ছবি প্রতীকী ফাইল চিত্র
জেলায় নতুন করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সংক্রমণের হারও। এখনই সংক্রমণের হার প্রায় ৬ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, প্রতি একশোজনে ছ’জন সংক্রমিত হচ্ছেন। চলতি মাসের শেষে এই হার ৮-১০ শতাংশে পৌঁছে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশ। মে মাসে পৌঁছতে পারে ১৪-১৫ শতাংশে। সবমিলিয়ে করোনা নিয়ে ক্রমেই দুশ্চিন্তা বাড়ছে জেলায়।
জেলাশাসক রশ্মি কমলের দাবি, ‘‘উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু নেই। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে জেলায় নানা পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক অবশ্য মানছেন, ‘‘সংক্রমিতের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং সংক্রমণের এই হার বৃদ্ধি উদ্বেগজনকই।’’
গতবারের তুলনায় এ বার পরিস্থিতি আরও জটিল। করোনার প্রথম ঢেউয়ে গত বছর ১২-১৮ এপ্রিলের মধ্যে জেলায় ৫৭ জনের করোনা পরীক্ষা হয়েছিল। সংক্রমিত হয়েছিলেন ১ জন। সংক্রমিতের হার ছিল ১.৭৫ শতাংশ। এ বারও এপ্রিলের গোড়ায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ পৌঁছয় জেলায়। তবে এ বার ১২-১৮ এপ্রিলের মধ্যে জেলায় ৮,৩১৮ জনের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। সংক্রমিত হয়েছেন ৪৮৬ জন। অর্থাৎ, সংক্রমিতের হার ৫.৮৪ শতাংশ। করোনা-কালে এখনও পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে সংক্রমিতের হার সার্বিকভাবে ৭.২৮ শতাংশ। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় করোনা পরীক্ষা হয়েছে ২,৫৬,৯৯২ জনের। এর মধ্যে সংক্রমিত হয়েছেন ১৮,৭৩১ জন।
জেলায় এ বার ‘পজ়িটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার প্রতি সপ্তাহে বেড়েই চলেছে। মাস কয়েক আগে পশ্চিম মেদিনীপুরেও দৈনিক সংক্রমণ কমতে কমতে শূন্যে ঠেকেছিল। পরীক্ষা করেও হদিশ মিলছিল না করোনা সংক্রমিতের। গত মার্চ থেকে ফের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ১২- ১৮ এপ্রিল জেলায় যে ৮,৩১৮ জনের করোনা পরীক্ষা হয়েছে, তারমধ্যে আরটিপিসিআরে পরীক্ষা হয়েছে ৪,০৯৩ জনের, অ্যান্টিজেন টেস্ট হয়েছে ৩,৮৭১ জনের। ট্রুন্যাটে পরীক্ষা হয়েছে ৩৫৪ জনের। জেলা প্রশাসনের দাবি, সংক্রমণে রাশ টানতেই করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আপাতত দৈনিক করোনা পরীক্ষার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১,২০০। প্রায় দিন লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়েই পরীক্ষা হচ্ছে। যেমন ১২ এপ্রিল ১,৪৭৮ জনের পরীক্ষা হয়েছে, ১৩ এপ্রিল ১,২৪৬ জনের, ১৪ এপ্রিল ১,৩৪৬ জনের, ১৫ এপ্রিল ৬৪৫ জনের, ১৬ এপ্রিল ১,৫৬৪ জনের, ১৭ এপ্রিল ১,৫৯৯ জনের, ১৮ এপ্রিল ৪৪০ জনের পরীক্ষা হয়েছে।
জেলায় এখন কার্যত আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। কোনও দিন সংক্রমিতের সংখ্যা একশো, কোনও দিন দু’শো ছাড়াচ্ছে। দ্বিতীয় ঢেউয়ে জেলায় সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি মেদিনীপুর, খড়্গপুরের মতো শহরের। ‘পজ়িটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে জেলা প্রশাসনের একাংশেও। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের আশঙ্কা, ‘‘যে ভাবে নতুন সংক্রমণ বেড়ে চলেছে, তাতে চলতি মাসের শেষে সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের উপরে চলে যেতে পারে।’’ জেলার উপ- মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী বলছিলেন, ‘‘করোনা সম্পর্কিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে গা-ছাড়া ভাব দেখা যাচ্ছে অনেকের মধ্যে। সবাইকে সতর্ক এবং সচেতন থাকতেই হবে।’’ গণ-পরিবহণ থেকে কর্মক্ষেত্র— মাস্ক এখনসর্বত্র বাধ্যতামূলক। করোনাবিধি মানা হচ্ছে কি না তা দেখতে এখন আচমকা হানা দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক জুড়ছেন, ‘‘সমান তালে চলছে টিকাকরণের কাজ। সেই কাজ আরও খানিক এগোলে সংক্রমণের হার কমবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy