প্রতীকী ছবি।
কোভিড-বিধির অনুশাসনে দীর্ঘ বিরতির পরে স্কুল খোলা নিয়ে উৎসাহের বিরাম ছিল না। তবে, মঙ্গলবার পড়ুয়ারা স্কুলে ফিরতেই উল্টো সুরও শোনা যেতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। সৌজন্য, কলকাতার কয়েকটি স্কুলের বেশ কিছু অভিভাবক। তাঁদের কারও দাবি, ছেলে-মেয়েদের দু’টি ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক নেওয়া হয়নি, কেউ বা জানিয়েছেন, কোভিড পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে নয়, তাই স্কুলে পাঠাতে ভরসা পাচ্ছেন না তাঁরা। এই অবস্থায়, স্কুলের কক্ষে বসে নয়, বাড়িতে থেকে অনলাইনেই আসন্ন পরীক্ষা দিক তাঁদের ছেলেমেয়েরা।
ওই অভিবাবকদের দাবি, শিক্ষামন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন, ইচ্ছুক নয় এমন পড়ুয়াদের স্কুলে আনার ক্ষেত্রে জোরাজুরি করা যাবে না। সে ক্ষেত্রে তাদের বাড়িতে বসেই অ্যাসেসমেন্ট টেস্ট দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক বলে তাঁদের দাবি।
কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলের নবম শ্রেণির অভিভাবকদের অনেকেই অনলাইনের পক্ষে রায় দিয়েছেন। তাঁদের দাবি—এখনও ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভরসা পাচ্ছি না। কিন্তু বার্ষিক পরীক্ষা বা ফাইনাল অ্যাসেসমেন্ট যে হেতু আসন্ন, অভিভাবকেরা চাইছেন, এই পরীক্ষা ছেলেমেয়েরা বাড়িতে বসেই দিক। এ ব্যাপারে তাঁরা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে দাবিও জানিয়েছেন। স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিভাস সান্যাল বলেন, ‘‘স্কুল খোলার পর থেকেই দেখছি, নবম শ্রেণির পড়ুয়া-সংখ্যা কম। কারণ জানতে চাইলে ওই পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা জানিয়েছেন, ছেলেমেয়েদের করোনার একটা টিকাও নেওয়া হয়নি।’’ এ ব্যাপারে অভিভাবকদের বিভাসবাবু পরামর্শ দিয়েছেন, “জোরাজুরি তো করা যাবে না। ওদের জন্য বিশেষ পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছি। বাড়িতে প্রশশ্নপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হবে। অভিভাবকদের বলেছি, ছেলেমেয়েদের একটা ঘরে রেখে ঘর বন্ধ করে পরীক্ষা দিতে। অভিভাবকদেরই গার্ড দিতে বলেছি! পরীক্ষা হয়ে গেলে সেই খাতা ওঁরাই পৌঁছে দেবেন।”
ওই স্কুলের প্রায় লাগোয়া হোলিচাইল্ড স্কুলের নবম শ্রেণির কয়েক জন অভিভাবকেরও এমনই দাবি। সুশান্ত রায়চৌধুরি তাঁদেরই এক জন। তিনি বলেন, ‘‘আমার মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী। ওর ক্লাসের ১৩৪ জন পড়ুয়ার মধ্যে ৯৪ জন পড়ুয়ার অভিভাবক অনলাইনে পরীক্ষা চাইছেন। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ রাজি নন। আমার মেয়ের ডেঙ্গি হয়েছিল কিছু দিন আগে। এখনও খুব দুর্বল। এর মধ্যে স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছি। এই দুর্বল অবস্থায় আবার স্কুলে গিয়ে পরীক্ষা দিতে গিয়ে করোনা সংক্রমণ হয়ে গেলে কী হবে সেই নিয়ে আতঙ্কে আছি।’’ তাঁর দাবি, শিক্ষামন্ত্রী
ব্রাত্য বসু যেখানে বলেছেন, স্কুলে যাওয়া নিয়ে কোনও রকম জোরাজুরি চলবে না সেখানে স্কুল কেন অনলাইনে রাজি হবে না? এ ব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাবার্তা বলছেন তাঁরা। তবে ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ এখনও অনলাইনে পরীক্ষা নিতে রাজি নন বলেই জানা গিয়েছে। নোটিস দিয়ে তা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। যারা পরীক্ষার দিন আসবে না তাদের অনুপস্থিত হিসেবেই ধরা হবে। তবে পড়ুয়ার শরীর খারাপ সংক্রাম্ত নথি দেখালে তা বিবেচনার জন্য গ্রাহ্য হবে বলে স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে যোগাযোগ করা হলে তিনি অবশ্য সাড়া দেননি।
ভবানীপুরের মিত্র ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক রাজা দে জানান, তাঁর স্কুলের নবম শ্রেণির ১২৫ জন পড়ুয়ার মধ্যে জনা পঁচিশ ছাত্রের অভিভাবকও অনলাইন পরীক্ষার পক্ষে সায় দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘ওঁদের বুঝিয়েছি, এই পরীক্ষাটাকে প্র্যাক্টিস ম্যাচ হিসেবে দেখুন না! আগামী দিনে সেই অফলাইনেই তো পরীক্ষা দিতে হবে। তাই একটু মকশো করে দেখুক না ছেলেমেয়েরা। বোঝানোয় কাজ দিয়েছে। অভিভাবকেরা রাজি হয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy