প্রতীকী ছবি।
প্রাথমিক শিক্ষক বাছাইয়ের পরীক্ষার (টেট) তিন দিন আগে, বৃহস্পতিবার ফের কলকাতা হাইকোর্টের কড়া মন্তব্যের মুখে পড়ল রাজ্য সরকার। শিক্ষক নিয়োগে রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ জানান, গত তিন বছর যে নিয়োগ হয়নি, সেটা সরকারেরই ব্যর্থতা।
সাত বছর আগে, ২০১৪-য় পরীক্ষা দিয়ে পাশ করা প্রার্থীদের অনেকে এখনও ইন্টারভিউয়ে ডাক পাননি। তাঁরা ছোটাছুটি করছেন সল্টলেকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দফতরে। এর মধ্যে ২০১৭ সালে টেটের বিজ্ঞপ্তি দেয় সরকার। তার ভিত্তিতে ৩১ জানুয়ারি, রবিবার অন্তত আড়াই লক্ষ প্রার্থী টেট দিতে চলেছেন।
সেই পরীক্ষার প্রস্তুতি পর্বে এ দিন প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে রাজ্যকে নতুন নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। কিছু যোগ্য প্রার্থীকে ওই পদে নিয়োগের ইন্টারভিউয়ে বসার সুযোগ দিয়েছে তারা। গত তিন বছরে কিছু প্রশিক্ষিত প্রার্থী ইন্টারভিউয়ে বসতে চেয়ে আদালতে আর্জি জানান। বিচারপতি ভরদ্বাজের নির্দেশ, আজ, শুক্রবার মামলাকারী প্রার্থীরা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদে অফলাইনে আবেদনপত্র জমা দেবেন। তাঁদের অ্যাডমিট কার্ড দিতে হবে পর্ষদকে। রবিবার তাঁরা পরীক্ষায় বসতে পারবেন। যাঁরা মামলা করেছেন, শুধু তাঁদের ক্ষেত্রেই এই রায় প্রযোজ্য হবে। মামলাকারী প্রার্থীর সংখ্যা অন্তত দু’হাজার।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাসখানেক আগে অফলাইনে ওই টেটের কথা ঘোষণা করেন। কিছু প্রার্থীর অভিযোগ, ২০১৭-এর বিজ্ঞপ্তির আগে ২০১৪-র টেট পাশ করা প্রার্থীদের অনেকে ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন। প্রাথমিক স্কুলে পড়ানোর প্রশিক্ষণ না-থাকায় তাঁদের অনেকেই নিয়োগপত্র পাননি। তাঁদের অনেকে পরে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তাঁদের অনলাইন ভেরিফিকেশন বা তথ্য যাচাইও হয়েছিল। কিন্তু নানা কারণে যাঁরা সেই যাচাই প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে পারেননি, তাঁরা ৯-১০ জানুযারি অফলাইনে তথ্য জমা দিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা ইন্টারভিউয়ে ডাক পাননি। তার মধ্যেই আবার এই পরীক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কোভিড আবহে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, দূরত্ব বজায় রেখেই এই পরীক্ষা হবে। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর মাস্ক পরে আসা বাধ্যতামূলক।’’
পর্ষদ সূত্রের খবর, প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে জেলার স্বাস্থ্যকর্মীরা থাকছেন। থাকছে থার্মাল চেকিংয়ের ব্যবস্থাও। কোনও প্রার্থীর শরীরে তাপমাত্রা
বেশি হলে তিনি পরীক্ষা দেবেন আলাদা ঘরে। প্রতিটি কেন্দ্রেই ‘আইসোলেশন রুম’-এর বন্দোবস্ত করা হয়েছে। এক পর্ষদকর্তা জানান, সব পরীক্ষা কেন্দ্রই স্যানিটাইজ় বা জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। স্যানিটাইজ়ারও রাখা হবে পরীক্ষার্থীদের জন্য। একটি
বেঞ্চে দু’জনের বেশি পরীক্ষার্থী বসবেন না।
রবিবার পরীক্ষা শুরু বেলা ১টায়। ১৫০ নম্বরের পরীক্ষা শেষ হবে সাড়ে ৩টেয়। প্রার্থীদের হলে ঢুকতে হবে পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে। ব্যাগ বা ইলেক্ট্রিক্যাল গ্যাজেট নিয়ে পরীক্ষার হলে ঢোকা যাবে না। সঙ্গে শুধু একটি কালো কালির বল পয়েন্ট পেন রাখা যাবে। পরীক্ষা চলাকালীন প্রার্থীদের পাশাপাশি পরীক্ষা কেন্দ্রের আধিকারিক-কর্মীদেরও মোবাইল ফোন রাখতে হবে লকারে।
টেটের উদ্যোগ পর্বেও আইনি লড়াই নিয়ে টানাপড়েন অব্যাহত। শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বার বার আইনি লড়াইয়ে পরাস্ত হয়েছে সরকার। উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগে গরমিলের অভিযোগে প্যানেল বাতিল করেছে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। তা নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা চলছে। প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়েও এর আগে হোঁচট খেয়েছিল রাজ্য। আদালতের নির্দেশ মেনেই এক দল মামলাকারীকে অফলাইনে ফর্ম পূরণের সুযোগ দিতে হয়েছিল। অনেক প্রার্থীর প্রশ্ন, এত বছর পরে নিয়োগ হচ্ছে। তার পরেও সরকারি স্তরে এত জটিলতা থাকবে কেন? এই জটিলতার ফলে প্রার্থীদের অকারণ হেনস্থার শিকারও হতে হচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy