Advertisement
২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Netaji

Netaji: এই ভারত চাননি  নেতাজি: অনিতা

সুগত তাঁর দাদুর গল্প বলছিলেন, বাবা শিশির বসুর ডায়েরির ছবি দেখাতে দেখাতে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:৫৭
Share: Save:

২০২২এর এই ভারতে রাষ্ট্রীয় স্তরে কতটুকু বেঁচে আছে সুভাষচন্দ্রের আদর্শ ? সুভাষচন্দ্রের ১২৫ তম জন্মবার্ষিকীর প্রাক্কালে প্রশ্নগুলো ঘুরপাক খেল সুভাষকন্যা অনিতা পাফের সঙ্গে ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকার সিরিজের শেষপর্বেও। রবিবার সন্ধ্যায় সুভাষচন্দ্রের মেয়ে অনিতা নিজেই বললেন, “ভারতে সম্প্রীতিতে ফাটল ধরানো শক্তির উত্থানের দিনকালে বিশেষ প্রাসঙ্গিক নেতাজির জীবন। নেতাজি বা আজাদ হিন্দ ফৌজের কথা ভাবলে বলতেই হয়, আগামীর ভারত বিষয়ে অন্য রূপরেখা ছিল তাঁদের চোখে।” ভারতে মেয়েদের বিরুদ্ধে হিংসার বাড়বাড়ন্তের কথা তুলেও অনিতা আক্ষেপ, “নেতাজি এই ভারত দেখলে অবশ্যই আহত হতেন।”

‘মিউনিখ সম্প্রীতি’ বলে প্রবাসীদের একটি মঞ্চের উদ্যোগে অনিতার সঙ্গে আলাপচারিতায় (অনিতা ডায়ালগস) এই দিনটিও নেতাজি-জীবনের একটি বিশেষ দিন। ১৬ জানুয়ারির মধ্যরাতেই এলগিন রোড়ের বাড়ি থেকে ওয়ান্ডারার গাড়িতে করে ‘মহম্মদ জিয়াউদ্দিনের’ ছদ্মবেশে ব্রিটিশ পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালান নজরবন্দি সুভাষ। অনিতা-সংলাপের এই পর্বের প্রধান অতিথি ইতিহাসবিদ তথা সুভাষের ভ্রাতুষ্পুত্র পুত্র সুগত বসুর মতে, “সুভাষের মহানিস্ত্রমণের এই দিনটিই তাঁর সুভাষ থেকে নেতাজি হয়ে ওঠার দিন।” নেতাজি ভবনের গাড়িবারান্দায় সুভাষচন্দ্রের শেষ বার কলকাতা ছেড়ে যাওয়ার গাড়িটার দিকে পিঠ করে বসে সুগত পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনায় শোনাচ্ছিলেন, নেতাজির মহানিস্ক্রমণের প্রস্তুতি পর্ব থেকে আজাদ হিন্দ ফৌজের নেতৃত্ব এবং আত্মবলিদানের কাহিনি। মিউনিখ ডায়ালগসের শৈবাল গিরি বলছিলেন, “আনন্দমেলায় নেতাজির সেই যাত্রার সারথি শিশিরকুমার বসুর (সুগতের বাবা) ‘বসু পরিবার’-এ সব গল্পই ছোটবেলায় পড়া, তবু ফের শুনতে শিহরিত লাগছে।”

সুগত তাঁর দাদুর গল্প বলছিলেন, বাবা শিশির বসুর ডায়েরির ছবি দেখাতে দেখাতে। সেই ডায়েরিময় শিশিরের ‘রাঙাকাকাবাবুর’ কথা। শিশির যে গাড়িটা চালিয়ে সুভাষচন্দ্রকে গোমো স্টেশনে পৌঁছে দেন, সেই গাড়িটা এখনও সচল। কিন্তু সুগত বা নেতাজি বিষয়ক আর এক পণ্ডিত ইতিহাসবিদ লিওনার্ড গর্ডনের কথায় এ দিন বার বার উঠে এসেছে, আজকের ভারতে নেতাজির বহুত্বের আদর্শ বা চর্চা ধ্বস্ত হওয়ার কথা। সুগতের মতে, “জাতধর্মের উর্ধ্বে গ্রহণ করার আদর্শে নেতাজি খানিকটা গাঁধীকেও পথ দেখিয়েছেন। মনে রাখতে হবে আলি ভাইদের নিয়ে অসহযোগ আন্দোলনের সময়েও গাঁধী হিন্দু, মুসলিম এক সঙ্গে খাওয়ায় স্বচ্ছন্দ নন। সেই গাঁধীই পরে আজাদ হিন্দ ফৌজে হিন্দু, মুসলিম, শিখ, ইশাইয়ের মিলনে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। আজাদ হিন্দ ফৌজের যোদ্ধাদের বিচারপর্বে ব্রিটিশ সরকার হিন্দু, মুসলিম বন্দিদের আলাদা চা, খাবার দিত। যোদ্ধারা তা মানতেন না। গাঁধী তত দিনে ওই বিষয়ে ছুতমার্গ কাটিয়ে উঠেছেন, এই সঙ্কীর্ণতার প্রতিবাদও করছেন।” সুগত বলেন, “ভারত স্বাধীন হওয়ার আগে সব ধর্মের মানুষকে মিলিয়ে দিতে অগ্রণী সুভাষ।” তবে তাঁর আক্ষেপ, “সঙ্কীর্ণ ধর্মবাদীরা নেতাজিকে উটকো সাধু বানিয়ে অপমান করছেন। এটা নেতাজির মূল্যায়ন নয়।” স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম সারির নেতাদের মধ্যে সুভাষ যুদ্ধে আত্মবলিদান দিয়েছিলেন, এ ভাবেই তাঁকে মনে রাখা উচিত, বলেন সুগত।

অন্য বিষয়গুলি:

Netaji Subhas Chandra Bose
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy