Advertisement
E-Paper

রাজ্যপাল তথা আচার্যকে উপেক্ষা করেই যাদবপুরে হয়ে গেল বার্ষিক সমাবর্তন

রাজভবন বিবৃতি দিয়ে জানাল, উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে তদন্ত কমিটি গড়ে তোলা হবে। পড়ুয়াদের থেকে যে সমাবর্তনের জন্য যে টাকা নেওয়া হয়েছে, তা উপাচার্যের বেতন থেকে কেটে নেওয়া হবে।

image of vc

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে সমাবর্তন। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:২৬
Share
Save

বুদ্ধদেব সাউ উপাচার্য হয়ে নিজের কর্তব্য পালন করতে পারবেন। ২৪ ডিসেম্বর, রবিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন সম্পন্ন করানোর জন্য বুদ্ধদেবকে বিশেষ ক্ষমতা দেয় রাজ্য শিক্ষা দফতর। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোর্টের বৈঠকের পর শুরু হয় সমাবর্তন। নির্ধারিত সময়ের কিছুটা পরেই শুরু হয় অনুষ্ঠান। সেখানে যদিও পৌরোহিত্য করেন সহউপাচার্য অমিতাভ দত্ত। তিনি পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেন শংসাপত্র। পাশে বসে ছিলেন সদ্য অপসারিত উপাচার্য।

রবিবার সকালে কোর্টের বৈঠকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন জুটার প্রস্তাব, সহ-উপাচার্যকে সামনে রেখে সমাবর্তন করে দেওয়া হোক। এ দিকে রাজভবনের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হল, উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে তদন্ত কমিটি গড়ে তোলা হবে। পড়ুয়াদের থেকে সমাবর্তনের জন্য যে টাকা নেওয়া হয়েছে, তা উপাচার্য এবং অন্য দায়িত্বপ্রাপ্তদের বেতন থেকে কেটে নেওয়া হবে। উপাচার্যের অনুমতি ছাড়াই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে হচ্ছে সমাবর্তন। সেই কথা জানিয়ে সেখানে উপস্থিত থাকছেন না ইউজিসির চেয়ারম্যান।

রবিবার সমাবর্তনে পড়ুয়াদের হাতে যে শংসাপত্র তুলে দেওয়া হচ্ছে, তাতে উপাচার্য হিসাবে বুদ্ধদেবের সই রয়েছে। এ দিকে শনিবারই তাঁকে অপসারণ করা হয়েছে রাজভবনের তরফে। এই পরিস্থিতিতে শংসাপত্র পরে বদলও করতে হতে পারে।

সমাবর্তন নিয়ে জটের মাঝেই রাজভবনের তরফে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য পদ থেকে শনিবার রাতে সরানো হয় বুদ্ধদেবকে। তার পরেই প্রশ্ন ওঠে, রবিবার কি আদৌ সমাবর্তন হবে? এর মধ্যেই সমাবর্তন যাতে হয়, সে জন্য উপাচার্যকে বিশেষ ক্ষমতা দিল রাজ্য শিক্ষা দফতর। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হল, রবিবারের জন্যই এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সেখানে আরও জানানো হল, ২০২৩ সালের ১৭ অগস্ট বুদ্ধদেবকে উপাচার্য পদে বসানো হয়েছিল। উপাচার্যের কর্তব্য পালনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ২৩ ডিসেম্বর, শনিবার আচমকা সেই ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়। অথচ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য একক ভাবে এ ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। তার পরেই ২৪ ডিসেম্বর সমাবর্তন করানোর জন্য বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয় বুদ্ধদেবকে।

এ দিকে রাজভবনের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, বু্দ্ধদেবের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলি রয়েছে, সেগুলি নিয়ে তদন্ত করা হবে। পড়ুয়ারা আচার্যের দফতরে অভিযোগ করেছেন যে, সমাবর্তনের নামে তাঁদের থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। তাঁদের গরিব বাবা-মায়ের রোজগার করা টাকা তাঁরা দিতে বাধ্য হয়েছেন এই সমাবর্তনের জন্য, যা কি না বেআইনি। এই টাকা উপাচার্য এবং অন্য দায়িত্বপ্রাপ্তদের বেতন থেকে কেটে নেওয়া হবে।

শনিবারই বুদ্ধদেব একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করা হোক। দেখা হোক, কে দুর্নীতি করেছে। আর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রীতি বলছে, ২৪ ডিসেম্বর সমাবর্তনের জন্য আচার্যের অনুমতির প্রয়োজন হয় না। ওই দিন ছাড়া অন্য দিনে সমাবর্তন করতে গেলে প্রয়োজন আচার্যের অনুমতি।

প্রতি বছরের ২৪ ডিসেম্বর যাদবপুরে সমাবর্তন হয়। নীতি মেনে সমাবর্তনের জন্য যাদবপুরে প্রতি বছর কোর্টের বৈঠক করতে হয়। তার জন্য প্রয়োজন হয় আচার্য তথা রাজ্যপালের অনুমতি। কিন্তু এ বছর আইনি জটিলতার কারণ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্টের বৈঠকে অনুমতি দেননি আচার্য তথা রাজ্যপাল। তার পরেই সমাবর্তন হবে কি না, তা নিয়ে তৈরি হয় অনিশ্চয়তা। যদিও নির্ধারিত দিনেই সমাবর্তনের কথা জানিয়ে দেন কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় রাজ্য শিক্ষা দফতর। এর মাঝেই রাজভবনের তরফে সরানো হয় উপাচার্যকে।

রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছিল, যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্ট নন রাজ্যপাল। আর সেই কারণেই তিনি সমাবর্তন নিয়ে বৈঠকের অনুমতি দেননি। প্রথম বর্ষের ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার পর রাজ্যপালের নির্দেশ ছিল, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে দোষীদের। কিন্তু সেই নির্দেশ এখনও কার্যকর হয়নি। বেকসুর খালাস না পাওয়া পর্যন্ত অভিযুক্তদের শুধু মাত্র বিশ্ববিদ্যালয় এবং হস্টেলে ঢোকার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আর কোনও পদক্ষেপ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে করা হয়নি। আর সেই কারণেই সমাবর্তন অনুষ্ঠান নিয়ে রাজ্যপাল বোস কোনও সিদ্ধান্ত জানাননি বলে রাজভবন সূত্রে খবর। রাজভবন সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছিল, যত ক্ষণ না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেবেন, তত দিন কোর্ট বৈঠকে বসার অনুমতি দেবেন না রাজ্যপাল। তাঁর অনুমতি ছাড়াই সমাবর্তনের আয়োজন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত রবিবারই হচ্ছে সেই সমাবর্তন।

Jadavpur University Convocation VC Buddhadeb Sau Governor Governor CV Ananda Bose

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।