Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Nabanna

Nabanna: কেন্দ্রীয় বরাদ্দে ভাটা, অর্থ জোগান নিয়ে চিন্তা, নবান্নের মাথাব্যথা প্রকল্প

প্রবল আর্থিক টানাটানির মধ্যে চালু রয়েছে বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্প।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ ০৫:৩৭
Share: Save:

পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ টাকায় ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচির দাবিদাওয়া মেটানোর ব্যাপারে নবান্নে পরিকল্পনা চলছিল বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। কিন্তু বাস্তবে কেন্দ্রীয় বরাদ্দের যা হাল, তাতে কঠিন লড়াইয়ের মুখে পড়ে গিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।

প্রবল আর্থিক টানাটানির মধ্যে চালু রয়েছে বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্প। মানুষের অভাব-অভিযোগ ও চাহিদা মেটাতে চলছে ‘দুয়ারে সরকার’, ‘পাড়ায় সমাধান’-এর মতো কর্মসূচি। পাড়ায় সমাধান কর্মসূচিতে মানুষের চাহিদা পূরণের টাকা জোগাড় করা সরকারের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের যে-বরাদ্দের সাহায্যে পাড়ায় সমাধানের চাহিদা মেটানোর কথা ভাবা হচ্ছিল, সেই বরাদ্দই এখন সরকারের লক্ষ্যপূরণের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছেন আমলাদের অনেকেই।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, চলতি আর্থিক বছরে (২০২১-২২) রাজ্যকে দেওয়া পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের জেলাভিত্তিক বরাদ্দ গত আর্থিক বছরের তুলনায় কমেছে গড়ে ২০-৩০% হারে। তাই পূর্ব প্রস্তাবিত কাজকর্ম শেষ করে পড়ে থাকা টাকায় পাড়ায় সমাধানের খরচ কী ভাবে চলবে, তা নিয়ে চলছে জল্পনা।

প্রশাসনিক ব্যাখ্যা, প্রাপ্ত টাকার (‘টায়েড ফান্ড’) ৬০% খরচ হয় পানীয় জল, নিকাশি ব্যবস্থা, সেচ, শৌচালয়ের মতো পরিকাঠামো খাতে। এই সব ক্ষেত্র পরিবর্তনশীল নয়। বাকি (‘আন-টায়েড ফান্ড’) ৪০% ব্যয় করার কথা রাস্তাঘাট তৈরি ও মেরামতি, কালভার্ট, ছোট সেতু ইত্যাদি তৈরিতে। আন-টায়েড ফান্ডের টাকা আরও নানা ভাবে ব্যবহার করা যায়। তবে তার জন্য অতিরিক্ত (সাপ্লিমেন্টারি) পরিকল্পনা পাঠাতে হয়। পাড়ায় সমাধানের কাজগুলিও প্রধানত পরিকাঠামোকেন্দ্রিক। তা অর্থ কমিশনের আন-টায়েড বরাদ্দের কাজকর্মের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তাই রাজ্যের ভাবনা ছিল, পাড়ায়
সমাধানে জমা পড়া কাজকর্মের
দাবি অর্থ কমিশনের আন-টায়েড বরাদ্দের টাকায় মিটিয়ে দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী জেলা প্রশাসনগুলিকে প্রস্তুতির নির্দেশও দেওয়া হয়।
কিন্তু অর্থ কমিশনের কাছ থেকে এক-একটি জেলা এ বার যে-বরাদ্দ পেয়েছে, তাতে এই সব কাজের খরচ কুলোবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ
দেখা দিয়েছে।

সাধারণত, দু’টি কিস্তিতে বরাদ্দ দেয় অর্থ কমিশন। তার প্রথম কিস্তিতে টায়েড এবং আন-টায়েড বরাদ্দ মিলিয়ে রাজ্যের জেলা পরিষদ এবং পঞ্চায়েত সমিতিগুলি প্রায় ২৪৪.৫৭ কোটি টাকা পেয়েছে। তার মধ্যে টায়েড খাতে প্রায় ১৪৬.৭৪ কোটি এবং আন-টায়েড খাতে ৯৭.৮৩ কোটি টাকা আছে। দু’টি ক্ষেত্রেই সব চেয়ে বেশি বরাদ্দ পেয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা।

বিভিন্ন জেলার প্রশাসনিক কর্তারা জানান, দু’টি খাতে প্রথম কিস্তির যে-টাকা তাঁরা পেয়েছেন, গত আর্থিক বছরের প্রথম কিস্তিতে তার পরিমাণ ৩০-৪০% বেশি ছিল। তাঁদেরই এক জন বলেন, “আগেকার পাড়ায় সমাধান কর্মসূচিগুলিতে বাড়তি খরচ হয়েছে। ২০২০-২১ এবং ২০২১-২২ আর্থিক বছরে অর্থ কমিশনের
পাঠানো বরাদ্দ টাকা থেকে সেই বাড়তি খরচের রূপরেখা তৈরির কথা ছিল। ২০২২-২৩ আর্থিক বছরের বরাদ্দ কাজে লাগানোর জন্য
আগামী জানুয়ারিতে পাড়ায় সমাধানে প্রস্তাবিত কাজের পরিকল্পনা সে-ভাবেই করতে বলা হয়েছিল জেলাশাসকদের। সাধারণত, অর্থ কমিশনের কাছ থেকে প্রথম কিস্তিতে যে-টাকা আসে, পরের কিস্তিতেও প্রায় একই বরাদ্দ মেলে। ফলে ধরে নেওয়া যায়, এ বছর আর বরাদ্দ বাড়ার আশা তেমন নেই।” এক জেলা-কর্তার কথায়, “স্বাস্থ্য খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দের কারণে এবার কম টাকা এসেছে।”

আধিকারিকদের একাংশ অবশ্য জানাচ্ছেন, সাম্প্রতিক বরাদ্দ এসেছে শুধু জেলা পর্ষদ এবং পঞ্চায়েত সমিতিগুলির জন্য। গ্রাম পঞ্চায়েতের বরাদ্দ আলাদা ভাবে আসার কথা।
তা এলে অবশ্য পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা যেতে পারে। আবার জানুয়ারিতে দুয়ারে সরকারের সঙ্গে পাড়ায় সমাধানের যে-শিবির হবে, তাতে জমা পড়া কাজের দাবিদাওয়া বুঝে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের জন্য অর্থ কমিশনের বরাদ্দ পেতে কাজের তালিকা তৈরি করা হবে। ফলে পূর্ব প্রস্তাবিত কাজগুলির জন্য বরাদ্দ পেতে সমস্যা হবে না বলেই আশা।

অন্য বিষয়গুলি:

Nabanna Parae Samadhan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy