E-Paper

বিচার চেয়ে গর্জে উঠল মিছিল

এ দিন এসএসসি অফিসের সামনে জমায়েত করা যাবে না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল পুলিশ।

চাকরিহারা শিক্ষকদের মিছিল। করুণাময়ীতে।

চাকরিহারা শিক্ষকদের মিছিল। করুণাময়ীতে। ছবি সুদীপ্ত ভৌমিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:২৪
Share
Save

ঘড়ির কাঁটায় বেলা ১১টা। সল্টলেকের করুণাময়ীতে শুরু হয়েছে চাকরিহারা শিক্ষকদের জমায়েত। তাঁরা জানান, শুধু কলকাতা বা কাছের নয়, দূরের নানা জেলার অনেক শিক্ষকও শুক্রবার ছিলেন বিকাশ ভবনের সামনে।

ঠিক ১২টায় মিছিল স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) অফিসের দিকে এগোতে শুরু করে। স্ত্রী ও তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে হেঁটে চলা নদিয়ার শিক্ষক মুক্তিসাধন হালদার বললেন, “আমার ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে। শরীর ভাল নেই। তা সত্ত্বেও মিছিলে এসেছি। মেয়ে ছোট, বাড়িতে কোথায় রাখব? তাই ওকে নিয়ে এসেছি। কিছু মানুষের চুরির কারণে আমাদের চাকরি গিয়েছে, কিছুতেই মানতে পারছি না। ঋণের কিস্তি মেটাতে হচ্ছে। আমার চাকরি যাওয়ার পরে স্ত্রী ভীষণ চাপে রয়েছে।”

মিছিল যত এগিয়েছে, জোরালো হয়েছে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান। মিছিলে থাকা এসএসসি-র দক্ষিণ-পূর্ব জ়োনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান দীপক মজুমদার বলেন, “ওএমআর শিটের মিরর ইমেজ অবশ্যই প্রকাশ করা যায়। এসএসসি সেটা কেন করছে না, তার জবাব চাকরিহারাদের দিতেই হবে।”

এ দিন এসএসসি অফিসের সামনে জমায়েত করা যাবে না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল পুলিশ। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে মোতায়েন ছিল বিশাল বাহিনী। চাকরিহারা শিক্ষকেরা অবশ্য ধস্তাধস্তিতে যাননি। পুলিশের সামনে রাস্তায় বসে স্লোগান দেন। কিছু শিক্ষককে মাইকে বলতে শোনা যায়, “কেউ বলপ্রয়োগ করবেন না। কোনও প্ররোচনায় পা দেবেন না। আপনারা শান্ত হয়ে বসে স্লোগান দিন।”

এ দিনের কর্মসূচিতে ওএমআর শিট নিয়ে হাজির ছিলেন চাকরিহারা নবম-দশমের কয়েক জন শিক্ষক। তাঁদের দাবি, স্বচ্ছ পথে উত্তীর্ণ হয়েছেন বোঝাতেই ওএমআর শিট এনেছেন। তাঁরা জানালেন, ২০১৬-র প্যানেলের নবম-দশম এবং গ্রুপ ‘সি’ ও গ্রুপ ‘ডি’-র সবার ওএমআর শিট ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছিল এসএসসি। শুধু একাদশ-দ্বাদশের কর্মরত শিক্ষকদের ওএমআর শিট প্রকাশ করা হয়নি।

এসএসসি অফিসের সামনে বিক্ষোভস্থলের কাছেই তিন শিক্ষক বসেছেন অনশনে। শুক্রবার অনশন মঞ্চে থাকা কিছু শিক্ষিকা কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের ফুল দেন। তাঁদের দাবি, পুলিশ যতই অত্যাচার করুক, এই ফুল সৌজন্যের। অনশনরত শিক্ষকদের পাশে দাঁড়িয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। মঞ্চের তরফে ভাস্কর ঘোষ বলেন, “আমাদের মঞ্চেরও কয়েক জন যোগ্য শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে। তাঁদের পাশে আছি।”

চাকরিহারা শিক্ষকেরা জানান, তাঁদের স্পষ্ট তিনটি দাবি। প্রথমত, অযোগ্য বলে চিহ্নিতদের চাকরি বাতিলের চিঠি দিতে হবে সরকারকে। দ্বিতীয়ত, যোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তৃতীয়ত, প্রকাশ করতে হবে ওএমআর শিটের মিরর ইমেজ। এ দিন চাকরিহারাদের অবস্থান-মঞ্চে যান প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানে অবশ্য তাঁকে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান শুনতে হয়। এই প্রসঙ্গে ব্রাত্য বলেন, “ওঁদের অভিনন্দন জানাব। ওঁরা বুঝেছেন, ওঁদের পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন।”

বিকেলে বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে বৈঠকে বসেন চাকরিহারা শিক্ষকদের ১৩ জন প্রতিনিধি। এর পরেও বিক্ষোভকারীরা অবস্থান থেকে সরেননি। রাস্তায় বসে থাকা এক শিক্ষক বললেন, “এই সরকার আমাদের রাস্তায় বসিয়েছে। আজ সারা দিন কিছু খাইনি। কিন্তু এখন সে সব ভাবছি না। আমরা মরিয়া।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Karunamoyee

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।