Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Calcutta University

সোনালি প্রশ্নে রাজ্য যাবে সুপ্রিম কোর্টে

প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার জানিয়েছে, সোনালিকে উপাচার্যের পদে পুনর্নিয়োগের সরকারি নির্দেশ ‘আইনসঙ্গত’ নয়।

সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়।

সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:৪৩
Share: Save:

তাঁর পুনর্নিয়োগ হয়েছিল রাজ্যের তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং তৃণমূল সরকারের টানাপড়েনের মধ্যে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য-পদে সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুনর্নিয়োগের সেই সরকারি নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার জানিয়েছে, সোনালিকে উপাচার্যের পদে পুনর্নিয়োগের সরকারি নির্দেশ ‘আইনসঙ্গত’ নয়। শুধু তা-ই নয়, কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নিয়োগ বা পুনর্নিয়োগের ক্ষমতা রাজ্য সরকারের নেই বলেও জানায় কোর্ট।

সংশ্লিষ্ট মামলাটি শুধু সোনালির নিয়োগের বিরোধিতা করে দায়ের করা হলেও রাজ্যের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের নিয়োগ বা পুনর্নিয়োগ নিয়ে একই প্রশ্ন উঠতে পারে। এই রায়ের উল্লেখ করে সেই সব নিয়োগও বাতিল হতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষা ও আইনজীবী শিবিরের অনেকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, তাই এই রায় নিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করেছে উচ্চশিক্ষা দফতর। এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাবে রাজ্য। উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফেও শীর্ষ আদালতে আর্জি জানানো হতে পারে। তবে হাই কোর্টের রায়ের ব্যাপারে সোনালি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

হাই কোর্টের খবর, উপাচার্য-পদে সোনালির প্রথম দফার মেয়াদ ফুরোয় ২০২১ সালের ২৭ অগস্ট। তাঁকে পুনর্নিয়োগের জন্য প্রস্তাব যায় রাজ্যপাল-আচার্যের কাছে। রাজ্যপাল কিছু ব্যাখ্যা চান এবং নিয়মমাফিক সোনালির উপাচার্য-পদের মেয়াদ তিন মাস বাড়িয়ে দেন। কিন্তু রাজ্যপাল যে-ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন, তা না-দিয়ে রাজ্য সরকার একটি নির্দেশিকা জারি করে ২০২১ সালের ২৮ অগস্ট থেকে সোনালিকে চার বছরের জন্য পুনর্নিয়োগ করে। সেই নিয়োগনিয়েই মামলা করেন অনিন্দ্যসুন্দরদাস নামে এক আইনজীবী। তাঁর কৌঁসুলি বিল্বদল ভট্টাচার্য, অনীশ মুখোপাধ্যায় ও সূর্যনীল দাস কোর্টে জানান, রাজ্যের এই নিয়োগের ক্ষমতাই নেই। এই নিয়োগ ইউজিসি বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বিধিরও পরিপন্থী।

রাজ্যের কৌঁসুলিদের দাবি, শিক্ষা আইনে কিছু রদবদলের ফলে সরকার এই নিয়োগের ক্ষমতা পেয়েছে। আচার্য পুনর্নিয়োগের সিদ্ধান্ত না-নেওয়ায় নিয়োগ করেছে সরকার।

উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপাল-আচার্যের সঙ্গে সংঘাতের পরেই রাজ্য সরকার নতুন বিল এনেছিল। তাতে বলা হয়, পদাধিকার-বলে মুখ্যমন্ত্রীই রাজ্যের অধীন সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হবেন। সেই বিল বিধানসভায় পাশ হয়ে গেলেও রাজ্যপালের সম্মতি মেলেনি। এই দ্বন্দ্বের মধ্যেই ধনখড় চলে গিয়েছেন। তার পরে স্থায়ী রাজ্যপাল এখনও পায়নি পশ্চিমবঙ্গ। আইনজীবীদের একাংশের পর্যবেক্ষণ, উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে ইউজিসি বিধির মান্যতাও গুরুত্বপূর্ণ। এই মামলায় সেই প্রশ্ন উঠেছিল। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউজিসি বিধি মান্যতা পাবে না, এমন কথা স্পষ্ট ভাবে বলতে পারেননি রাজ্যের কৌঁসুলিরাও।

তবে কলকাতার মতো দেশের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পুনর্নিয়োগ এ ভাবে বাতিল হওয়ার ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন বলে জানিয়েছে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (কুটা)। তাদের বক্তব্য, ‘এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্মান নষ্ট হয়েছে’ এবং এর ‘দায়’ তারা রাজ্য সরকারের উপরে চাপিয়েছে। তারা আরও জানিয়েছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু দিন ধরে স্থায়ী সহ-উপাচার্য (অর্থ) নেই। অধিকাংশ ফ্যাকাল্টির ডিনও অস্থায়ী। এর উপরে উপাচার্যের অপসারণের আদেশের ফলে যে-অচলাবস্থা তৈরি হবে, তার দ্রুত সুরাহার দাবি জানিয়েছে তারা।

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta University TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy