছেন সুব্রত বক্সীকে। তিনি বলেন, ‘‘অশান্তি এড়াতে ফিরে যাননি, জনরোষের মুখে পড়ে ফিরে গিয়েছেন। বিজেপির কোনও ভূমিকা এখানে নেই। শীতলকুচিতে যে অবস্থা তৃণমূল তৈরি করেছে, তার প্রতিবাদ জানিয়ে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমেছিলেন। তাঁরাই সুব্রত বক্সীকে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন।’’

আরও পড়ুন: যুদ্ধ চাই, শান্তি নয়! তৃণমূলের এখন এই স্লোগান

ভোটের আগে থেকে যে অশান্তির শুরু, তা এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি শীতলকুচিতে। পরিস্থিতি এখনও থমথমে। মালতী রাভা রায়ের প্রশ্ন, ‘‘সুব্রত বক্সী কেন গেলেন শীতলকুচিতে? এলাকার সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক তো যাননি। শান্তির স্বার্থেই যাননি। সুব্রত বক্সী কি জানেন না যে, ওখানকার পরিস্থিতি এখন ঠিক নেই?’’ পঞ্চায়েতগুলির সঙ্গে বৈঠক করে শান্তি ফেরানোর চেষ্টা করতেই বক্সী এ দিন শীতলকুচি গিয়েছিলেন বলে তৃণমূল নেতাদের একাংশ যে দাবি করেছেন, তাকেও নস্যাৎ করেছেন মালতী। তিনি বলেন, ‘‘কোন পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথা বলতে যাচ্ছিলেন সুব্রত বক্সী? যে এলাকা উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে, সেখানকার পঞ্চায়েত তো সব বিজেপির দখলে চলে এসেছে। তৃণমূলের হাতে তো আর কিছুই নেই। তা হলে কার সঙ্গে সুব্রত বক্সী বৈঠক করতে যাচ্ছিলেন?’’

ভোটের আগে বা প্রচার চলাকালীন সিতাই, শীতলকুচি, মাথাভাঙায় ঢুকতে গিয়ে বার বার আক্রান্ত হতে হয়েছিল রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। সে প্রসঙ্গ টেনে জেলা বিজেপির সভানেত্রী এ দিন বলেন, ‘‘যা তৃণমূল এত দিন ঘটিয়েছে, তৃণমূলের সঙ্গে এখন তা-ই ঘটছে। দিলীপ ঘোষকে বার বার আক্রান্ত হতে হয়েছে এই শীতলকুচিতে। সব তৃণমূলই ঘটিয়েছিল। এ বার সে সব ওঁদের দিকেই ফিরে যাচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Subrata Bakshi Black Flag Cooch Behar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy