চিহ্নিত জায়গা। নিজস্ব চিত্র
সরকারি হাসপাতালের চৌহদ্দির মধ্যেই যেন কর্পোরেট হাসপাতাল! বছর দুয়েকের মধ্যে এমনই ন’তলা একটি হাসপাতাল গড়ে উঠতে চলেছে রাজ্যে চিকিৎসার উৎকর্ষ কেন্দ্র, এসএসকেএম চত্বরেই। যেখানে একই ছাদের নীচে মিলবে সব রকম চিকিৎসার পরিষেবা। কিন্তু প্রশ্ন হল, পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি নিয়মের ফাঁস এখানেও কোনও ক্ষেত্রে বাধা হবে কি?
স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, কর্পোরেট ধাঁচে পরিষেবা মিললেও নিয়ন্ত্রণ থাকবে সরকারের হাতেই। যে সব রোগী খরচ করে চিকিৎসা পরিষেবা পেতে চান, তাঁদের জন্য এই ব্যবস্থা। ধীরে ধীরে সমস্ত রূপরেখা তৈরি হবে। সূত্রের খবর, সরকারি হাসপাতালের নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি ধাঁচের চিকিৎসা পরিষেবা কেন্দ্র বানানো যায় কি না, তা নিয়ে উৎসাহ দেখিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরেই জায়গা চিহ্নিত করে স্বাস্থ্য দফতরে প্রস্তাব পাঠান কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার তারই প্রশাসনিক অনুমোদন মিলেছে। গোটা প্রকল্পের জন্য প্রায় ৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। পূর্ত দফতর দ্রুত দরপত্র ডাকবে বলেও খবর।
সরকারি হাসপাতালে বেসরকারি ধাঁচের সুবিধা পেতে চান অনেক রোগীই। তাঁদের জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে পে-কেবিন রয়েছে। এসএসকেএমে রয়েছে উডর্বান ব্লক। সেখানে খরচের বিনিময়ে বিলাসবহুল কেবিনে চিকিৎসা পান রোগীরা। তবে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং অস্ত্রোপচারের জন্য পিজি-র বিভিন্ন বিল্ডিংয়ে বা বিভাগে যেতে হয় তাঁদের।
নতুন প্রকল্পটির আপাতত নামকরণ হয়েছে ‘প্রাইভেট কেবিন বিল্ডিং’। স্বয়ংসম্পূর্ণ পরিষেবা ব্যবস্থা থাকবে সেখানে। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের উল্টো দিকে এসএসকেএমের গেট দিয়ে ঢুকেই বাঁ হাতের প্রায় ১১ কাঠা জমিতে গড়ে উঠবে ন’তলা বাড়ি। প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী একতলায় অ্যাডমিশন ও ডিসচার্জ ডেস্ক এবং চিকিৎসকদের বহির্বিভাগের কেবিন থাকবে। দোতলায় অপারেশন থিয়েটার, প্যাথলজি, রেডিয়োলজি পরীক্ষার ব্যবস্থা এবং আট শয্যার ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট থাকবে। তিন থেকে আটতলার প্রতিটি তলে ১৮-২০টি করে এক শয্যার কেবিন থাকবে। ন’তলায় থাকবে আটটি ভিআইপি কেবিন। অন্য একটি তলে মর্গ-সহ বিভিন্ন কাজের ব্যবস্থা থাকবে।
সূত্রের খবর, এসএসকেএমের চিকিৎসকেরাও ডিউটির পরে বা ছুটির দিন সেখানকার বহির্বিভাগে রোগী দেখতে পারবেন। তাঁকে ফি দেবেন রোগী। প্রশাসনের অন্দরের পর্যবেক্ষণ, সরকারি চিকিৎসকের পরিষেবা বাইরে পেতে গিয়ে অনেক সময়েই খরচ সামলাতে পারেন না কিছু রোগী। এখানে তা সাধ্যের মধ্যেই থাকবে। ওই ভবনে ২৪ ঘণ্টা পরিষেবার জন্য নির্দিষ্ট মেডিক্যাল অফিসার, চিকিৎসক ও নার্সদের নিয়োগ করা হবে। এসএসকেএমের শল্য বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকারের কথায়, ‘‘ভিন্ রাজ্যের কিছু হাসপাতালে এমন মডেল সাফল্যের সঙ্গে চলছে। কিছু মানুষ এখনও উন্নত পরিষেবার জন্য সরকারকে খরচ দিতে রাজি। তাই সরকার নির্ধারিত মূল্যে যে পরিষেবা মিলবে, তা-ও উন্নত হবে।’’
সরকারি চৌহদ্দিতে সীমিত খরচে পছন্দের চিকিৎসকের পরিষেবা পাওয়ার এই পদক্ষেপ ভাল বলে মনে করেন এক বেসরকারি হাসপাতালের ক্যানসার শল্য চিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এতে রোগী এবং চিকিৎসকের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বজায় থাকবে। কারণ, সরকারি চিকিৎসক বেশি সময় ওই হাসপাতালেই থাকছেন। ফলে সাধারণ শয্যার রোগীকে যেমন তিনি দেখছেন, তেমনই কর্পোরেট ধাঁচের বিভাগে তাঁর অধীন রোগীর প্রতিও নজর রাখতে পারবেন। রোগীরও সুবিধা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy