Advertisement
E-Paper

আধার-পরিষেবায় ডাকঘরে ‘হয়রানি’

গ্রাহকদের অভিযোগ, একে তো সব ডাকঘরে আধার পরিষেবা মেলে না। কোনটিতে মেলে, তা জানার সহজ উপায় নেই। যদি বা জানা যায়, সে ক্ষেত্রে আধার নথিভুক্তি বা সংশোধনের জন্য সময় পেতে বহু কাঠখড় পোড়াতে হয়।

aadhaar card

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০৫:৫৬
Share
Save

আধার পরিষেবা কেন্দ্র, স্বীকৃত গ্রাহক সেবা কেন্দ্র, বিএসএনএলের পরিষেবা কেন্দ্র এবং কিছু ব্যাঙ্কের পাশাপাশি আধার নথিভুক্ত এবং তার তথ্য সংশোধন করে বহু ডাকঘরও। সংখ্যায় বেশি হওয়ায় এবং দেশের বিভিন্ন অংশে সেগুলি সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকায়, তাদের এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিল মোদী সরকার। কিন্তু সুবিধা দূর অস্ত্‌, আধারের কাজ সারতে গিয়ে বেশ কিছু ডাকঘরের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তুলছেন গ্রাহকদের একাংশ। দাবি করছেন, সব কাজ বাদ দিয়ে ছোটাছুটি সার হয়েছে। জলে গিয়েছে টাকাও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিষেবা মেলেনি। অনেকে তা পেয়েছেন দীর্ঘ সময় পরে। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, পরিকাঠামোর অভাবই এর প্রধান কারণ। পরিকাঠামোর সমস্যার কথা মেনেছেন ডাক বিভাগের ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কল (পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম ও আন্দামান-নিকোবর নিয়ে) কর্তৃপক্ষও। আগামী দিনে তার উন্নতির আশ্বাস দিচ্ছেন তাঁরা।

গ্রাহকদের অভিযোগ, একে তো সব ডাকঘরে আধার পরিষেবা মেলে না। কোনটিতে মেলে, তা জানার সহজ উপায় নেই। যদি বা জানা যায়, সে ক্ষেত্রে আধার নথিভুক্তি বা সংশোধনের জন্য সময় পেতে বহু কাঠখড় পোড়াতে হয়। কখনও বলা হয়, কর্মী কম। ফলে দিনের পুরো সময় পরিষেবাটি মিলবে না। কোথাও দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হয় এবং তার পরেও সকলে সেই সুযোগ পান না। একাংশ জানিয়েছেন, দিনের দিন গিয়েও পরিষেবা পাওয়ার আবেদন করতে পারেননি তাঁরা। কাউকে কাউকে তারিখ দেওয়া হয়েছে মাস তিন-চারেক পরে। এটা অনেকটা সরকারি হাসপাতালে অপারেশনের তারিখ পাওয়ার মতো, কটাক্ষ ওই গ্রাহকদের। একাধিক বার ফি দিয়ে সংশ্লিষ্ট পদ্ধতি সম্পূর্ণ করার পরে কার্ড তৈরি বা সংশোধন হয়নি, এমন অভিযোগও উঠছে। ডাকঘরের তরফে যান্ত্রিক ত্রুটি বলা হলেও, সেটি আদতে কী তার ব্যাখ্যা মিলছে না বলে দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের।

সরাসরি সরকারি আর্থিক সাহায্য গ্রহণের মতো হাতে গোনা কিছু ক্ষেত্রে আধার নম্বর থাকা বাধ্যতামূলক। তবু সরকারি-বেসরকারি প্রায় সব কাজেই তা চাওয়া হয়। তার উপরে গত বছর আধার তথ্য সংশোধনের (আপডেট) নির্দেশ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ (ইউআইডিএআই)। ফলে মূলত ডাকঘরগুলিতে নতুনদের পাশাপাশি পুরনো গ্রাহকদের ভিড় বেড়েছে। সূত্রের খবর, তাতেই উঠে এসেছে পরিষেবা পেতে হয়রানির কথা।

ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কল সূত্র জানাচ্ছে, তাদের এলাকায় গত অর্থবর্ষে ডাকঘরে আধারের ৮৯৫টি কাউন্টার (সাধারণত একটি ডাকঘরে একটি) ছিল। এ বছরও তা-ই রয়েছে। তবে দৈনিক গড়ে তথ্য সংশোধন ৬০৩৮টি থেকে বেড়ে হয়েছে (এখনও পর্যন্ত) ৯৩৩০। এই কাজে নিযুক্ত কর্মী সংখ্যাও আগের বারের ৫৮০ জনের থেকে বেড়ে ৬০৭ করার কথা জানিয়েছে তারা। এই সংখ্যা কাউন্টারের তুলনায় অনেক কম। ফলে এত কম কর্মী নিয়ে কী ভাবে পরিষেবা সুষ্ঠু ভাবে চালানো সম্ভব, প্রশ্ন থাকছেই। সূত্রের দাবি, সার্কলের প্রতিটি প্রধান ডাকঘরে আধার পরিষেবা মিলছে। তার পরের ধাপের কিছু ডাকঘরেও গ্রাহক তা পাচ্ছেন। সাধারণ ভাবে একটি আধার নথিভুক্তি বা সংশোধনে গড়ে আট মিনিট করে সময় লাগে।

এই সার্কলের চিফ পোস্ট মাস্টার জেনারেল নীরজ কুমারের আশ্বাস, বিষয়টিতে নজরদারির জন্য তাঁর দফতরে এক জন আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়া হবে। পরিষেবার চাহিদা বাড়লে তাল মিলিয়ে পরিকাঠামোয় উন্নতির চেষ্টাও চলবে। আরও বেশি কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রের বরাত বাড়াতে উদ্যোগী হবেন তাঁরা। যাতে দিনের দিনই ডাকঘরে গিয়ে আধারের কাজ সারতে পারেন গ্রাহকেরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Aadhaar Cards post office Central Government

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}