অমিত শাহ এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
দ্বিধা-দ্বন্দ্ব অতীত। বিজেপি-র হয়ে ময়দানে নেমে পড়ার তোড়জোড় শুরু হয়ে গেল কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা বেহালা পূর্বের বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায়ের শিবিরে। বৃহস্পতিবার রাতে নিউটাউনের হোটেলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি-র শীর্ষনেতা অমিত শাহ বৈঠক করলেন শোভন ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। অমিতের সঙ্গে কথা বলে যে তাঁরা যারপরনাই সন্তুষ্ট, সে কথা শোভন-বৈশাখী খোলাখুলিই জানাচ্ছেন। শোভনকে তাঁর চেনা মাঠেই যে খেলতে নামানো হবে, সে বার্তাও অমিত দিয়ে দিয়েছেন বলে বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে।
অমিতের সঙ্গে শোভন-বৈশাখীর বৈঠক একান্তেই হয়েছে। বৈঠকের সময়ে সেখানে অন্য কেউ ছিলেন না। প্রায় আধ ঘন্টা শোভনদের সঙ্গে অমিত কথা বলেন। রাজ্যের রাজনৈতিক অবস্থা, রাজ্য বিজেপি-র অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি এবং নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে শোভন নিজের যাবতীয় বক্তব্য অমিতকে বিশদে জানান।
তৃণমূলে থাকাকালীন দক্ষিণ কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা প্রায় একা সামলাতেন শোভন। গোটা এলাকাই নিজের হাতের তালুর মতো চেনা কলকাতার প্রাক্তন মেয়র এবং রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর। ঘটনাচক্রে, এই দক্ষিণ কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেই বিজেপি এখনও সবচেয়ে দুর্বল। ওই এলাকায় সংগঠনের ছবি দ্রুত বদলে ফেলার কাজে শোভনকে যে ঝাঁপাতে হবে, সে বার্তা অমিত দিয়ে দিয়েছেন বলেই খবর। দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ কলকাতায় শোভনের ভূমিকা কেমন ছিল, সে সম্পর্কে যে তিনি যথেষ্ট ওয়াকিবহাল, তা-ও অমিতবুঝিয়ে দিয়েছেন।
শাহি-বৈঠকের পরে খুশির হাওয়া শোভন শিবিরে। কলকাতায় তথা বঙ্গে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একের পর এক কর্মসূচি এড়িয়ে যাওয়া শোভন বৃহস্পতিবার রাতে যখন অমিতের সঙ্গে বৈঠক করার জন্য রওনা হন, তখনই বোঝা গিয়েছিল, বরফ গলেছে। তবে বৈঠক শেষের পরে শুধু বরফগলা জলের স্পর্শই মেলেনি, ‘কাননে’র হাওয়ায় উষ্ণতাও অনুভূত হতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: আগামী ৩ বছরে রাজ্যে ৩৫ লক্ষ কাজের ঘোষণা মমতার
ওই সাক্ষাৎ নিয়ে প্রকাশ্যে বেশি কথা না বললেও বৈঠকে যে তিনি খুশি, তা শোভন অকপটেই জানিয়েছেন। আর বৈশাখীর কথায়, ‘‘খুব ভাল বৈঠক হয়েছে। অমিতজির মতো এমন ধৈর্যশীল নেতা জীবনে খুব কম দেখেছি। আমাদের প্রত্যেকটা কথা অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। তার ভিত্তিতে যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে পরবর্তী কর্মপন্থাও স্থির করে দিয়েছেন।’’
শোভন-বৈশাখীর সঙ্গে অমিতের বৈঠকে উষ্ণতার যে ঘাটতি ছিল না, পাশাপাশি অমিত-শোভনের ছবিতে তা স্পষ্ট। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যবহারে আপ্লুত বৈশাখী বৈঠক শেষের পর অমিতকে বলেন, অমিতই অনুপ্রেরণা, তাঁর কারণেই আবার ‘সক্রিয়’ হওয়া সম্ভব হচ্ছে। এর পর অমিত-শোভনকে এক ফ্রেমে বন্দি করার আবদারও রাখেন বৈশাখী। তাঁর কথায়, ‘‘আমার প্রিয় দুই নেতাকে চোখের সামনে একসঙ্গে পেয়ে এক ফ্রেমে ধরে রাখার লোভ সামলাতে পারিনি। আমি অমিতজির সঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ছবিও তুলে নিয়েছি।’’
আনন্দবাজার ডিজিটালকে বৈশাখী আরও বলেন, ‘‘দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তিনি। অত্যন্ত গুরুদায়িত্ব সামলাতে হয়। তা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির এবং সামগ্রিক পরিস্থিতির বাস্তবতা সম্পর্কে যে পুঙ্খানুপুঙ্খ খবর রাখেন, সেটা ওঁর সঙ্গে কথা বলেই বুঝতে পেরেছি।"
আরও পড়ুন: শাহী বৈঠকে শোভন-বৈশাখী, রাতে সাক্ষাৎ শহরের হোটেলে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy