Advertisement
E-Paper

নারদকে বলাই চলে জনস্বার্থ মামলা: এসজি

১৭ মে নারদ মামলায় সিবিআইয়ের হাতে রাজ্যের চার-নেতা মন্ত্রীর গ্রেফতারিকে ঘিরে বিক্ষোভ হয়। সিবিআই আদালতের বিচারক সে-দিনই বিকেলে চার অভিযুক্তকে জামিন দেন।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২১ ০৬:০৪
Share
Save

কলকাতা হাই কোর্টের প্রশ্নজালের মুখে সলিসিটর জেনারেল (এসজি) তুষার মেহতা বৃহস্পতিবার জানান, নারদ-কাণ্ড নিয়ে সিবিআইয়ের আবেদনকে জনস্বার্থ মামলা হিসেবে দেখা যেতেই পারে। এ দিন হাই কোর্টে পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে শুনানির সময় বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, ১৭ মে নিম্ন আদালতের প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ পেতে তড়িঘড়ি ই-মেলে আবেদন করা হয়েছিল কেন? কেন স্বাভাবিক পদ্ধতিতে আর্জি জানানো হয়নি? বিচারপতি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সেই চিঠিতে মামলাটি রিট পিটিশন, নাকি জনস্বার্থ— সেই বিযাপারে তো কোনও রকম উল্লেখ ছিল না!’’

জবাবে এসজি বলেন, পরিস্থিতির কারণে তড়িঘড়ি ই-মেল করা হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, এমন নিয়ম তো নেই যে, জনস্বার্থ মামলা শুধু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনই করতে পারে। আদালত তাঁকে প্রশ্ন করে, তা হলে কি সিবিআইয়ের আর্জিকে জনস্বার্থ মামলা হিসেবে বিবেচনা করা হবে? ১৭ মে-র পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিয়ে এসজি জানান, সিবিআইয়ের আবেদনকে জনস্বার্থ মামলা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।

১৭ মে নারদ মামলায় সিবিআইয়ের হাতে রাজ্যের চার-নেতা মন্ত্রীর গ্রেফতারিকে ঘিরে বিক্ষোভ হয়। সিবিআই আদালতের বিচারক সে-দিনই বিকেলে চার অভিযুক্তকে জামিন দেন। কিন্তু সেই জামিনের বিরুদ্ধে ই-মেল মারফত তড়িঘড়ি হাই কোর্টে আর্জি জানায় সিবিআই। নিম্ন আদালতের গোটা প্রক্রিয়ার উপরে স্থগিতাদেশ জারি করে উচ্চ আদালত। পরবর্তী কালে কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়, বিচারপতি হরিশ টন্ডন, বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ চার জনকে অন্তর্বর্তী জামিন দেয়। এখন মামলার শুনানি চলছে সেই বৃহত্তর বেঞ্চেই। নারদ মামলাকে কলকাতার সিবিআই আদালত থেকে সরানোর বিষয়ে সিবিআইয়ের আর্জি নিয়েই এখন শুনানি হচ্ছে। সিবিআইয়ের বক্তব্য, সে-দিন নিজ়াম প্যালেসে তাদের দফতরে বিক্ষোভে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতি এবং আদালত-চত্বরে আইনমন্ত্রীর উপস্থিতির ফলে নিম্ন আদালতের বিচার প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

বিচারপতিরা বার বার প্রশ্ন তুলছেন, নিম্ন আদালতে সে-দিন তো ভার্চুয়াল শুনানি হয়েছিল। তাতে আদালত প্রভাবিত হতে পারে কী ভাবে? ‘প্রভাবিত হওয়া’র কোনও তথ্যপ্রমাণ সিবিআইয়ের কাছে আছে কি? সলিসিটর জেনারেলকে সেই সব প্রশ্নের সদুত্তর সে-ভাবে দিতে দেখা যায়নি এখনও। এ দিনেও বিভিন্ন রায়ের প্রতিলিপি দেখিয়ে নিজের যুক্তি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেন এসজি। হাই কোর্ট সূত্রের খবর, তাতে সে-ভাবে সন্তুষ্ট হয়নি আদালত। এসজি-র উদ্দেশে বিচারপতি সেন বলেন, “আপনি আগে বলেছেন যে, নিম্ন আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করছেন না। এখন সেই রায়কে বাতিল করতে বলছেন!” আর বিচারপতি টন্ডন প্রশ্ন করেন, “ধর্না-বিক্ষোভের জেরে বিচার ব্যাহত হলে তার জেরে জামিন বাতিল করা যায় কি?”

হাই কোর্ট সূত্রের খবর, এসজি এর জবাব দিলেও তা যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক বলে মনে করেনি আদালত। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, “মিস্টার মেহতা, আপনি জামিনের প্রসঙ্গে বলুন।” এ দিনই সিবিআইয়ের হয়ে সওয়াল শেষ করেছেন এসজি। তার পরে অভিযুক্তদের হয়ে সওয়াল শুরু করেন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। তাঁর বক্তব্য, এটা নিশ্চয়ই কোনও সাধারণ মামলা নয়। পাঁচ জন বিচারপতি এই মামলা শুনছেন। সিবিআই বলছে, নিরপেক্ষ বিচার হয়নি। অথচ সশরীরে কাউকে বাধা দেওয়া হয়েছে, এমন প্রমাণ দেখাতে পারছে না তারা। তথ্যের বদলে অযথা ইস্যু-ভিত্তিক আলোচনা হচ্ছে। মামলা স্থানান্তরের বিরুদ্ধেও নানান যুক্তি দেখান তিনি। শুধু ধারণার ভিত্তিতে দেশের কোনও আদালত রায় দিয়েছে, এমন কোনও নজিরও নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন। তবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জানান, প্রয়োজনে মামলা অন্য কোথাও সরানো যেতে পারে।

ঘটনার দিন অশান্তি পাকানোর অভিযোগ তুলে সিবিআই এই মামলায় বিবাদী পক্ষ হিসেবে তৃণমূলের আইনজীবী-সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে যুক্ত করেছে। তিনি এ দিন নিজের বক্তব্য হলফনামার আকারে জমা দেন। কল্যাণবাবুর বক্তব্য, সিবিআই আদালতকে বিভ্রান্ত করছে। সে-দিন তিনি সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের আইনজীবী হয়ে নিজ়াম প্যালেসে যান। মক্কেলের হয়ে সওয়াল করতে কোর্টেও গিয়েছিলেন। কোনও বিক্ষোভ বা অশান্তির সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন না।

Calcutta High Court Tushar Mehta

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।