—ফাইল চিত্র।
আজ, রবিবার সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষা (নিট)। পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে শনিবারের লকডাউন প্রত্যাহার করেছে রাজ্য সরকার। যাতায়াতের সুবিধায় বাড়তি বাসের বন্দোবস্তও করা হচ্ছে। তবে উত্তর থেকে দক্ষিণ, বেশির ভাগ পরীক্ষার্থীই ভরসা রেখেছেন ভাড়ার গাড়িতে। দূরত্ব অনুযায়ী ভাড়ার অঙ্ক দু’আড়াই হাজার থেকে হাজার পনেরোও ছাড়াচ্ছে।
কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক শনিবার টুইটে জানিয়েছেন, দেশ জুড়ে ৩৮৬২টি পরীক্ষাকেন্দ্রে কয়েক লক্ষ পরীক্ষার্থী নিট দেবেন। প্রতিটি রাজ্যের সরকার করোনা-বিধি মেনে যাবতীয় আয়োজন করবেন এই আশা জানিয়ে পরীক্ষার্থীদেরও নিয়ম মেনে পরীক্ষা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষার (জেইই-মেন) তুলনায় এ রাজ্যের জেলায় জেলায় নিট-কেন্দ্র বেশি। কলকাতা ছাড়াও বর্ধমান, দুর্গাপুর, মেদিনীপুর, শিলিগুড়ির মতো জেলাশহরে একাধিক পরীক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। হুগলির মানকুণ্ডু, পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসা, পাণ্ডবেশ্বর, পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনের মতো এলাকাতেও রয়েছে পরীক্ষাকেন্দ্র। তবে নিজের জেলাতেই সকলের পরীক্ষাকেন্দ্র নয়। কাউকে যেতে হচ্ছে পাশের জেলায়, কাউকে কলকাতায়, কাউকে আবার ভিন্ রাজ্যে। ট্রেন বন্ধ থাকায় ভাড়ার গাড়িই ভরসা।
যেমন, গাড়ি ভাড়া করে বাবার সঙ্গে কলকাতায় পৌঁছেছেন মালদহের ইংরেজবাজার শহরের রাজদীপ সরকার। তিনি বলেন, ‘‘১৬ হাজার টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করতে হয়েছে।’’ কালনা শহরের সৌমিক ঘোষের পরীক্ষাকেন্দ্র হুগলির মানকুণ্ডুতে। যাতায়াতে গাড়ির ভাড়া ১৭০০ টাকা। সৌমিকের কথায়, ‘‘ট্রেন ও বাস চলাচল স্বাভাবিক থাকলে এই বাড়তি খরচ হত না।’’ অন্য সময়ে অনেকে একটি গাড়ি ভাড়া করলেও, করোনা পরিস্থিতিতে সেই ঝুঁকি নেওয়া যাচ্ছে না। ফলে, আলাদা গাড়ি করতে গিয়ে বাড়তি খরচ হচ্ছে। ভোগান্তির আশঙ্কায় বাসে ভরসা রাখতে পারছেন না হুগলির গ্রামাঞ্চলের পরীক্ষার্থীরাও। তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় গাড়ি ভাড়া করেছেন তাঁরা।
‘পথ-সুবিধা’
মেট্রো
• ৭৪টি মেট্রো, সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা (প্রতি ১৫ মিনিট অন্তর)।
• স্মার্ট কার্ড ছাড়া, পেপার কার্ড টিকিট (পিসিটি) দেওয়া হবে।
• প্রবেশ পথে পরীক্ষা সংক্রান্ত প্রমাণপত্র দেখাতে হবে।
• পরীক্ষার্থীর সঙ্গে এক জন অভিভাবকের প্রবেশের অনুমতি।
• মাস্ক বাধ্যতামূলক।
সরকারি বাস
• প্রায় ১৫০০ বাস চলবে।
• আসন সংখ্যা অনুযায়ী যাত্রী তোলার নির্দেশ।
• কলকাতার বিভিন্ন জায়গা সহ জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যান্ড গুলিতে পর্যাপ্ত বাস থাকবে।
• প্রয়োজনে অতিরিক্ত বাস নামানোর পরিকল্পনা।
• আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক, পিভিডি এবং পরিবহণ নিগমের কার্যালয়ে কন্ট্রোল রুম।
কন্ট্রোল রুম নম্বর:
১৮০০৩৪৫৫১৯২
৮৯০২০১৭১৯১
(হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর)
বেসরকারি বাস ও
ট্যাক্সি সংগঠনগুলিকেও রাস্তায় পর্যাপ্ত পরিষেবা দেওয়ার জন্য জানিয়েছে
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ, তবুও স্বস্তি দিচ্ছে সংক্রমণের হার
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরের বিষ্ণুপুর গ্রামের শিবপ্রসাদ খানাড়ার পরীক্ষাকেন্দ্র বজবজের অমৃত বিদ্যালয়ে। নদী ও সড়ক মিলিয়ে প্রায় ১৪০ কিলোমিটার পথ যেতে ভোর তিনটেয় বেরোতে হবে তাঁকে। সাগর ব্লকের বিষ্ণুপুর গ্রামের বাসিন্দা শিবপ্রসাদ খানাড়ার বাবা নেই। মা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। বহু দিন থেকেই স্বপ্ন, চিকিৎসক হওয়ার। নিটে বসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন অনেক দিন ধরে। কিন্তু করোনা আবহে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনো নিয়ে চিন্তায় শিবপ্রসাদ। রবিবার পরীক্ষা। শিবপ্রসাদের সিট পড়েছে বজবজের অমৃত বিদ্যালয়ে। বাড়ি থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রের দূরত্ব নদী ও সড়ক পথ মিলিয়ে প্রায় ১৪০ কিলোমিটার। শিবপ্রসাদের কথায়, “কয়েকজন বন্ধু মিলে বাসেই যাব ঠিক করেছি। বাড়ি থেকে ভোর ৩টের দিকে বেরোলে সকালের মধ্যে কাকদ্বীপ পৌঁছব। ওখান থেকে ৭টা নাগাদ বাস ধরলে আশা করছি দু’টোর আগেই পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে যাব।
পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের বাসিন্দা সুশোভন তেওয়ারির পরীক্ষাকেন্দ্র আবার ঝাড়খণ্ডের বোকারোয়। তিনি বলেন, ‘‘বাড়ি থেকে প্রায় ৮০ কিমি দূরে পরীক্ষাকেন্দ্র। দুপুরে পরীক্ষা হলেও ভোরে ভাড়ার গাড়িতে রওনা দিতে হবে। সীমানা পেরনোর সময় পুলিশ আটকাবে কি না, চিন্তায় রয়েছি।’’ নদিয়ার কল্যাণীতে পরীক্ষাকেন্দ্র থাকলেও এলাকার পরীক্ষার্থীদের বেশিরভাগেরই কেন্দ্র সোদপুরের একটি কলেজে।
আরও পড়ুন: করোনার ওষুধ না আসা পর্যন্ত সর্বোচ্চ সতর্কতা: মোদী
পশ্চিম মেদিনীপুরের ২০টি পরীক্ষাকেন্দ্রে মেদিনীপুরের তিন জেলার পরীক্ষার্থীরাই পরীক্ষা দেবেন। পূর্ব মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের কিছু পড়ুয়ার আবার কলকাতায় পরীক্ষাকেন্দ্র। তাঁদের জন্য শনিবার থেকেই বাড়তি বাসের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। এ দিন ঝাড়গ্রাম থেকে খড়্গপুরের চৌরঙ্গী হয়ে ৮টি বাস ধর্মতলা গিয়েছে। আজ, রবিবার ভোর থেকে ৯টি সরকারি বাস ধর্মতলায় যাবে। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার পরিচালন পর্ষদের সদস্য সুকুমার দাস জানান, হলদিয়া ও দিঘা থেকেও রবিবার সকালে কলকাতাগামী অতিরিক্ত বাস ছাড়বে। পরীক্ষার্থীরা অ্যাডমিট কার্ড দেখিয়ে বিনা ভাড়ায় যেতে পারবেন। তবে অভিভাবকদের ভাড়া লাগবে। যদিও পরীক্ষার্থীদের বক্তব্য, পরীক্ষাকেন্দ্র পর্যন্ত তো আর বাস যাবে না। কলকাতায় পৌঁছে আবার গাড়ি করতে হবে। তাই জেলা থেকেই ভাড়ার গাড়িতে যাচ্ছেন বেশিরভাগ পড়ুয়াই।
করোনা-কালে প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে থাকছে আইসোলেশন ঘর। থার্মাল গান দিয়ে পরীক্ষার পরে কারও তাপমাত্রা ৯৮.৬ সেলসিয়াসের বেশি হলে তাঁকে আধঘণ্টা বসিয়ে ফের তাপমাত্রা দেখা হবে। তখনও না কমলে তাঁকে আইসোলেশনে পরীক্ষা দিতে হবে। ওই ঘরে পরীক্ষক থাকবেন পিপিই পরে। নিউটাউনের এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক তথা সেন্টার সুপার মালা মিত্র বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থীকে অ্যাডমিট কার্ডের ঘোষণাপত্রে লিখতে হবে, তিনি সংক্রমিত নন। কেউ কোভিড আক্রান্ত হলে তাঁকে কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। তাঁকে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy