—প্রতীকী ছবি।
এ বছর থেকেই উচ্চ মাধ্যমিকে সিমেস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। একাদশ এবং দ্বাদশে দু’টি করে চারটি সিমেস্টার হবে। প্রশ্নের ধরনের সঙ্গে বদলেছে পুরো পাঠ্যক্রমও।
একলপ্তে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি চলে যাওয়ার আবহে প্রশ্ন উঠেছে, নতুন এই পদ্ধতিতে পড়ানোর জন্য উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পর্যাপ্ত শিক্ষক অবশিষ্ট থাকবে তো?
শিক্ষকদের একাংশের মতে, গত সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের রায়ে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরেই। কারণ ওই স্তরে একটি বিষয় পড়ানোর জন্য এক জন শিক্ষকই থাকেন। তাঁর বিষয়টি অন্য বিষয়ের শিক্ষক পড়াতে পারেন না।
উদাহরণ দিয়ে শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, মাধ্যমিক স্তরে অনেক ক্ষেত্রে অঙ্কের শিক্ষক না থাকলে বিজ্ঞানের শিক্ষককে দিয়ে সাময়িক ভাবে কাজ চালিয়ে নেওয়ার দস্তুর রয়েছে। অন্য বিষয়ের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়। কিন্তু, উচ্চ মাধ্যমিকে পদার্থ বিদ্যার ক্লাস কোনও ভাবেই রসায়নের শিক্ষকের নেওয়া সম্ভব নয়। ফলে উচ্চ মাধ্যমিকে যে শিক্ষকদের চাকরি বাতিল হয়েছে, তাঁদের জায়গায় সাময়িক ভাবে কেউই পড়াতে পারবেন না।
পূর্ব মেদিনীপুরের একটি স্কুলের নিউট্রিশনের শিক্ষিকা উমা দাস ‘বাতিল হওয়া’ ২০১৬-র প্যানেল থেকে নিযুক্ত হয়েছিলেন। তাঁর প্রশ্ন, এখন কে স্কুলে নিউট্রিশন পড়াবেন? দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি স্কুলের শিক্ষক প্রদীপ দাস একাদশ ও দ্বাদশে ইতিহাস পড়ান। তিনিও এই বাতিলের দলে আছেন। ওই স্কুলে এখন কে ইতিহাস পড়াবেন, উঠছে সেই প্রশ্নও।
স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) যোগ্য শিক্ষকদের চাকরি বাঁচাতে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং চাকরি বাতিল হওয়া যোগ্য শিক্ষকেরাও যাবেন সুপ্রিম কোর্টে। অভিভাবকদের একাংশের প্রশ্ন, পড়ুয়াদের পঠনপাঠন কী ভাবে হবে, তা নিয়ে কেউ কি চিন্তাভাবনা করছেন? গরমের ছুটির পরে স্কুল খুললে কী হবে, তা নিয়ে কারও কোনও সুনিশ্চিত পরিকল্পনা রয়েছে?
চাকরি বাতিলে সবচেয়ে ক্ষতি হবে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরেই, এ কথা মেনে নিয়ে উদ্বিগ্ন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “নতুন সিমেস্টার পদ্ধতিতে কী ভাবে পড়ুয়াদের পড়ানো হবে, তা নিয়ে কিছু দিনের মধ্যেই বেশ কিছু প্রশিক্ষণ শিবির করার কথা। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে ক’জন শিক্ষক এই প্রশিক্ষণ নেবেন, সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। উচ্চ মাধ্যমিকে কৃত্রিম মেধা, ডেটা সায়েন্সের মতো নতুন বিষয় যোগ হয়েছে। এই দু’টি বিষয় পড়াতে বিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষকই প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এ বার তাঁরা যদি বাতিলের তালিকায় থাকেন, তা হলে এগুলোই বা কে পড়াবেন?”
অভিভাবকদের মতে, সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পড়ুয়ারাই। যে সব শিক্ষক নিজেদের যোগ্য বলে দাবি করছেন, তাঁরাও তো আদালতে যাচ্ছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁদের বিষয়টার ফয়সালা না হচ্ছে, ওই শিক্ষকেরা কি আগের মতোই মনোযোগী হয়ে স্কুলে পড়াতে পারবেন, প্রশ্ন অভিভাবকদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy