Advertisement
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
West Bengal Police

পুলিশে রদবদলে কি গোয়েন্দা তথ্য জোগাড়ে গতি

সদ্য রদবদল হয়েছে কলকাতা পুলিশের শীর্ষপদে। জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের চাপে পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে বিনীত গোয়েলকে সরিয়ে তাঁকে ‘স্পেশাল টাস্ক ফোর্স’-এ (এসটিএফ) ফিরিয়ে এনেছে রাজ্য সরকার।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিনীত গয়াল।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিনীত গয়াল। —ফাইল ছবি।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:০৬
Share: Save:

গোয়েন্দা-তথ্যের সংগ্রহ জোরদার করাও কি পুলিশে সাম্প্রতিক দায়িত্ব পুনর্বণ্টনের পিছনে অন্যতম কারণ—চর্চা পুলিশ এবং প্রশাসনের অন্দরে।

সদ্য রদবদল হয়েছে কলকাতা পুলিশের শীর্ষপদে। জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের চাপে পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে বিনীত গোয়েলকে সরিয়ে তাঁকে ‘স্পেশাল টাস্ক ফোর্স’-এ (এসটিএফ) ফিরিয়ে এনেছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের গোয়েন্দা বিভাগের (আইবি) দায়িত্ব ফের দেওয়া হয়েছে জ্ঞানবন্ত সিংহকে। অভিজ্ঞ আমলা এবং পুলিশ কর্তাদের একাংশের যুক্তি, গোয়েন্দা তথ্য ও নজরদারি বাড়ানো ও বাংলাদেশে সরকার পতনের পরবর্তী পরিস্থিতিতে নবান্নের এই পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ।

অভিজ্ঞ আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, অতীতে বহু বার গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে দুর্বলতার অভিযোগ তুলে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্দেশখালি থেকে শুরু করে ‘ছাত্র সমাজের ডাকে’ নবান্ন অভিযান ও জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের তীব্রতা কত দূর পৌঁছতে পারে, পর্যাপ্ত গোয়েন্দা-তথ্যের অভাবে শুরুতে তা পুরোপুরি আঁচ করতে পারেনি প্রশাসনের শীর্ষমহল। শুরুতে জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবিতে ততটা আমল না দিলেও, পরে তাঁদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনার আগ্রহ দেখাতে বাধ্য হয়েছে রাজ্য। এমনকি, আন্দোলনের চাপে কলকাতার পুলিশ কমিশনার থেকে শুরু করে একাধিক স্বাস্থ্যকর্তাকে বদলি করতে হয়েছে। সম্ভবত তাই ভেবেচিন্তে পুলিশে রদবদল করেছে সরকার। আর জি কর-কাণ্ডের পরে আন্দোলনের ঝাঁঝ যত বেড়েছে, ততই বিড়ম্বনায় পড়েছে সরকার। এমনকি, এ রাজ্যের পরিস্থিতি যে বাংলাদেশের মতো হয়ে উঠবে না, সেই দাবিও করতে হয়েছে খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে। প্রশাসনিক বিশ্লেষকদের একাংশের ধারণা, সেই দিক থেকে আইবি, এসটিএফ-এর নেতৃত্বে ‘আস্থাভাজন’ আইপিএস-দের দায়িত্ব দেওয়া তাৎপর্যপূর্ণ।

পুলিশের একটি সূত্রের বক্তব্য, এসটিএফ-এর ক্ষমতা বিপুল। ‘গোপন’ কায়দায় কোনও শক্তি বা গোষ্ঠী প্রশাসনকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করলে এই বাহিনী সক্রিয় হতে পারে। বিনীত আগে দীর্ঘ দিন তার দায়িত্বে থেকেছেন। ফলে তাঁকে সেই দায়িত্বে ফেরানোর অর্থ, এসটিএফ-কে আরও চাঙ্গা করা। তাতে জঙ্গি দমনে যেমন বাহিনীর মনোবল বৃদ্ধি পাবে, তেমনই সন্দেহভাজনদের উপর নজরদারি বাড়ানোও সম্ভব। এতেই অশনি সংকেত দেখছেন পুলিশকর্তাদের একাংশ। তাঁদের প্রশ্ন, সরকার-বিরোধীদের উপর নজরদারি বাড়াতে এসটিএফ ও আইবি-র সমন্বয়কে ব্যবহার করতে চাইছে না তো সরকার? তৃণমূলের তরফে ষড়যন্ত্রের অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশ ও তার ভিত্তিতে যুব বাম নেতার গ্রেফতার হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চর্চা বেড়েছে। যদিও প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE