Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Bratya Basu

নিশানা কি ব্রাত্য, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর চিঠিতে জল্পনা

চিঠির কোথাও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর নামের উল্লেখ না থাকলেও, তাঁকেই সত্যজিৎ নিশানা করতে চেয়েছেন বলে জল্পনা চলছে তৃণমূল ও শিক্ষা দফতরের শীর্ষ স্তরে।

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। —ফাইল চিত্র।

রাজীব চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৬
Share: Save:

তিনি মন্ত্রী। অথচ দফতরের অনেক সিদ্ধান্ত সম্পর্কেই তিনি ‘অবহিত’ নন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা চিঠিতে (প্রতিলিপি আনন্দবাজারের কাছে রয়েছে) এই অভিযোগ শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মণের। চিঠিতে রীতিমতো আক্ষেপের সুরে মন্ত্রী লিখেছেন, ‘জনপ্রতিনিধি ও সমাজকর্মী হিসেবে তাঁকে সরকারের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, শিক্ষক ও পড়ুয়াদের সামনে হাজির থাকতে হয়। দফতরের গুরুত্বপূর্ণ নানা সিদ্ধান্ত না জানায় তাঁকে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়’।

চিঠির কোথাও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর নামের উল্লেখ না থাকলেও, তাঁকেই সত্যজিৎ নিশানা করতে চেয়েছেন বলে জল্পনা চলছে তৃণমূল ও শিক্ষা দফতরের শীর্ষ স্তরে।

সম্প্রতি রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, পূর্ণমন্ত্রীদের হাতে সব ক্ষমতা রাখলে চলবে না। রাষ্ট্রমন্ত্রীদেরও কাজ ভাগ করে দিতে হবে। সত্যজিতের চিঠির প্রেক্ষিতেই এই নির্দেশ কিনা, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে তৃণমূলে।

৬ সেপ্টেম্বর লেখা ওই চিঠিতে এক কথায় অভিযোগের ঝাঁপি উপুড় করে দিয়েছেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। লিখেছেন, স্কুলশিক্ষা দফতরের বৈঠতে তাঁকে ডাকা হয় না। এমনকি, এ বছর বিকাশ ভবনে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণ পর্যন্ত করা হয়নি। আরও লিখেছেন, তাঁর নির্বাচনী ক্ষেত্রে (উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ বিধানসভা) লেখাপড়ার উন্নয়নের লক্ষ্যে স্কুল পরিচালন কমিটিগুলিতে বদলের যে সব প্রস্তাব তিনি দেন, তা মাঝেমধ্যেই গ্রহণ করা হয় না।

নিজের জেলা উত্তর দিনাজপুরের ক্ষেত্রেও নানা সিদ্ধান্ত তাঁকে না জানিয়ে নেওয়া হয়েছিল। উদাহরণ দিয়ে সত্যজিৎ লিখেছেন, শিক্ষারত্ন পুরস্কার কাদের দেওয়া হবে, মাধ্যমিক পরীক্ষার আহ্বায়ক (কনভেনর) কাকে করা হবে, সে সব সিদ্ধান্ত তাঁকে অন্ধকারে রেখে নেওয়া হয়। এর পরেই তিনি লিখেছেন, ‘অন্তত আমার জেলার ক্ষেত্রে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তা আমাকে জানানো উচিত। মন্ত্রীর থেকে ন্যূনতম এই আশাটুকু করতে পারি’। তিনি আরও জানান, তাঁর কাছ থেকে পূর্ণমন্ত্রীর কাছে যায় শুধু সরকারি শিক্ষক ও স্কুল ইনস্পেক্টরদের ‘রেগুলার কেরিয়ার অ্যাডভান্সমেন্ট’ সংক্রান্ত ফাইল। অন্য কোনও ফাইল তাঁর কাছে পাঠানো হয় না। যার ফলে দফতরের নেওয়া কোনও সিদ্ধান্তই জানতে পারেন না।

কী বলছেন ব্রাত্য? সত্যজিতের চিঠি সম্পর্কে তাঁর কিছু জানা নেই বলে দাবি করেছেন ব্রাত্য। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “উনি আমার সহকর্মী। আমাদের সম্পর্ক খুবই ভাল। গত এক মাসে ওঁর জেলা সংক্রান্ত তিনটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত ওঁর সঙ্গে কথা বলে নেওয়া হয়েছে। যা জানানোর উনি আমাকেই জানাতে পারতেন।” অন্য দিকে, সত্যজিৎ নিজের চিঠি বা তাতে উল্লিখিত অভিযোগসমূহ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি।

চলতি বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আহ্বায়ক নির্বাচন নিয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর শিক্ষা সচিবকে একটি চিঠি (মেমো নম্বর: ২৪০/এমওএস/এসইডি/২০২৪) পাঠান সত্যজিৎ। সেখানে তাঁর দাবি, দফতরের প্রতিমন্ত্রী হলেও তিনি ওই বিষয় সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। লিখিত ভাবে বলা সত্ত্বেও কেন বিষয়টি তাঁকে জানানো হয়নি, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতিদের থেকে তার ব্যাখ্যা চাইতে বলেছেন মন্ত্রী। আর এক চিঠিতে একটি সরকারি আদেশনামার উল্লেখ করে শিক্ষাসচিবকে সত্যজিৎ লিখেছেন যে, (ওই নির্দেশনামা মোতাবেক) শিক্ষা দফতরের গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত কাজ তাঁর পর্যালোচনা (মনিটরিং) করার কথা।

অথচ রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অ্যাড-হক কমিটি নিয়োগ সম্পর্কে তাঁর কিছু জানা নেই। তাঁকে অন্ধকারে রেখে দফতরের কোনও নির্দেশ, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়া ‘লজ্জার’ বিষয় বলে মনে করেন মন্ত্রী।

অন্য বিষয়গুলি:

Bratya Basu WB Education Minister Satyajit Barman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy