ধৃত সাব ইনস্পেক্টর তারাপদ টুডু। নিজস্ব চিত্র
থানার মালখানার দায়িত্ব ছিল যাঁর হাতে, অস্ত্র পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার হলেন সেই পুলিশকর্মীই।
ঝাড়গ্রাম জেলার লালগড় থানার মালখানা থেকে অস্ত্র পাচারের অভিযোগে মঙ্গলবার এক সাব ইনস্পেক্টর-সহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন লালগড় থানার এক এনভিএফ কর্মীও। বাকি দু’জন বিনপুরের বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, মোট ১৮টি অস্ত্র পাচারের অভিযোগ রয়েছে ধৃতদের বিরুদ্ধে। ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর বলেন, ‘‘ওই ১৮টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক বিভিন্ন ব্যক্তির। যাঁরা বন্দুক বাড়িতে না রেখে পুলিশের হেফাজতে রেখেছিলেন।’’
ধৃত সাব ইনস্পেক্টর তারাপদ টুডু বর্তমানে জামবনি থানায় কর্মরত। তাঁর বাড়ি পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর থানার পাথরটিকরি গ্রামে। ২০১৮ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত লালগড় থানায় কর্মরত থাকাকালীন তারাপদ মালখানার দায়িত্বে ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, জানুয়ারির শুরুতে তারাপদ জামবনি থানায় বদলি হন। গত ১৬ জানুয়ারি লালগড় থানার সাব ইনস্পেক্টর বিশ্বজিৎ পাঁজাকে মালখানার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন তারাপদ। কিন্তু দেখা যায়, সেখানে ১৮টি আগ্নেয়াস্ত্রের হদিস নেই। অস্ত্রগুলির বেশিরভাগই একনলা অথবা দোনলা বন্দুক। পুলিশ সূত্রের খবর, তারাপদ দাবি করেন, আগ্নেয়াস্ত্রগুলি মালিকেরা ফেরত নিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু দাবির স্বপক্ষে কোনও নথি দেখাতে পারেননি। পুলিশ সূত্রে দাবি, পরে জেরায় তারাপদ স্বীকার করেন, এনভিএফ কর্মী লক্ষ্মীরাম রানার সহযোগিতায় ওই অস্ত্র পাচার করেছেন তিনি। এ কাজে তাঁদের সহযোগিতা করেছেন বিনপুরের মুরকুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা সুধাংশু সেনাপতি ও তাঁর ছেলে দিলীপ।
মঙ্গলবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন লালগড় থানার আইসি অরিন্দম ভট্টাচার্য (লালগড় থানা কেস নম্বর ০৫/২০২০)। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪০৯ (সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি তছরূপের অভিযোগ) ও ১২০বি (ষড়যন্ত্র) ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। সেই অভিযোগে মঙ্গলবারই ঝাড়গ্রাম থেকে বছর সাতান্নর তারাপদকে গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশের দাবি। তাঁকে জেরা করে লালগড় থেকে লক্ষ্মীরাম এবং বিনপুরের মুরকুনিয়া থেকে সুধাংশু ও দিলীপকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বুধবার ধৃতদের ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হলে তদন্তের স্বার্থে সবাইকেই পাঁচদিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) সূত্রে খবর, গত ১২ জানুয়ারি পুরুলিয়ার কেন্দা থানা এলাকা থেকে অস্ত্র পাচারের অভিযোগে পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা চণ্ডীচরণ কর্মকার-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। বেআইনি অস্ত্র কারবারি চণ্ডীর কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছিল একটি দোনলা বন্দুক। তদন্তে নেমে এসটিএফ জানতে পারে, দোনলা বন্দুকটি লালগড়ের কোনও ব্যক্তির কাছ থেকে জোগাড় করা হয়েছিল। ঘটনাটি লালগড় থানাকে জানায় এসটিএফ। এসটিএফ সূত্রে দাবি, জেরায় চণ্ডী কবুল করেছিল, ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন এজেন্ট মারফত সে অস্ত্র কিনত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy