প্রতীকী ছবি।
গৃহবন্দিদশা কী, সকলকেই কমবেশি টের পাইয়ে দিয়েছে অতিমারি। তার দীর্ঘস্থায়ী দাপটে কেউ ভাল নেই। মোটেই ভাল নেই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন প্রতিবন্ধী শিশুরা। স্কুল যাওয়া বন্ধ। বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যে তাদের প্রায় দমবন্ধ দশা। এমনই ছবি উঠে এসেছে প্রতীচী ট্রাস্টের সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে।
কলকাতার কিছু সরকার পোষিত স্কুলের প্রাক্-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়া এবং তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ওই সমীক্ষা রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, এই ধরনের ৫৪টি শিশুর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, স্কুলে না-গিয়ে এই করোনাকালে ওই খুদেরা কোনও কোনও ক্ষেত্রে আবেগগত বিপন্নতায় ভুগছে। আবার কেউ কেউ হয়ে পড়ছে 'হাইপার অ্যাক্টিভ'।
প্রতীচী (ইন্ডিয়া) ট্রাস্টের কো-অর্ডিনেটর, স্পেশাল প্রজেক্টস, উর্বা চৌধুরী বৃহস্পতিবার জানান, ওই শিশুরা সরকার পোষিত সাধারণ স্কুলে যেত। সেখানে শিক্ষা এবং তালিম পেয়ে ওরা ধীরে ধীরে অন্য শিশুদের সঙ্গে খুব স্বচ্ছন্দে মিশে গিয়েছিল। অতি প্রয়োজনীয় পঠনপাঠনও হচ্ছিল নিয়মিত। কিন্তু অতিমারির জন্য স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওরা এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে।
এই ধরনের অধিকাংশ শিশুরই পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। উর্বাদেবী জানান, উত্তর কলকাতার জোড়াবাগান অঞ্চলে এমনই একটি শিশু ফ্ল্যাটবাড়িতে থাকে। ঘুপচি এক কামরার ফ্ল্যাটে দিনের পর দিন থাকতে থাকতে শিশুটি অনেক সময় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মুখোমুখি হচ্ছে। পরিবারের লোকজন তাকে অনেক সময় বুঝিয়েসুজিয়ে শান্ত করতে পারছেন না। আর একটি শিশুর বাস বেলেঘাটার রেললাইনের ধারে ঝুপড়িতে। দিনের পর দিন বাড়িতে বসে থাকায় তার শারীরিক ও আবেগগত বিকাশে প্রভাব পড়ছে। পাশেই রেললাইন। এই পরিস্থিতিতে মা তাকে সারা ক্ষণ ঘরের মধ্যেই আটকে রাখেন।
এই পরিস্থিতিতে ওই শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যে খুবই জরুরি, তা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে পরামর্শও। বলা হয়েছে, নিয়মিত ওই শিশুদের স্পেশাল এডুকেশনের ‘সাপোর্ট’ দিতে হবে। অভিভাবকদের জন্যও বিশেষ ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে বাড়িতে বাচ্চাদের সঙ্গে কী ধরনের ব্যবহার করতে হবে, অভিভাবকেরা সেটা বুঝতে পারেন। নিয়মিত প্রোটিনসমৃদ্ধ মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা করতে হবে। যে-সব শিশুর চোখের সমস্যা রয়েছে, বড় অক্ষরের পাঠ্যবইয়ের ব্যবস্থা করতে হবে তাদের জন্য। যে-সব শিশুর শ্রবণশক্তি বাড়ানো প্রয়োজন, তাদের জন্যও বিশেষ ভাবে পঠনপাঠনের ব্যবস্থা করতে হবে। যাদের মানসিক বিকাশের ঘাটতি আছে, তাদের জন্য দরকার বিশেষ পাঠ্যক্রম।
এই সমীক্ষার সংক্ষিপ্ত রিপোর্ট আজ, শুক্রবার সর্বসাধারণের জন্য প্রকাশ করা হবে বলে ট্রাস্ট-কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy