Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
বিতর্ক মিশ্র পাঠ নিয়েও

দাবি আদায়ে অনশন শুরু প্রেসিডেন্সিতে

‘‘যদি ওই পড়ুয়ার পরিচয়পত্র থেকে থাকে, তা হলে তাঁকে ঢুকতে না-দিয়ে কর্তৃপক্ষ যে-অবাঞ্ছিত কঠোরতা দেখিয়েছেন, সেটা উচিত হয়নি,’’ বলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৮ ০৫:০২
Share: Save:

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনশন করে প্রবেশিকা পরীক্ষা ফিরিয়ে এনেছেন ছাত্রছাত্রীরা। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের নতুন হস্টেলে ঠাঁই পাওয়ার দাবি আদায়ে দ্বিতীয়-তৃতীয় বর্ষের কিছু পড়ুয়ার হাতিয়ার ছিল অনশন। এ বার দাবি আদায়ে অনশনেরই রাস্তা বেছে নিলেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভকারীরা।

কর্তৃপক্ষ পিছু হটেছেন। তা সত্ত্বেও কাটছে না প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের জটিলতা। এ বার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অমানবিকতার অভিযোগ তুললেন পড়ুয়ারা। ওষুধ আনতে ক্যাম্পাসের বাইরে বেরোনো এক পড়ুয়াকে ভিতরে ঢুকতে না-দেওয়ায় সোমবার সারা রাত তাঁকে বৃষ্টির মধ্যে রাস্তায় শুয়ে থাকতে হয়। তা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে হাজিরা বিধি রূপায়ণে কড়াকড়ি নিয়ে পড়ুয়াদের তরফে অবস্থান-বিক্ষোভ করে কর্তৃপক্ষের উপরে যে-ভাবে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে, তারও নিন্দায় মুখর হয়েছে শিক্ষা শিবির।

ছাত্রছাত্রীদের কিছু দাবি মেনে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ সোমবারেই নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটেছেন। কিন্তু ফের কয়েক দফা দাবি নিয়ে অবস্থান শুরু হয় প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই। অবস্থানরত পড়ুয়াদের মধ্যে মানসী সরকার নামে এক ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ায় ওই দিন রাত ১০টা নাগাদ ওষুধ ও খাবার আনতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে যান স্নাতকোত্তর জীববিদ্যার প্রথম বর্ষের ছাত্র অয়ন ঘরামি। তাঁর ফিরতে পৌনে ১১টা বেজে যায়। নিয়ম অনুযায়ী রাত সাড়ে ১০টায় মূল ফটক বন্ধ হয়ে যায়। তাই দরজা খুলতে অস্বীকার করেন নিরাপত্তারক্ষীরা। অয়ন জানান, ডিন অব স্টুডেন্টস অরুণ মাইতিকে ফোন করে সব জানানো সত্ত্বেও তিনি দরজা খোলার অনুমতি দেননি। তাই সারা রাত দরজার বাইরে বৃষ্টির মধ্যেই রাস্তায় শুয়ে ছিলেন তিনি। অয়ন বলেন, ‘‘রাত ৩টেয় শৌচালয়ে যাওয়ার কথা বলার পরেও দরজা খোলা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ যে এতটা অমানবিক হতে পারেন, সেটা ভাবতেই পারছি না।’’ মঙ্গলবার সকাল ৬টায় দরজা খুললে ওই ছাত্র ক্যাম্পাসের ভিতরে ঢোকেন।

‘‘যদি ওই পড়ুয়ার পরিচয়পত্র থেকে থাকে, তা হলে তাঁকে ঢুকতে না-দিয়ে কর্তৃপক্ষ যে-অবাঞ্ছিত কঠোরতা দেখিয়েছেন, সেটা উচিত হয়নি,’’ বলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায়।

ছাত্রছাত্রীদের লাগাতার অবস্থান-বিক্ষোভ নিয়েও শিক্ষাজগৎ বিরক্ত। অবস্থানকারীদের তরফে মানসী সরকার নামে এক ছাত্রী জানান, চলতি বছর থেকে সিবিসিএস বা পছন্দসই মিশ্র পাঠ পদ্ধতি চালু করার আগে পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলকে। এ ছাড়া বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে হাজিরা বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে নরম হতে হবে। সাধারণ ভাবে প্রতিটি ক্লাসে ৭৫ শতাংশ হাজিরা বাধ্যতামূলক। নইলে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয় না। অবস্থানকারীদের দাবি, মেডিক্যাল শংসাপত্র দিয়ে সর্বাধিক ১৫ শতাংশ ছাড় পাওয়া যায়। অর্থাৎ সে-ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ হাজিরা থাকতেই হয়। কিন্তু তার পরেও অনেকের সেটা থাকে না। তখন তাঁদের পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয় না। এই সব ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষকে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়ার আবেদন খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে দাবি তুলেছেন বিক্ষোভকারীরা। মানসী জানান, দাবির সুরাহার আগে পর্যন্ত তাঁদের অনশন চলবে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় বৈঠক হলেও জট কাটেনি। বক্তব্য জানার জন্য রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতি কোনারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হয়েছিল। তিনি ফোন তোলেননি।

অন্য বিষয়গুলি:

Presidency University Student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy