প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়।
পছন্দের বিষয় নিয়ে পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে ছাত্রছাত্রীরা দিশাহারার মতো ছোটাছুটি করছেন। স্নাতক স্তরে ভর্তি প্রক্রিয়া এখন মাঝপাথে। এরই মধ্যে শিক্ষা শিবিরের আশঙ্কা, ভর্তি হতে ইচ্ছুক পড়ুয়া প্রচুর, কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনেক আসন ফাঁকা থেকে যাবে। সেগুলিতে পরে ছাত্রছাত্রী ভর্তি নেওয়া যাবে কি না, সেটাও বুঝে উঠতে পারছে না বহু কলেজ।
কলেজে ঢুকতে টাকার লেনদেন-সহ ব্যাপক দুর্নীতি আটকাতে এ বছর পুরোপুরি অনলাইনে ভর্তির ব্যবস্থা হয়েছে। তাতে দুর্নীতির মোকাবিলা কতটা করা যাচ্ছে, সেটা প্রশ্নাতীত নয়। কিন্তু বহু আসন খালি থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হয়েছে। বেশির ভাগ পড়ুয়াই অনলাইনে একাধিক কলেজে আবেদন করছেন। সুযোগ পেলে পড়ুয়ারা একাধিক কলেজে ভর্তি হয়ে যেতে পারেন। হচ্ছেনও। কিন্তু এক জন পড়ুয়া ক্লাস তো করবেন একটিই কলেজে। অন্য যে-সব কলেজে তিনি ভর্তি হচ্ছেন, সেখানকার আসনগুলি ফাঁকা পড়ে থাকবে। ৭ জুলাই ভর্তির শেষ দিন। তার পরে ক্লাস শুরু হয়ে যাবে। যে-সব আসন ফাঁকা পড়ে থাকবে, তাতে আর নতুন করে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা যাবে কি না, সেই বিষয়ে কোনও সুস্পষ্ট নির্দেশ নেই কলেজগুলির কাছে।
নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যক্ষ জয়দীপ ষড়ঙ্গী জানান, খালি আসনে পরে ভর্তি করা যাবে কি না, সেই বিষয়ে তাঁরা এখনও পরিষ্কার নির্দেশ পাননি। বড়িশা বিবেকানন্দ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষা সোমা ভট্টাচার্যও জানাচ্ছেন, শূন্য আসনে পরে ভর্তির ব্যাপারে কোনও পরিষ্কার ধারণা নেই তাঁদের। গত মাসে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে অধ্যক্ষদের বৈঠকে প্রসঙ্গটি উঠেছিল। কিন্তু সেখানেও স্পষ্ট উত্তর পাওয়া যায়নি বলে জানাচ্ছেন অধ্যক্ষেরা।
শিক্ষা শিবিরের বক্তব্য, এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে ৮০ শতাংশের বেশি পাওয়া পড়ুয়ার সংখ্যা গত বারের থেকে বেশি। তাই ভর্তির জন্য লড়াইটাও তীব্র। এ বার এক-এক জন পড়ুয়া যদি একাধিক কলেজে ভর্তি হয়ে আসন আটকে রাখেন, তা হলে শেষ পর্যন্ত অনেক আসন ফাঁকা পড়ে থাকার আশঙ্কা থাকছেই। পাশাপাশি অনেক পড়ুয়া আদৌ ভর্তি হতে পারবেন কি না, তা নিয়েও চিন্তার কারণ রয়েছে বলে জানাচ্ছেন অধ্যক্ষেরা। আসন ফাঁকা থেকে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি মাঝের সারির কলেজগুলিতেই।
শিক্ষা জগতের অনেকে বলছেন, কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু না-করলে এই সমস্যা থাকবেই। কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইনে ভর্তি নিয়ন্ত্রিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষই প্রত্যেক আবেদনকারী ছাত্র বা ছাত্রীকে একটি মাত্র কলেজ বেছে সেখানে ভর্তির নির্দেশ দেবেন। কোনও আবেদনকারী একসঙ্গে অনেক আসন আটকে রাখার সুযোগ পাবেন না।
এরই মধ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া চলাকালীন গ্রামাঞ্চলের পড়ুয়াদের ভুগতে হচ্ছে ইন্টারনেট পরিষেবার অনিশ্চয়তার জন্য। এক-একটি সাইবার কাফেতে সারা দিন লাইন দিয়ে ছাত্রছাত্রীরা ভর্তির ফর্ম পূরণ করছেন। অনেক সময়েই বিভিন্ন জায়গায় ইন্টারনেট পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। যে-সব পড়ুয়ার কাছে কোনও ডেবিট কার্ড বা ক্রেডিট কার্ড নেই, সাইবার কাফের পক্ষ থেকে নিজেদের কার্ড দিয়ে তাঁদের ফর্ম পূরণের ফি ভরে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তার জন্য অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। সেই বাড়তি টাকার পরিমাণ কোথাও ১০০, আবার কোথাও ২০০। গ্রামের পড়ুয়ারা যে এই পরিস্থিতিতে পড়তে পারেন, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অধ্যক্ষদের বৈঠকে নদিয়ার একটি কলেজের অধ্যক্ষ সেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, অনেক সময় গ্রামের দিকে
ইন্টারনেটের পরিষেবা বিঘ্নিত হয়। ফর্ম পূরণের জন্য ছাত্রছাত্রীরা সাইবার কাফেতে গেলে বেশি টাকা নেয়। ছাত্রছাত্রীরা যাতে স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিসে বিনামূল্যে অনলাইনে ফর্ম পূরণ করতে পারেন, তার বন্দোবস্ত করার কথা বলেছিলেন তিনি। অনেক কলেজের মেধা-তালিকা আপলোডের পরে ওয়েবসাইট ক্র্যাশ করে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে।
অনলাইনে ভর্তির ফি দিতে গিয়েও সমস্যর মুখে পড়ছেন অনেকে। অধ্যক্ষেরা জানান, পেমেন্ট গেটওয়েতে সমস্যা হচ্ছে। ভৈরব গাঙ্গুলি কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ সঞ্জিত দাস জানান, কোনও ছাত্র বা ছাত্রী তাঁদের হেল্পলাইনে এমন সমস্যার কথা জানালে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy