Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

অনলাইনে দেরি বলেই কি কলেজে আসার ঝোঁক

বঙ্গবাসী কলেজের সামনে সোমবার দেখা হল ঘোলা থেকে আসা অরূপ দাশের সঙ্গে। তিনি কলেজের গেট দিয়ে সটান ঢুকে যাচ্ছিলেন। তাঁকে আটকালেন কলেজেরই এক শিক্ষক পার্থ ঘোষ।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৯ ০৩:৫৭
Share: Save:

ভর্তি হবে অনলাইনে। ক্লাস শুরুর দিনই প্রথম কলেজে যাবেন ছাত্রেরা। তার আগে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। প্রায় সমস্ত কলেজের প্রধান গেটেই এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি টাঙানো রয়েছে। তা সত্ত্বেও বেশ কিছু কলেজের সামনে ভর্তি হতে চাওয়া পড়ুয়ার আনাগোনা চলছেই। কেন?

বঙ্গবাসী কলেজের সামনে সোমবার দেখা হল ঘোলা থেকে আসা অরূপ দাশের সঙ্গে। তিনি কলেজের গেট দিয়ে সটান ঢুকে যাচ্ছিলেন। তাঁকে আটকালেন কলেজেরই এক শিক্ষক পার্থ ঘোষ। অরূপ বলেন, ‘‘অনলাইনে ভর্তির ফর্ম ফিল-আপ করেছি। অনলাইনে টাকা জমা না দিয়ে স্থানীয় ব্যাঙ্ক শাখায় জমা দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানান, টাকা জমা দেওয়ার সময় পেরিয়ে গিয়েছে। তা হলে কি স্যার, আমি ভর্তিই হতে পারব না? এটা জানতেই কলেজে এসেছি।” পার্থবাবু তাঁকে জানান, কাছাকাছি কোনও ব্যাঙ্কে টাকা জমা দিয়ে আসতে। অরূপের দাবি, তাঁর এলাকার অনেকেরই এই সমস্যা হচ্ছে। কলেজের দাদা বা স্যারদের
সাহায্য পাওয়ার আশায় তাঁরা কলেজেই আসছেন।

অনলাইনে ভর্তি নিয়ে কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যা যে হচ্ছে, তা স্বীকার করেছেন অনেক কলেজের অধ্যক্ষই। বঙ্গবাসী কলেজের পার্থবাবু বলেন, “অনলাইনে সমস্যা কিছু তো হচ্ছেই। সমাধানের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। তবু অনেক সময়ে কোনও কোনও পড়ুয়া কলেজের গেটের সামনে
চলে আসছেন।”

সুরেন্দ্রনাথ কলেজ কর্তৃপক্ষও জানান, নানাবিধ সমস্যার সমাধানের জন্য অনলাইনেই রয়েছে হেল্প ডেস্ক নম্বর। ভর্তি সংক্রান্ত কোনও জিজ্ঞাসা নিয়ে কলেজে ঢোকা যে বারণ, তা কলেজের প্রধান গেটেও লেখা রয়েছে। তবু পড়ুয়ারা আসছেন। এক ছাত্র সুজিত রায় জানান, তিনি এসেছেন সোনারপুর থেকে। তাঁর ভর্তির জন্য ব্যাঙ্ক টাকা কেটে নিলেও ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়নি। সুরেন্দ্রনাথের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল কর বলেন, “এই সমস্যা অনেকেরই হচ্ছে। ছাত্ররা আতঙ্কিত হয়ে ফোন করছেন, বা সোজা চলে আসছেন কলেজে।” অধ্যক্ষ জানালেন, তাঁরা ছাত্রদের জানিয়ে দিয়েছেন, অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে সময় লাগে। আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।

মহারাজা মণীন্দ্র চন্দ্র কলেজের শিক্ষক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “নেটওয়ার্ক কতটা শক্তিশালী, তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। অনলাইনে সার্ভিস প্রোভাইডার যতক্ষণ না পর্যন্ত কলেজ কর্তৃপক্ষকে টাকা জমা দেওয়ার তথ্য জানাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে না। এ কাজে অনেক সময় ২৪ ঘণ্টাও লাগছে। ফলে ছাত্ররা আসছেন কলেজে।” কয়েক জন শিক্ষকের মতে, অনলাইনে একটি পেমেন্ট গেটওয়ে থাকলে অনলাইনে টাকা জমা দেওয়ার সমস্যা হচ্ছে। তাই পেমেন্ট গেটওয়ে একাধিক করার চেষ্টা করছেন তারা।

আর এই প্রযুক্তিগত সমস্যার ফাঁক দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে পড়ুয়াদের বিভ্রান্ত করার নানা ফাঁদ। আর এত দিন কলেজে এসে ‘মুশকিল-আসানে’র অভ্যাস ছাড়তে পারছেন না পড়ুয়াদের অনেকেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Admission Academics Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy