Advertisement
১৪ জানুয়ারি ২০২৫
Saline Controversy

স্যালাইন-কাণ্ডে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ, গাফিলতি প্রমাণিত হলে কড়া পদক্ষেপ: মুখ্যসচিব

নিম্ন মানের স্যালাইন দেওয়ার ঘটনায় গাফিলতি প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। শুধু তা-ই নয়, স্বাস্থ্য দফতরের তদন্ত কমিটির পাশাপাশি স্যালাইন-কাণ্ড নিয়ে তদন্ত করবে সিআইডিও।

State government ordet to CID probe on Saline case

(বাঁ দিকে) এসএসকেএমে প্রসূতিকে আনার সময়ের ছবি এবং মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৫৭
Share: Save:

মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের প্রসূতিদের নিম্নমানের স্যালাইন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনা খতিয়ে দেখে প্রাথমিক রিপোর্ট দিল স্বাস্থ্য ভবনের তদন্তকারী কমিটি। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানান, এই ঘটনায় গাফিলতি প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। শুধু তা-ই নয়, স্বাস্থ্য দফতরের তদন্ত কমিটির পাশাপাশি স্যালাইন-কাণ্ড নিয়ে তদন্ত করবে সিআইডিও। সোমবারের সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিবের পাশেই ছিলেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম।

মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে শুক্রবার এক প্রসূতির মৃত্যুর পরেই তাঁকে দেওয়া রিঙ্গার্স ল্যাকটেট (আরএল) স্যালাইনের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এর পরেই স্বাস্থ্য দফতর কড়া নির্দেশিকা জারি করে। তার পরই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ঠিক কী ঘটেছিল, কার গাফিলতিতে এক প্রসূতির মৃত্যু হল, আদৌ আরএল স্যালাইনের ব্যবহারই এর জন্য দায়ী কি না ইত্যাদি খতিয়ে দেখতে ১৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য দফতর। তারা মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে বেশ কিছু ওযুধ এবং স্যালাইনের নমুনা সংগ্রহ করে। কথা বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও। পাশাপাশি, মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ মৌসুমী নন্দী এবং স্ত্রীরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধানকে এসএসকেএম হাসপাতালে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করে তদন্ত কমিটি।

স্বাস্থ্য দফতরের তদন্ত কমিটির প্রাথমিক রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘আমরা কোনও রকম গাফিলতি বরদাস্ত করব না। পরিষ্কার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে বিস্তারিত তদন্তের কথা বলেছি। সেই তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ।’’ তিনি জানান, বিস্তারিত রিপোর্টে যাঁরাই দোষী প্রমাণিত হবেন, তাঁদের বিরুদ্ধেই কড়া পদক্ষেপ করা হবে। ছাড় পাবেন না কেউই।

প্রাথমিক রিপোর্টে কী আছে? মুখ্যসচিব জানান, নিয়ম হচ্ছে অস্ত্রোপচার হলে সব সময় এক জন সিনিয়র চিকিৎসকের উপস্থিতিতে জুনিয়র ডাক্তারেরা সেই কাজ করে থাকেন। কিন্তু মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের প্রসূতিদের চিকিৎসার সময় সেই নিয়ম মানা হয়নি। তবে আরও তদন্ত দরকার। তা চলছে। মনোজ আরও বলেন, ‘‘আমরা মনে করি, এটা কোনও ভাবেই এসওপি মেনে হয়নি।’’ তবে তদন্তের বিস্তারিত রিপোর্ট পাওয়ার পরেই উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। মুখ্যসচিবের কথায়, ‘‘স্যালাইনের পর পরই অক্সিটসিন দেওয়া হয়েছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’

যে সংস্থার উৎপাদিত স্যালাইন ঘিরে বিতর্ক, তাদের উৎপাদন বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব। গত ৭ তারিখ থেকে ওই সংস্থা উৎপাদন বন্ধ রেখেছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব। এখন অন্য সংস্থা সরকারি হাসপাতালে স্যালাইন সরবরাহ করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘স্যালাইনের সমস্ত ব্যাচের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট আসতে ন্যূনতম ১৪ দিন লাগবে।’’

উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়, যে সংস্থার তৈরি স্যালাইন আতশকাচের নীচে রয়েছে, তাদের তৈরি সব স্যালাইন নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে কোনও সংস্থার নাম উল্লেখ করা না হলেও সন্দেহের তির ছিল পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থার আরএল স্যালাইনের দিকেই। অভিযোগ, এই স্যালাইন আগেই নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তবে তার পরও কী ভাবে তা ব্যবহার করা হল প্রসূতিদের শরীরে? এই স্যালাইনের ‘বিষক্রিয়া’ থেকেই প্রসূতিদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়নি তো? এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে স্বাস্থ্য দফতর তদন্ত কমিটি গঠন করে।

অন্য বিষয়গুলি:

Saline Controversy State Government CID Investigation Manoj Pant
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy