Advertisement
২১ নভেম্বর ২০২৪
PMAY

আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ, টাকা নয়ছয়ের কথা হাই কোর্টে মেনে নিল রাজ্য

রাজ্য এই মামলায় যে রিপোর্ট দিয়েছে তা দেখে বিচারপতি কপূরের পর্যবেক্ষণ, এ ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত ভাবে জালিয়াতি হয়েছে। এই ঘটনায় রাজ্যের পঞ্চায়েতসচিবকে ফৌজদারি পদক্ষেপের নির্দেশ দেন বিচারপতি।

টাকা নয়ছয়ের কথা কলকাতা হাই কোর্টে কার্যত মেনে নিল রাজ্য।

টাকা নয়ছয়ের কথা কলকাতা হাই কোর্টে কার্যত মেনে নিল রাজ্য। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪ ০৭:৫৩
Share: Save:

আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ বারবার উঠেছে রাজ্যে। তা নিয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্যের টানাপড়েনও চলেছে। এ বার এমনই একটি মামলায় টাকা নয়ছয়ের কথা কলকাতা হাই কোর্টে কার্যত মেনে নিল রাজ্য। ক্যানিং-১ ব্লকের ইটখোলা পঞ্চায়েতের ওই মামলায় বৃহস্পতিবার বিচারপতি রবি কৃষণ কপূর সংশ্লিষ্ট বিডিও ও পঞ্চায়েত প্রধানের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য তলব করেছেন। রাজ্য এই মামলায় যে রিপোর্ট দিয়েছে তা দেখে বিচারপতি কপূরের পর্যবেক্ষণ, এ ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত ভাবে জালিয়াতি হয়েছে। এই ঘটনায় রাজ্যের পঞ্চায়েতসচিবকে ফৌজদারি পদক্ষেপের নির্দেশ দেন বিচারপতি।

ইটখোলা পঞ্চায়েতের হেড়োভাঙা গ্রামের পাঁচ জন বাসিন্দা আবাস যোজনার টাকা না পেয়ে এই মামলা করেছিলেন। তাঁদের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত এবং সন্দীপ সূত্রধর জানান, ২০২১ সালে মামলাকারীরা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা পাওয়ার জন্য পঞ্চায়েত অফিসে সব নথি জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু টাকা ঢোকেনি। অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধান এবং আরও কয়েক জন সদস্য নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে ওই পাঁচ জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বদলে অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়েছেন।

২০২৩ সালে মামলা দায়েরের পরে এ ব্যাপারে ক্যানিং ব্লক প্রশাসন তিন জন সরকারি আধিকারিকের নেতৃত্বে বিষয়টি অনুসন্ধান করে। আদালতের খবর, সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে যে আক্রম মোল্লা এবং সেলিম মোল্লা নামে দুই আবেদনকারীর আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে গিয়েছে। সিরাজুল মোল্লা, সামসুল আলম মোল্লা এবং মাবুয়ালি মোল্লা নামে বাকি তিন আবেদনকারীর তিনটি কিস্তির টাকাই অন্য অ্যাকাউন্টে গিয়েছে। অনুসন্ধান রিপোর্টে দাবি, প্রথম ক্ষেত্রে বিষয়টি জানার পরেই সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের সচিব কিস্তির টাকা পাঠানো বন্ধ করেছেন। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে টাকা বন্ধের পাশাপাশি, ওই অন্য অ্যাকাউন্টের মালিকদের টাকা ফেরত দিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে ওই অ্যাকাউন্টের মালিক কারা এবং কী ভাবে তাঁদের অ্যাকাউন্ট আবাস যোজনার তালিকায় ঢুকল সে ব্যাপারে এখনও ধোঁয়াশা আছে বলেই দাবি করছেন মামলাকারীদের আইনজীবীরা।

এ নিয়ে বাঁকুড়ার তালড্যাংরায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এ দিন বলেছেন, “কোর্টও ধরে ফেলেছে, আবাস যোজনার নামে দুর্নীতি চলছে। আর তৃণমূলের কাটমানি তোলার ব্যবসা চলছে। চোর ধরা পড়বে আশা করি।” সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মতে, “স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের ট্যাবের টাকা ভিন্ রাজ্যের অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। আবাস যোজনায় অভিযোগকারী পাঁচ জনেরই ঘরের টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে গিয়েছে। কোর্টে স্বীকারোক্তি দিয়েছে সরকার। প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায়ের দাবি, “আদালতের রায়ের পরেও তৃণমূলের লজ্জা হবে না! তৃণমূলের নেতারা তালিকা তৈরি করেন আর বিডিও শুধু সিল মারেন!”

তৃণমূলের কুণাল ঘোষ অবশ্য বলেন, “লক্ষ লক্ষ মানুষকে সরকারি প্রকল্পের আওতায় আনার কাজ। কোথাও কোনও ফাঁক থেকে গেলে প্রশাসন নিশ্চয়ই দেখবে। কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই কর্মযজ্ঞের আঙুল তোলা জনস্বার্থ-বিরোধী।”

অন্য বিষয়গুলি:

PMAY Calcutta High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy