শনিবার বেলা ১১টা। স্কুল মাঠে ছোটাছুটিতে ব্যস্ত পডুয়ারা। তাদেরই এক ছাত্র, ব্যাগ থেকে চাবি বের করে খুলে দিল ক্লাস ঘর। তখনও দেখা নেই শিক্ষকদের। স্কুলের চাবি তোমার কাছে কী ভাবে? ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র বলে, “স্যর দিয়েছেন। সাড়ে ১২টার মধ্যে স্যরেরা না এলে, স্কুল বন্ধ করে বাড়ি চলে যেতে বলেন।” এরই মধ্যে, বেলা সওয়া ১১টা নাগাদ পৌঁছন স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। তিনিই ছাত্র-ছাত্রীদের প্রার্থনা করান। দ্বিতল ভবন থেকে মিড-ডে মিল রান্নার জন্য পাকা ঘর রয়েছে। অথচ, শিক্ষকদের গরহাজিরায় কার্যত ‘শিকেয়’ উঠেছে মালদহের বামনগোলার নয়াপাড়া জুনিয়র হাই স্কুলের পড়াশোনা, তেমনই অভিযোগ এলাকাবাসীর একাংশের।
লাগায়ো প্রাথমিক বিদ্যালয়েরও শিক্ষকদের ‘গরহাজিরায়’ ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। তাঁদের দাবি, জুনিয়র হাই ও প্রাথমিক স্কুলের যাবতীয় পরিকাঠামো রয়েছে। তবুও শিক্ষকেরা সময়ে না আসায় স্কুল দুটির পড়াশোনা ‘শিকেয়’ উঠেছে। স্কুলের শিক্ষকদের গরহাজিরার ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বামনগোলার বিডিও রাজু কুণ্ডু। তিনি বলেন, “ঘটনাটি অবর পরিদর্শককে গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গাফিলতি থাকলে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বামনগোলা চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক উপাসনা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নয়াপাড়া জুনিয়র হাই স্কুলে শিক্ষকের ঘাটতি রয়েছে। তবে স্কুলে শিক্ষকদের গরহাজিরার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
২০১২-১৩ আর্থিক বর্ষে বামনগোলা ব্লকের চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নয়াপাড়া জুনিয়ার হাই স্কুল তৈরি হয়। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলে ৩৯ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। স্কুলের দ্বিতল ভবন, মিড-ডে মিল রান্নার জন্য পাকাঘর, শৌচাগার, পানীয় জলের মতো যাবতীয় পরিকাঠামো রয়েছে। এমনকি, স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মীও রয়েছে। জানা গিয়েছে, স্কুলের শিক্ষিকা মাতৃত্বকালীন ছুটি নেওয়ায় দুই শিক্ষককে ‘ডেপুটেশন’-এ স্কুলে পাঠানো হয়েছে। এ দিন দু’জন শিক্ষকের মধ্যে কেউই স্কুলে আসেননি, দাবি ছাত্রছাত্রী ও গ্রামবাসীদের। একই অবস্থায় লাগোয়া নয়াপাড়া প্রাথমিক স্কুলেরও।
চতুর্থ শ্রেণির কর্মী যদুনাথ রায় বলেন, “মিড-ডে মিলের বাজার করার জন্য স্কুল খুলতে দেরি হয়েছে। দু’জনের এক শিক্ষক ছুটি নিয়েছেন। অন্য জনের ব্যক্তিগত কাজ থাকায় আসতে দেরি হয়েছে।” অভিভাবক বাসুদেব মণ্ডল বলেন, “গ্রাম থেকে নিকটবর্তী হাই স্কুলের দূরত্ব চার-পাঁচ কিলোমিটার। তাই বাড়ির কাছে স্কুলে ছেলেকে ভর্তি করি। শিক্ষকেরা নিয়মিত আসেন না। প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত।”
নয়াপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রসেনজিৎ হালদার বলেন, "এ দিন স্কুলে আসতে দশ মিনিট দেরি হয়েছে। দৈনিক দেরি করে আসার অভিযোগ ঠিক নয়। জুনিয়ার হাই স্কুলের ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না।" বহু চেষ্টা করেও এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি জুনিয়র হাই স্কুলের দুই শিক্ষকের সঙ্গে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy