সীতারাম ইয়েচুরি। —ফাইল চিত্র।
আব্বাস সিদ্দিকীর দলের সঙ্গে জোট কেন, এমন প্রশ্ন তুলেই সিপিএমের রাজ্য কমিটির ২ দিনের বৈঠকের শুরুতেই একাধিক জেলা নেতৃত্ব সরব হলেন। কাঠগড়ায় তোলা হল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, বৈঠকের প্রথমার্ধেই হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হলেন খোদ সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।
বৈঠকের শুরুতেই ৫৬ পাতার একটি খসড়া রিপোর্ট রাজ্য কমিটির কাছে পেশ করা হয়। সেখানে ভোটে হারের কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সেই রিপোর্টের সূত্র ধরেই বৈঠকের শুরুতে পূর্ব বর্ধমান জেলা সিপিএম নেতৃত্ব ভোটে বিপর্যয়ের জন্য রাজ্য কমিটিকে দায়ী করে বক্তৃতা শুরু করেন। কেন আচমকা আব্বাসের দল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের সঙ্গে জোট গড়া হল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। কেন জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা না বলে এক তরফা ভাবে রাজ্য কমিটি জোট গঠনের সিদ্ধান্ত নিল, সে প্রশ্নও তোলা হয়।
এ ক্ষেত্রে কয়েকজন নেতার নাম করে বলা হয়, তাঁরাই দলের ঘাড়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছেন। দলের চাপেই অনিচ্ছা সত্ত্বেও আব্বাসকে মেনে নিয়ে ভোট করতে হয়েছে জেলা নেতৃত্বের। বর্ধমানের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলাও একই সুরে আক্রমণ করে রাজ্য কমিটিকে।
পরিস্থিতি দেখে একটা সময় রাজ্য কমিটির নেতাদের চুপ করে নিজেই বলতে শুরু করে দেন ইয়েচুরি। তিনি বলেছেন, কংগ্রেস বা আইএসএফ, জোট যার সঙ্গেই হোক না কেন, তা দলের নির্দেশেই হয়েছে। কিন্তু বামমনস্ক ভোটারদের কেন দলীয় প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য কাছে টানতে পারেননি জেলার নেতারা? এ প্রশ্ন তুলে সে দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ইয়েচুরি। তাঁর কথায়, ‘‘এক তরফা ভাবে দলের কয়েক জন নেতাকে এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী করা ঠিক নয়। কারণ, কমিউনিস্ট পার্টি সব সময় সঙ্ঘবদ্ধতার কথা বলে। ব্যর্থতা যদি এসেই থাকে তা হলে তা সার্বিক এবং তার দায় সর্বস্তরের কমরেডকেই নিতে হবে।’’ ইয়েচুরি জেলা নেতৃত্বকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাংলায় সিপিএম আগামী দিনেও কংগ্রেস ও আব্বাসের দলের হাত ধরে চলবে।
তবে শনিবার বৈঠকে যে খসড়া রিপোর্টটি পেশ করা হয়েছে সেখানে এই ভোট বিপর্যয়ের দায় নিয়েছে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী। সেই সঙ্গে রিপোর্টের একটি অংশে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে যে, রাজ্যবাসীর মনের কথা বুঝতে পার্টির নেতারা ব্যর্থ হয়েছেন। শনিবার থেকে শুরু হওয়া বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন সিপিএমের ৭ পলিটব্যুরো সদস্য। তাঁদের সামনে যেন জেলার নেতারা কোনও ‘ঝাঁঝাঁলো’ বক্তৃতা না করেন, এমন চেষ্টা করাও হয়েছিল। কিন্তু বৈঠকের শুরুতেই জেলা নেতৃত্বের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্যের বর্ষীয়ান নেতাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy