পার্থ এবং কুন্তল— দু’জনেই রাজ্যের স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত। — ফাইল চিত্র।
একই জেলে থাকছেন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষ। সেখানকার কয়েদিদের মধ্যে যে রোজ দেখা হয়, তা নয়। জেলের সেলের সামনে এক টুকরো ছোট্ট লন। সেখানে বাঁধাধরা সময়ে ঘোরাফেরা করতে পারেন বন্দিরা। সবাই একই সময়ে থাকলে ক্বচিৎ-কদাচিৎ দেখা সাক্ষাৎ হয়েও যায়। গত পরশু অর্থাৎ রবিবার তেমনই দেখা হয়ে গেল পার্থ-কুন্তলের। বাকি বন্দিদের ভিড়ের মাঝেই হয়ে গেল একপ্রস্ত কথাবার্তাও।
প্রেসিডেন্সি জেলের সেল ব্লকের বাসিন্দা পার্থ। জেলের ভাষায় এই সেল ব্লককে বলা হয় পয়লা বাইশ। মোট ২২টি সেল রয়েছে এই ব্লকে। তাই ওই নাম। পার্থ গত বেশ কয়েক মাস ধরে রয়েছেন এক নম্বর সেলে। কুন্তল গত বৃহস্পতিবার থাকতে শুরু করেছেন এই ‘পয়লা বাইশ’-এরই বাইশ নম্বর ঘরটিতে। মঙ্গলবার তাঁরা দু’জনেই নেমেছিলেন পয়লা বাইশের লাগোয়া লনটিতে। ছিলেন অন্যান্য বন্দিও। জেল সূত্রে খবর, কুন্তলকে সেখানে দেখতে পেয়েই প্রশ্ন ছুড়ে দেন পার্থ। বলেন, ‘‘এই, তুমি আমাকে চেনো? তুমি আমার নামটাই নিলে?’’ কুন্তল সেই প্রশ্ন শোনেন এবং জবাবও দেন। তবে সেই জবাব আসে মিনমিনে স্বরে। বন্দিরা শুনতে পান, কুন্তল খুব চাপা স্বরে বলছেন ‘‘আলাপ নেই।’’ তার পর অবশ্য চুপ করেই থাকেন।
পার্থ এবং কুন্তল— দু’জনেই রাজ্যের স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত। তবে দু’জনের পদমর্যাদায় আকাশ-পাতাল পার্থক্য। পার্থ রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। গ্রেফতার হওয়ার আগে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রীও ছিলেন। আবার দলের সাংগঠনিক স্তরেও তাঁর পদ ছিল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরেই। পার্থ ছিলেন তৃণমূলের মহাসচিব। সেখানে কুন্তল একটি জেলার দায়িত্বে থাকা তৃণমূল যুবনেতা। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বিশেষত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেকনজরে থাকা যুবনেতা হলেও বাস্তবে দলের মহাসচিবের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ পরিচয় থাকতে হবে তার কোনও অর্থ নেই। ইডির কাছে কুন্তলও এমনই দাবি করেছিলেন বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর। যদিও কুন্তলের রিম্যান্ড পেপারে ইডি লিখেছিল, বেআইনি নিয়োগের জন্য যে অর্থ চাকরিপ্রার্থীদের থেকে সংগ্রহ করেছিলেন কুন্তল, তা গিয়েছে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁর সহযোগীদের হাতেও। সেই সব রিপোর্টের খবর সংবাদপত্র বাহিত হয়েই সম্ভবত পৌঁছেছিল পার্থের হাতে। তাই ওই প্রশ্ন।
কুন্তলের কাছে পার্থ জানতে চেয়েছেন, তিনি সত্যিই পার্থকে চেনেন কি না। তবে একই সঙ্গে প্রশ্ন করেছেন, ‘‘তুমি আমার নামই নিলে?’’ রাজনৈতিক মহলে এই প্রশ্ন ঘিরে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। কুন্তল অবশ্য ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলেই থাকবেন। অর্থাৎ আরও ১০ দিন এই পয়লা বাইশ ব্লকেই এক সঙ্গে থাকবেন। নীচের লনে আবার দু’জনের দেখা হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তা হলে কি এই কথোপকথনের বাকি অংশও এর পরে চলবে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy