Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Rakesh Sharma

সমন্বয় চান রাকেশ, সন্দিহান নীতি নিয়ে

প্রায় চার দশক আগে রুশ মহাকাশযানে চেপে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন ভারতীয় বায়ুসেনার তৎকালীন স্কোয়াড্রন লিডার রাকেশ শর্মা।

কলকাতার স্পেস মিউজ়িয়ামে রাকেশ শর্মা। শনিবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

কলকাতার স্পেস মিউজ়িয়ামে রাকেশ শর্মা। শনিবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:২০
Share: Save:

মহাকাশে প্রতিযোগিতা নয়, বরং আন্তর্জাতিক স্তরে সমন্বয়ের প্রয়োজন বলে মনে করেন প্রথম ভারতীয় মহাকাশচারী রাকেশ শর্মা। কলকাতায় ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজ়িক্স-এর স্পেস মিউজ়িয়ামে শনিবার রাকেশ তাঁর বক্তৃতায় বলেছেন, চাঁদ কিংবা মঙ্গলে যদি মানুষের বসতি স্থাপন করতে হয় তা হলে তা কোনও দেশের পক্ষে একা করা সম্ভব নয়। তবে তা কত দূর সম্ভব সে ব্যাপারেও সন্দেহ ফুটে উঠেছে এই মহাকাশচারীর গলায়। বক্তৃতা শেষে এক শ্রোতার প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘মহাকাশ নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি নীতি আছে। কিন্তু সেই নীতি প্রণয়ন করবে কে?’’

বস্তুত, এই প্রসঙ্গেই মহাকাশ অভিযানে বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগিতা চলছে সে কথা উঠে এসেছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে রাকেশের মন্তব্য, ‘‘পৃথিবীর প্রতিযোগিতা মহাকাশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’’ তবে তিনি এ-ও বলেছেন যে মহাকাশে কোনও সীমান্ত নেই। তাই এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের ফারাকও নেই। তাই সেখানে সীমান্ত রক্ষার কোনও তাগিদ থাকতে পারে না।

প্রায় চার দশক আগে রুশ মহাকাশযানে চেপে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন ভারতীয় বায়ুসেনার তৎকালীন স্কোয়াড্রন লিডার রাকেশ শর্মা। দেশের মানুষের মহাশূন্যে পাড়ি দেওয়ার ঘটনা বিশেষ ভাবে সাড়া ফেলেছিল ভারতীয় সমাজে। সেই ঘটনার এত দিন পরে দাঁড়িয়ে ভারতীয় মহাকাশ অভিযান নিয়েও নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন রাকেশ। তাঁর মতে, উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে ভারত উন্নত দেশগুলির পদাঙ্ক অনুসরণ করেনি। বরং নিজের মতো করে এগিয়েছে। সেই হিসাবে ভারত মহাকাশ ক্ষেত্রে নিজের অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে বলেও তিনি জানান। এ সবের পাশাপাশি রাকেশের বক্তৃতায় উঠে এসেছে মহাকাশচারীদের প্রশিক্ষণের খুঁটিনাটিও। প্রসঙ্গত, গগনযান প্রকল্পে চার ভারতীয় মহাকাশচারীর প্রশিক্ষণের সঙ্গেও যুক্ত আছেন রাকেশ।

এ দিন রাকেশ জানান, রকেটের মাধ্যমে উৎক্ষেপণের সময় পৃথিবীর অভিকর্ষের বিপরীতমুখী বল কাজ করে। তা ছাড়া, মহাকাশে পৃথিবীর অভিকর্ষ বল শূন্য। তারও প্রভাব পড়ে। তাই সে সব মাথায় রেখেই নানা ভাবে মহাকাশচারীদের শরীরকে প্রস্তুত করা হয়। মহাকাশযানের ভিতরে আবদ্ধ থাকার মানসিক জোর আছে কি না, তাও পরীক্ষা করা হয়। তার জন্য পৃথিবীতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কোনও ঘড়ি, বই, খবরের কাগজ ছাড়াই একটি কুঠুরিতে ৪৮-৭২ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। উল্লেখ্য, রাকেশ তাঁর প্রশিক্ষণের সময়ে শরীরকে ভিন্ন পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়ানোর জন্য যোগাভ্যাস করেছিলেন। সে ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘‘আমার রুশ সঙ্গীরা পাশ্চাত্যের পদ্ধতি অনুশীলন করেছিলেন এবং আমি প্রাচ্যের। কিন্তু দেখা গিয়েছিল, আমার সঙ্গে ওঁদের শারীরিক সক্ষমতার ফারাক হয়নি। তবে যোগাভ্যাসে সত্যিই মহাকাশচারীর প্রশিক্ষণ সম্ভব কি না, তার বিস্তারিত তথ্য বা গবেষণার ফলাফল হাতে নেই।’’

এ দিন রাকেশের আগে অনলাইনে বক্তৃতা দেন নাসার প্রাক্তন কর্তা এবং মার্কিন মহাকাশচারী জন গ্রানসফেল্ড। প্রায় ৫৮ দিন মহাকাশে কাটিয়েছেন তিনি এবং মহাকাশে গিয়ে হাবল টেলিস্কোপ মেরামত করেছেন। সেই অভিযানের গল্পের পাশাপাশি মহাকাশে নাসার হাবল টেলিস্কোপ এবং জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের খুঁটিনাটিও শ্রোতাদের বলেন তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Rakesh Sharma Space Science
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy