ট্রেনের টিকিট কাটাকে কেন্দ্র করে রক্তারক্তি কাণ্ড ব্যান্ডেল স্টেশনে। ভাঙচুর চালানো হয় টিকিট কাউন্টারে। বুকিং ক্লার্ক এবং রেলপুলিশের এক কর্মীর উপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে কয়েক জন যাত্রীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুরে এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। হামলাকারীদের মধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কাউন্টারের কাচ ভাঙার সময় এক হামলকারীর হাত কেটে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। কাউন্টারের সামনে রক্ত পড়ে থাকতেও দেখা গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে ট্রেনের গন্ডগোল শুরু হয়। ওভারহেড তার ছিঁড়ে যাওয়ায় আপ এবং ডাউন দু’টি লাইনেই ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় দু’ঘণ্টা পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। তবে বেশ কিছু ট্রেন বাতিলও করা হয়। ট্রেনের গন্ডগোল হওয়ায় সকাল থেকেই ব্যান্ডেল স্টেশনের টিকিট কাউন্টারগুলিতে যাত্রীদের ভিড় ছিল।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যান্ডেল স্টেশনের ১ নম্বর টিকিট কাউন্টারে টিকিট কাটার জন্য যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন পড়েছিল। অভিযোগ, সেই সময় কয়েক জন যাত্রী এসে বেলাইনে টিকিট নেওয়ার চেষ্টা করেন। লাইনে দাঁড়ানো যাত্রীদের আগে তাঁদের টিকিট দিতে হবে। যাত্রীদের অনেকেই প্রতিবাদ করেন। কাউন্টারে থাকা বুকিং ক্লার্কও জানিয়ে দেন, লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে হবে। আর তাতেই মেজাজ হারিয়ে ফেলেন ওই যাত্রীরা। অভিযোগ, এর পরই রেলের কর্মীদের উদ্দেশে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। তার পর আচমকাই কাউন্টারের গ্রিল এবং কাচ ভেঙে ফেলেন। এই পরিস্থিতি যখন চলছে, খবর পেয়ে তা সামাল দিতে আসে আরপিএফ। রেলপুলিশের এক কর্মী রাজু দাস এই ঘটনার ভিডিয়ো করছিলেন। কেন ভিডিয়ো করলেন, সেই প্রশ্ন তুলে ওই আরপিএফ কর্মীর উপর চড়াও হন অভিযুক্ত যাত্রীরা। আরপিএফ কর্মীর মোবাইলও কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। রেলকর্মীদের অভিযোগ, এর পরই হামলাকারীরা কাউন্টারে ঢুকে চড়াও হন। তাতে এক বুকিং ক্লার্ক আহত হয়েছেন বলে দাবি তাঁদের। আহত হয়েছেন আরপিএফ কর্মীও।
ঘটনার সময় পাশের কাউন্টারে ছিলেন ঋত্বিক সরকার নামে এক রেলকর্মী। তিনি বলেন, ‘‘সকাল থেকে ট্রেনের সমস্যা চলছিল। তার জেরে টিকিট কাউন্টারগুলিতে প্রচুর লাইন ছিল। একটি কাউন্টারে টিকিটের রোল শেষ হয়ে যাওয়ায় তা বদলানো হচ্ছিল। সেই সময় চার থেকে পাঁচ জন যুবক আসেন। বাকি যাত্রীদের সরিয়ে টিকিট নেওয়ার জন্য জোরাজুরি করতে থাকেন তাঁরা। পাশের কাউন্টার থেকে টিকিট নেওয়ার কথা বলা হলেও শোনেননি তাঁরা। রেলকর্মীদের উদ্দেশে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। তার পরই হাত দিয়ে রেলের টিকিট কাউন্টারে কাচ ভেঙে দেন। এমনকি কাউন্টারের ভিতরে ঢুকে আমাদের উপর চড়াও হন তাঁরা। রেলপুলিশকেও ধরে মারধর করা হয়। জামা ছিঁড়ে যায় পুলিশের।’’ ঋত্বিক জানিয়েছেন, এই ঘটনায় আতঙ্কিত তাঁরা। রেলপুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক দীপ্তিময় দত্ত (ভারপ্রাপ্ত) জানান, টিকিটের রোল চেঞ্জ করার সময় কয়েক জন যুবক কাউন্টারে ভাঙচুর চালান। এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনায় এক জন আরপিএফ কর্মী আহত হয়েছেন।