—ফাইল চিত্র
আবহ তৈরিই ছিল। ক’দিন আগেই নিজের বাড়িতে পদ্ম ফোটানোর কথা বলেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তার পর কাঁথির পুর-প্রশাসকের পদ থেকে অপসারিত হতেই বিজেপিতে যোগ দিলেন ‘অধিকারীর বাড়ি’র ছোট ছেলে সৌমেন্দু অধিকারী।
শুক্রবার ছিল ইংরেজি বছরের প্রথম দিন, যা তৃণমূলের জন্মদিনও বটে। সেই দিনই শুভেন্দুর উপস্থিতিতে কাঁথি শহরের ডরমেটরি মাঠে বিজেপির সভায় দলবদল করলেন সৌমেন্দু। বিদায়ী পুর-বোর্ডের মোট ১৫ জন কাউন্সিলর এবং দু’জন প্রাক্তন কাউন্সিলরও বিজেপিতে যোগ দেন। ভাইয়ের দলবদলের সেই মঞ্চ থেকে শুভেন্দুর চ্যালেঞ্জ, ‘‘১ জানুয়ারি শপথ নিলাম— প্রত্যেক দিন জেলায় যোগদান মেলা হবে। ৩০ জানুয়ারির মধ্যে গণতান্ত্রিক ভাবে, শিষ্টাচার মেনে, রাজনৈতিক লড়াইয়ের মাধ্যমে এমন পরিস্থিতি তৈরি করব, যে আপনারা বুঝতে পারবেন ভারতীয় জনতা পার্টি শুধু নিরঙ্কুশ নয়, এখানে ১০০ শতাংশ সাফল্যের জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। বুথে বুথে নকল ভোটিং মেশিন দেখানোর মতো লোকও তৃণমূল খুঁজে পাবে না।’’ আর সৌমেন্দুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘তৃণমূল ছাড়ার পিছনে বহু কারণ রয়েছে। যদি কখনও বক্তব্য রাখার সুযোগ পাই, সভা করতে পারি সেই দিনই সব প্রকাশ্যে বলব।’’
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘এঁদের মাথার ঠিক আছে বলে মনে হয় না। ২১ বছর একটা দল করে এখন বলছেন, ভুল হয়েছে! ১০ বছরের সরকারে সাড়ে ৯ বছর থেকে এখন সমালোচনা করছেন! সরকার খারাপ কিছু করলে তার দায় তো এঁদেরও নিতে হবে।’’
আরও পড়ুন: টিকার ছাড়পত্র তো পাওয়া গেল, কিন্তু দুয়ারে দুয়ারে টিকা আসবে কবে?
আরও পড়ুন: মাথায় রুপোর মুকুট, বিজেপি-কে পগারপার করার হুঙ্কার অনুব্রতর
সৌমেন্দু বরাবর পুর-রাজনীতির আবর্তেই ছিলেন। প্রথমে কাঁথির কাউন্সিলর, তার পর দু’দফায় চেয়ারম্যান। পুর-বোর্ডের মেয়াদ ফুরোনোর পরে তাঁকেই পুর-প্রশাসক করা হয়েছিল। তবে শুভেন্দু বিজেপিতে যাওয়ার পরে সমীকরণ পাল্টায়। গত বুধবার কাঁথির পুর-প্রশাসক পদ থেকে সৌমেন্দুকে সরিয়ে দেয় রাজ্য সরকার। এই পদক্ষেপ নিন্দনীয় বলে সরব হন আর এক অধিকারী ভ্রাতা, সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠিও লেখেন দিব্যেন্দু। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার সরকারি সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেছেন সৌমেন্দু। ভাইয়ের অপসারণ প্রসঙ্গে শুভেন্দুর কটাক্ষ, ‘‘অশোক ভট্টাচার্য পুরসভার প্রশাসক থাকতে পারেন। নদিয়ার তাহেরপুরে সিপিএমের প্রাক্তন পুরপ্রধান পুর-প্রশাসক রয়েছেন। যে হেতু শুভেন্দু বিজেপিতে, তাই কাঁথি পুরসভার প্রশাসক পদ থেকে তাঁর ছোট ভাইকে সরিয়ে দাও।’’
কাঁথি পুরসভার মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ায় এই মুহূর্তে ক্ষমতায় রদবদলের সম্ভাবনা নেই। তবে ২১ জন বিদায়ী কাউন্সিলরের মধ্যে চেয়ারম্যান-সহ ১৫ জনই বিজেপিতে যাওয়ায় কাঁথি শহরে পদ্মের দাপট বাড়ল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এ দিন সকালেই নন্দীগ্রামে গিয়ে শুভেন্দু জানান, সৌমেন্দুরা বিজেপিতে আসছেন। সঙ্গে বলেন, ‘‘এই জেলায় বিজেপি যেখানে পিছিয়ে আছে, সেখানে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আমার। কাঁথি থেকেই সেই কাজ শুরু করব।’’ ‘অযোগ্য নেতা’দের ক্ষমতা দিয়ে অধিকারীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিততে পারবেন না বলেও এ দিন জানিয়েছেন শুভেন্দু। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘পিসি আর ভাইপো, তৃণমূলে এখন দেড় জন লোক। বাকিরা সবাই কর্মচারী।’’ যুব তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি, কাঁথির নেতা সুপ্রকাশ গিরি পাল্টা বলছেন, ‘‘উনি গুন্ডার মতো বক্তব্য রেখেছেন। সময়ে সব উত্তর পেয়ে যাবেন। জেলার মানুষ ওঁকে প্রত্যাখ্যান করবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy