সুবোধ সিংহ। —ফাইল চিত্র
চারিদিক ঘিরে রেখেছে সশস্ত্র বিশাল পুলিশ বাহিনী। অপেক্ষায় সাংবাদিকেরা। প্রিজন ভ্যান থেকে নেমে এত ‘আয়োজন’ দেখে হেসে ফেলল বিহারের কুখ্যাত দুষ্কৃতী সুবোধ সিংহ। হাসতে-হাসতে এগিয়ে গেল কোর্ট-লকআপের দিকে!
শনিবার সকালে আসানসোল জেল থেকে ব্যারাকপুর আদালতে নিয়ে আসা হয় সুবোধকে। পুরনো কোনও শত্রুতার জেরে তার উপরে হামলা বা কোনও প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সজাগ ছিল পুলিশ। প্রিজন ভ্যান থেকে নেমে ফুলহাতা সাদা চেক শার্ট, নীল জিনস, স্নিকার্স পরা ও হাতে দামি ট্রলি ব্যাগ নিয়ে আদালতে ঢোকে সুবোধ। গত ১৫ জুন বেলঘরিয়া রথতলায় ব্যারাকপুরের ব্যবসায়ী অজয় মণ্ডলের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনায় ইতিমধ্যেই পাঁচ দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে কয়েক জন বিহারের। সূত্রের খবর, ধৃতদের জেরা করেই ওই ঘটনায় সুবোধের যোগসূত্র পাওয়ায় তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ।
ব্যারাকপুর আদালতে এ দিন পুলিশের তরফে দশ দিনের হেফাজতের আবেদন করা হয়। তবে সুবোধের আইনজীবী কমলজিৎ সিংহ আদালতকে জানান, তাঁর মক্কেল সাত বছর ধরে জেলে রয়েছে। সে কোনও ভাবে গুলি চালানোর ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়। এমনকি জেলে মোবাইল ব্যবহার নিয়েও সুবোধের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। তাই পুলিশি হেফাজত কম করার আবেদন জানান আইনজীবী।
সরকারি আইনজীবী দাবি করেন, ঘটনায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র এবং গুলি চালানো দুই দুষ্কৃতী এখনও ধরা পড়েনি। তবে আরও যারা ধরা পড়েছে তাদের নেপথ্যে সুবোধ রয়েছে বলেই তদন্তে জানা গিয়েছে। তাই তাকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। এর পরেই বিচারক তন্ময় রায় তদন্তকারী অফিসারের থেকে কেস-রেকর্ড দেখতে চান। সেটি দেখে বিচারক সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। পরে কমলজিৎ বলেন, “ওকালতনামা সই করানোর সময়ে সুবোধই জানিয়েছিল ইতিমধ্যেই ১৪ দিন সিআইডি হেফাজতে থেকে ক্লান্ত। তাই যেন এবারের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ একটু কমানোর আবেদন করি।”
অন্য দিকে দুই-তিন দিন আগে বাড়ির চারপাশে অপরিচিত কয়েক জন যুবককে ঘুরতে দেখে আতঙ্কিত বোধ করছেন বলেও এ দিন জানান অজয়। বলেন, “ওই ঘটনার দিন যখন থানায় বসে ছিলাম, তখনও তো সুবোধ আমায় ফোন করে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল।” এ দিন দুপুরে কোর্ট লকআপ থেকে বিহারের বেউর জেলে দীর্ঘ বছর ধরে বন্দি গ্যাংস্টারকে বের করার সময়েও চারিদিকে ছিল কড়া পুলিশি নিরাপত্তা বেষ্টনী। তবে, আদালতের রায়ে সুবোধের প্রতিক্রিয়া বোঝা যায়নি। কারণ নিরাপত্তার স্বার্থে মাথা-মুখ ঢাকা হেলমেট পরিয়ে সুবোধকে আদালত থেকে বের করে তোলা হয় প্রিজন ভ্যানে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy