বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অশান্তি নিয়ে উত্তপ্ত হতে পারে বিধানসভা। তার আগে ওই ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর পাশেই দাঁড়ালেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, ব্রাত্য প্রশংসনীয় কাজ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের বিক্ষোভের মুখে শিক্ষামন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নানা স্তরে। ছাত্র-ছাত্রীদের মামলায় শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। তবে শিক্ষামন্ত্রীর ভূমিকায় কোনও অন্যায় দেখছেন না স্পিকার। তিনি শুক্রবার বলেছেন, ‘‘মন্ত্রী হিসেবে তিনি (ব্রাত্য) অসীম ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিয়েছেন। আহত ছাত্রের বাবা-মায়ের সঙ্গে ফোনে কথাও বলেছেন। শিক্ষামন্ত্রীর ভূমিকা প্রশংসনীয়।’’ তবে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালত এফআইআর দায়ের করার যে নির্দেশ দিয়েছে, তা নিয়ে আলাদা করে কোনও মন্তব্য করতে চাননি স্পিকার। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরাও তো ছাত্র ছিলাম। এ রকম কখনও হয়নি।’’
আগামী সোমবার থেকে বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হতে চলেছে। অধিবেশনে যাদবপুর-কাণ্ড এবং শিক্ষার বিষয়ে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধীরা সরব হতে পারে। এই অবস্থায় স্পিকারের এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। বিরোধীরা অবশ্য যাদবপুর নিয়ে যথারীতি সরব। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘যে কোনও রকমের আধিপত্য বা দাপটের বিরুদ্ধে ছাত্রেরা সব সময়েই রুখে দাঁড়িয়েছে। বাস্তবের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কথা বললে কী করা যাবে? এই সব কারণেই বিধানসভার মর্যাদারও দিনে দিনে অবনতি হয়েছে।’’
কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এ দিন আবার দাবি করেছেন, ‘‘যাদবপুরের অচলাবস্থা সম্পূর্ণ তৈরি করে রাখা হয়েছে। চাইলেই তা এক মুহূর্তে কেটে যাবে। এই প্রসঙ্গে আমি রাজ্যপালের দফতরের সঙ্গে যোগাযোগে রয়েছি।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘ব্রাত্য বসু এত দিন ধরে শিক্ষামন্ত্রী রয়েছেন, এত দিন যাননি। হঠাৎ ভোটের আগে যেতে ইচ্ছা হল কেন? সবটাই তৃণমূল ও বামেদের যোগসাজশে তৈরি। বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির পাওয়া হিন্দুদের ভোট বামেদের দিকে সরানোর কৌশল নেওয়া হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। লোকসভায় ৬০ লক্ষ ভোট পেয়েছে, সেটাও আমরা কমিয়ে ৪০ লক্ষ করে দেব এ বার!’’
অধিবেশনের আগে বিধানসভায় এ দিন এ দিন কার্য উপদেষ্টা (বি এ) কমিটির বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আগামী ১১, ১২ ও ১৩ মার্চ শ্রম, বিদ্যুৎ এবং পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের বাজেট বরাদ্দ নিয়ে আলোচনা হবে। তার আগে ১০ তারিখ অর্থ দফতরের বকেয়া অনুমোদন নেবে সরকার।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)