Advertisement
E-Paper

CPM: মমতার অনুদানে মজে মানুষ, শুনছেন না অন্য কথা, উদ্বেগ সিপিএমের অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে

রাজ্যে গত বিধানসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের বিপুল সাফল্যের পর থেকেই ‘দুয়ারে সরকার’ বা ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ জাতীয় প্রকল্পের জেরে তৈরি হওয়া ‘সুবিধাভোগী শ্রেণি’র মনোভাব নিয়ে নানা চর্চা চলছে রাজ্য রাজনীতিতে। বিরোধী দলের পক্ষে সরকারের এই জনমোহিনী নীতির সঙ্গে এঁটে ওঠা যে কঠিন, নির্বাচনী পর্যালোচনায় উঠে এসেছে সেই প্রসঙ্গও।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২২ ০৮:০৮
Share
Save

রাজ্যের বড় অংশের মানুষ এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিভিন্ন জনমোহিনী প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। তাঁদের কাছে ভবিষ্যতের কথা বা অন্য যুক্তি এখন গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে না। তাই বিরোধিতাও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। রাজ্য সম্মেলনের মঞ্চে রাজ্য রাজনীতির এই ‘বাস্তবতা’ মেনে নিচ্ছে সিপিএম।

রাজ্যে গত বিধানসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের বিপুল সাফল্যের পর থেকেই ‘দুয়ারে সরকার’ বা ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ জাতীয় প্রকল্পের জেরে তৈরি হওয়া ‘সুবিধাভোগী শ্রেণি’র মনোভাব নিয়ে নানা চর্চা চলছে রাজ্য রাজনীতিতে। বিরোধী দলের পক্ষে সরকারের এই জনমোহিনী নীতির সঙ্গে এঁটে ওঠা যে কঠিন, নির্বাচনী পর্যালোচনায় উঠে এসেছে সেই প্রসঙ্গও। এ বার সিপিএমের ২৬তম রাজ্য সম্মেলনের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক প্রতিবেদনে সেই বিষয়টিকেই তুলে ধরে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিতর্কের চেহারা দিচ্ছে সিপিএম।

বরাবর প্রান্তিক, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষকে পাশে নিয়েই গড়ে উঠেছে বামপন্থী আন্দোলন। নির্বাচনী বাক্সেও তার ফল মিলেছে। কিন্তু এখন তৃণমূল সরকার রাজ্যের বড় অংশের মানুষকেই বেঁধে ফেলেছে নানা প্রকল্পের বাঁধনে। সরকারের কাছ থেকে সুবিধা পাওয়ায় বিরোধীদের অনেক কথাই মানুষ আপাতত শুনতে চাইছেন না। বামেদের মতে, কঠিন হয়ে যাচ্ছে লড়াই।

কলকাতার প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে আজ, মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে সিপিএমের ২৬তম রাজ্য সম্মেলন। সেখানে ১০৯ পাতার যে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ হতে চলেছে, সেখানেই বিশ্লেষণ করা হয়েছে— মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সরকারের নানা প্রকল্প থেকে সুবিধা পাচ্ছেন মানুষ। এমন অনুদানমূলক প্রকল্প যে দীর্ঘস্থায়ী কোনও সমাধান নয়, বরং রাজ্যে শিক্ষা, শিল্প বা কর্মসংস্থানের চেহারা আশাপ্রদ নয়, এই যুক্তি মানুষ এখন কানে তুলছেন না। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে: ‘আমাদের রাজনীতিবোধে আমরা বুঝতে পারছি, কেমন ভাবে সাধারণ মানুষ অধিকার আদায়ের পথ থেকে সরে গিয়ে সরকারি দান-নির্ভর গ্রহীতায় পরিণত হয়ে পড়েছেন। কিন্তু সেই বোধ আমরা জনচেতনায় প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। আমাদের রাজনৈতিক বোধ থেকে অনেক ক্ষেত্রে এই প্রকল্পগুলির সীমাবদ্ধ চরিত্র প্রচার করেছি অথচ মানুষের বড় অংশ মানসিক ভাবে এগুলিকেই গ্রহণ করেছেন। ফলে, ভবিষ্যতের নিরিখে আমাদের বক্তব্য সঠিক হলেও মানুষ তা গ্রহণ করেননি’।

মানুষের কাছে ভবিষ্যতের যুক্তি এখন গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে না বলেই আপাতত ‘দুয়ারে সরকার’ বা ‘ই-শ্রম’ কার্ডের জন্য ফর্‌ম পূরণের কাজে সাধারণ জনতাকে সহায়তা করার জন্য দলের কর্মীদের পরামর্শও দিয়েছে সিপিএম। পাশাপাশিই রিপোর্টে বলা হয়েছে, বামেদের হাতে এখন তেমন কোনও পঞ্চায়েত বা পুরসভা নেই বলেই কাজেরও কোনও সুযোগ নেই, এমন ভেবে নিলে ভুল হবে। সরকারি প্রকল্প বা প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থতাকে হাতিয়ার করেও আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব।

বামেদের জনসমর্থন বিধানসভা ভোটে যে তলানিতে এসে ঠেকেছিল, সেই বাস্তব স্বীকার করেই আত্মসমীক্ষার কথা উঠে এসেছে সম্মেলনের রিপোর্টে। বামেদের সভা-মিছিলে এখনএও ভিড় হয় কিন্তু ভোট আসে না— এই বহুচর্চিত ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের কথাও বলা হয়েছে। রিপোর্টে ‘আটটি বিষয় যা বিশেষ নজর দাবি করে’ শীর্ষক অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে: ‘মিছিল সমাবেশগুলিতে উৎসাহব্যঞ্জক উপস্থিতির প্রতিফলন ভোটের ফলে পড়ছে না। এটার কী কারণ, লাগাতার মানুষের সঙ্গে থেকে তাঁদের সমর্থন আদায় করার ব্যর্থতা অথবা মানুষের ভোটের অধিকার প্রয়োগকে জোর করে কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে আমাদের বলিষ্ঠ প্রতিরোধী ভূমিকার অভাব— নির্দিষ্ট পরিস্থিতি অনুযায়ী কারণ চিহ্নিত করে আমাদের অগ্রসর হতে হবে’।

শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বা ভোটে গা-জোয়ারির অভিযোগ করে ক্ষান্ত থাকলেই যে চলবে না, প্রতিরোধে এগোতে হবে, রিপোর্টে রয়েছে সেই বার্তা। বুথ কমিটি তৈরির কাজ শুধু ভোটের সময়ের জন্য রেখে না দিয়ে সারা বছর বুথ স্তরে সক্রিয়তার ডাক দেওয়া হয়েছে।

CPM State Conference

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।