আদালত চত্বরে শোভন চট্টোপাধ্যায় (বাঁ দিকে) দেখা করতে গেলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (ডান দিকে)-এর সঙ্গে। — ফাইল চিত্র।
বহু লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে তাঁদের উত্থান প্রায় একই সময়ে। এক জন, রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। পরে শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্বও সামলিয়েছেন। অন্য জন, কলকাতার মেয়র। মাঝে দীর্ঘ সময়ের টানাপড়েনে পদ খুইয়েছেন দু’জনেই। বেড়েছে দূরত্ব। তবু ৪৫ বছরের পুরনো সেই সহকর্মী কয়েক হাত দূরে রয়েছেন জেনে, দেখা না-করে থাকতে পারলনে না অন্য জন। প্রথম জন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শোভন চট্টোপাধ্যায় অন্য জন।
আলিপুর আদালত চত্বরের লকআপে পার্থের সঙ্গে শনিবার দেখা করতে গেলেন শোভন। পরে তিনি জানিয়েছেন, দেখা না-করতে গেলেই ‘অপরাধ’ হত। যদিও শোভনকে দেখা করার অনুমতি দেননি পার্থের পুলিশরক্ষীরা। শোভন পরে জানিয়েছেন, পার্থ ‘পরিস্থিতির শিকার’। পার্থ যদিও এই প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি।
শনিবার সকালে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়েছিল নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া পার্থকে। সেই সময় আদালতে ব্যক্তিগত কাজে এসেছিলেন শোভন এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। আদালত চত্বরে ভিড় দেখে দাঁড়িয়ে পড়েন তিনি। জানতে পারেন, শুনানির জন্য আদালতে হাজির করানো হয়েছে পার্থকে। তখন আদালতের লকআপে ছিলেন পার্থ। জানতে পেরে গাড়িতে উঠেও নেমে আসেন শোভন। তিনি বলেন, ‘‘যাই একটু দেখা করে আসি ১০ মিনিট।’’ বৈশাখীও বলেন, ‘‘অনেক দিনের সঙ্গী তো!’’
যদিও পার্থের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি শোভন। অনুমতি দেননি পার্থের নিরাপত্তারক্ষীরা। পরে শোভন বলেন, ‘‘দূর থেকে দেখলাম। দেখা করার সেই পরিবেশ, পরিস্থিতি নেই।’’ জানিয়েছেন, দেখা যে না-ও হতে পারে, তা জানতেন তিনি। বিতর্ক হতে পারে, তা-ও জানতেন। তবু ‘বড় দাদার মতো’ পুরনো সহকর্মীর সঙ্গে দেখা করতে ছুটে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন শোভন। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ যদি ব্যাখ্যা করে, দেখা করা অপরাধ, ৪৫ বছরের সম্পর্ক, আমার কাছে না দেখা করাও অপরাধ।’’ শোভন জানান, তিনি যখন ছাত্র-রাজনীতি করতেন, তখন বেহালায় গিয়ে বক্তৃতা করতেন পার্থ। আজ সেই পার্থ কয়েক হাত দূরে রয়েছেন শুনে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেননি শোভন। ছুটে যান শরীরের খবর নিতে। তিনি বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই অভিযুক্ত। কিন্তু অভিযুক্ত আর দোষী প্রমাণিত হওয়ার মধ্যে ফারাক রয়েছে।’’ পার্থ যে পরিস্থিতির শিকার, তা-ও জানিয়েছেন শোভন। তাঁর কথায়, ‘‘পার্থদা পরিস্থিতির শিকার তো বটেই! আমাকেও তো গ্রেফতার করা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তো আর প্রশাসন থেকে আলাদা কিছু নয়! তারা রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে না। রাজনীতি তাদের নিয়ন্ত্রণ করে। এত দিন একসঙ্গে ছিলাম। না দেখা করে চলে গেলে মনে হত, এখান থেকে চলে গেলাম!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy