আইনজীবী বলেন বলেন, চন্দনকে অভিযুক্ত করার আগে দেখতে হবে, তাঁর আদৌ চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা আছে কি না। ফাইল চিত্র।
তাঁর গ্রেফতারির দেরি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতিতে বাগদার চন্দন মণ্ডলকে অন্যতম ‘ঘুঁটি’ বলে দাবি করেছে সিবিআইও। কিন্তু চন্দনের পাল্টা প্রশ্ন, তাঁর মতো সাধারণ মানুষের কি আদৌ সরকারি চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা আছে? মঙ্গলবার সিবিআইয়ের গ্রেফতারির আবেদনের বিরুদ্ধে নিজের জামিন চেয়ে আদালতে চন্দনের যুক্তি, ‘‘আমি সামান্য চাষবাস করি, একটা কোচিং সেন্টারও আছে। চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়ার ক্ষমতা কোথায়!’’
মঙ্গলবার নগর দায়রা এবং দেওয়ানি আদালতে শুনানি ছিল চন্দনের মামলার। চন্দনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করে সিবিআই বলেছিল, অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি বিক্রি করে যে টাকা তোলা হয়েছিল, তার মধ্যে ১৬ কোটি টাকার হদিস পাওয়া গিয়েছে চন্দনকে জেরা করে। তারই জবাবে চন্দনের তরফে আদালতে হাজির তাঁর আইনজীবী ওই পাল্টা যুক্তি দেন। তিনি বলেন, চন্দনকে অভিযুক্ত করার আগে দেখতে হবে, তাঁর আদৌ চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা আছে কি না। এমনকি, এ ব্যাপারে সিবিআই এক ‘প্রভাবশালী’র আনা অভিযোগে প্রভাবিত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন চন্দনের আইনজীবী।
‘প্রভাবশালী’র অভিযোগের কথা এর আগে অবশ্য চন্দনও বলেছেন। আদালতে এবং আদালতের বাইরে ‘উপেনবাবুর প্ল্যান সফল’ বলে মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছিল চন্দনকে। এই ‘উপেনবাবু’ বলতে চন্দন আসলে রাজ্যর প্রাক্তন মন্ত্রী উপেন বিশ্বাসকেই বোঝাতে চেয়েছেন বলে অনেকের ধারণা। কারণ, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেনের একটি ভিডিয়োতেই প্রথম প্রকাশ্যে আসে বাগদার চন্দন মণ্ডলের নাম। চন্দনের আসল নাম না করে তাঁকে ‘সৎ রঞ্জন’ বলে অভিহিত করেছিলেন উপেন। একই সঙ্গে তাঁকে কটাক্ষ করে উপেন বলেছিলেন, চাকরি পাইয়ে দিতে না পারলে তিনি নাকি সুদ-সহ অর্থ ফিরিয়ে দিতেন। চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া চাকরি বিক্রির টাকা সেই রঞ্জন বাগদা থেকে কলকাতায় প্রভাবশালীদের কাছে পৌঁছে দিতেন বলেও দাবি করেছিলেন উপেন। মঙ্গলবার আদালতেও নাম না করে ‘প্রভাবশালী’ বলে চন্দনের আইনজীবী সেই উপেনকেই ইঙ্গিত করেছেন বলে অনুমান। চন্দনের আইনজীবী মঙ্গলবার বলেছেন, ‘‘যিনি চন্দনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তিনি নিজে ৩৭ জনের হয়ে সুপারিশ করেছিলেন। নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতেই আমার মক্কেলকে ফাঁসিয়েছেন।’’
চন্দনকে ‘পরিস্থিতির শিকার’ বলে বর্ণনা করে তাঁর তদন্তে সহযোগিতা করার যুক্তিও দিয়েছেন তাঁর আইনজীবী। জামিনের পক্ষে তিনি বলেন, চন্দনকে যত বার ডেকে পাঠানো হয়েছে, উনি এসেছেন। যদি ধরে নিই চাকরি দিয়েছেন, তার পরেও তদন্তে অসহযোগিতা করেননি। হাই কোর্ট ডাকলে হাজির হয়েছেন। এমনকি, সিবিআই তলব করলে ভেলোরে মেয়ের চিকিৎসা ছেড়ে হাজির হয়েছেন বলেও যুক্তি দিয়েছেন আইনজীবী। তবে চন্দনের জামিন চেয়ে তাঁর আইনজীবী মূলত সওয়াল করেছেন তাঁর চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নিয়েই। তিনি বলেন, আগে দেখতে হবে ওঁর চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়ার ক্ষমতা আদৌ আছে কি না। উনি চাষাবাদ করেন, কোচিং সেন্টার আছে। ওঁর বিরুদ্ধে বড়জোর একটা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য পেতে পারেন। উনি এই মামলার অভিযুক্ত নন, বড়জোর একজন সাক্ষী হতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy