হিমঘরে ছোট এবং প্রান্তিক কৃষকদের আলু মজুত রাখার ‘সংরক্ষিত’ এলাকার পরিধি ১০ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। সম্প্রতি একটি আদেশনামায় তা জানিয়েছে কৃষি বিপণন দফতর। প্রশাসনের অন্দরের বক্তব্য, যেখানে হিমঘরের সংখ্যা কম, সেখানে আলু রাখতে সমস্যায় পড়েন ছোট ও প্রান্তিক কৃষকেরা। এই ব্যবস্থায় তাঁদের সুবিধা হবে।
১ মার্চ থেকে হিমঘরগুলি খোলে। প্রতিবারই কত এলাকা ছোট ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্য সংরক্ষিত রাখতে হবে, তা স্থির করে দেয় রাজ্য। এ বছরের জন্য সরকারি নির্দেশ, ২০ মার্চ পর্যন্ত ছোট ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্য হিমঘরের মোট মজুত-জায়গার ন্যূনতম ৩০ শতাংশ বরাদ্দ রাখতেই হবে। গত বছর এই পরিমাণ ছিল ২০%। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, এ বার মাথাপিছু ৭০ বস্তা বা ৩৫ কুইন্টাল আলু হিমঘরে মজুত রাখতে পারবেন কৃষক। গত বছর এই সীমা ছিল মাথাপিছু ৫০ বস্তা।
দক্ষিণবঙ্গে হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুরে হিমঘরের সংখ্যা বেশি। ফলে উৎপাদন বেশি হলেও সেখানে সমস্যা থাকে না। কিন্তু উত্তরবঙ্গে হিমঘর কম। উৎপাদন বেশি হলে সেখানে ছোট ও প্রান্তিক কৃষকদের কিছুটা সমস্যা হয়। সরকারের নির্দেশ, ২০ মার্চ পর্যন্ত সংশ্লিষ্টদের জন্য এই সুবিধা চালু রাখতেই হবে। তার মধ্যে যে কৃষক প্রথমে এসে আলু রাখতে চাইবেন, তাঁকে সেই সুযোগ দিতে হবে। ওই সময়ের মধ্যে হিমঘরের নির্ধারিত ৩০ শতাংশ জায়গা না ভরলে অবশ্য সরকারের দায়িত্ব থাকবে না।
কৃষি বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, একটি বছর অন্তর আলু উৎপাদন বেশি হয়। গত বছর ১২৭ লক্ষ টন আলু উৎপাদিত হয়েছিল। এ বছর তাই মনে করা হচ্ছে, আলু উৎপাদন বেশি হবে। সূত্র জানাচ্ছে, গোটা বিষয়টাতে নিবিড় নজর রাখার দায়িত্ব জেলাশাসকদের দেওয়া হয়েছে। এত দিন রাজ্যে আলুর ৪৯৬টি হিমঘর ছিল। যাতে ৮১ লক্ষ টনের বেশি আলু রাখা যেত। নতুন আরও ১২টি হিমঘর চালু হওয়ায় আরও ১.৩৭ লক্ষ টন আলু রাখা যাবে। শুধু উত্তরবঙ্গেই ১০টি নতুন হিমঘর চালু হয়েছে। ফলে সেখানে সমস্যা অনেকটাই মিটবে বলে রাজ্যের আশা।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)