বাকিবুর রহমান। —ফাইল চিত্র।
কলকাতা বিমানবন্দর-লাগোয়া ছ’তলা হোটেল। রেশন দুর্নীতিতে অন্যতম মূল অভিযুক্ত বাকিবুর রহমান ওই হোটেলের মালিক বলে ইডির দাবি।
ইডি সূত্রের খবর, ওই হোটেলের জমির নথি যাচাই করা হয়েছে। রাজ্য সরকার ওই জমি বাকিবুরের সংস্থাকে হস্তান্তর করেছে। সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের আইনের অপপ্রয়োগও নজরে এসেছে বলে তদন্তকারী অফিসারদের দাবি। তাঁদের অভিযোগ, রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বাকিবুরকে ওই জমি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।
তদন্তকারীদের কথায়, কৈখালিতে বাকিবুরের একটি পানশালাও রয়েছে। সেখানকার জমির নথিও যাচাই করেও কিছু অনিয়ম চোখে পড়েছে। তবে সবকিছু পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই করা হচ্ছে।
তদন্তকারীদের দাবি, এক দিকে প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় বিভিন্ন রেশন ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটরদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে বাকিবুর প্রায় ১০ বছর বণ্টন দুর্নীতি চালিয়েছেন। পাশাপাশি ওই প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় দুর্নীতির কালো টাকা বেআইনি পথে সম্পত্তিতে বিনিয়োগ করেছেন। বাকিবুর বর্তমানে ইডির-ই হেফাজতে রয়েছেন।
এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, ‘‘আপাতত রাজ্যের দুই প্রভাবশালী মন্ত্রীর সঙ্গে বাকিবুরের যোগসূত্র স্পষ্ট হয়েছে। বাকিবুরের ঘন ঘন দুবাই যাতায়াতের সমস্ত নথি সংগ্রহ করা হয়েছে।’’ কেন তিনি এত ঘন ঘন দুবাই যেতেন, সেই বিষয়ে বাকিবুরকে জেরা করে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি করছেন তদন্তকারীরা।
ইডি সূত্রের দাবি, কলকাতা শহরে বাকিবুরের কৈখালিতে নিজের বাড়ি ও তাঁর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের রাজারহাটের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নথি যাচাই করা হচ্ছে। ওই সব নথি সামনে রেখেই নাকি বাকিবুরকে জেরা করা হচ্ছে বলে ইডি সূত্রের খবর।
তদন্তকারীদের দাবি, উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় একাধিক চালকল ও আটাকল রয়েছে। কলকাতার বিমানবন্দর-লাগোয়া এলাকায় ছ’তলা হোটেল রয়েছে। তা ছাড়া বেঙ্গালুরুতে রয়েছে আরও একটি হোটেল। কৈখালিতে পানশালা রয়েছে। এ সবের বাইরে বাকিবুরের ঘন ঘন দুবাই যাতায়াতও চিন্তায় ফেলেছে তদন্তকারী অফিসারদের।
বাকিবুরের সম্পত্তি ও তাঁর দুবাই যোগ খতিয়ে দেখতে গিয়েই প্রভাবশালী যোগ উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। অভিযোগ উঠেছে, আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি রয়েছে বাকিবুরের। তদন্তকারীদের আরও দাবি, বিদেশে বাকিবুরের বেআইনি আর্থিক লেনদেনের কিছু হদিসও নাকি পাওয়া গিয়েছে। তদন্তকারীদের কথায়, ২০১২ সালের পর থেকে বাকিবুরের সম্পত্তি প্রায় রকেটের গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাঁর পারিবারিক সদস্য ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের নামে সম্পত্তি কেনা হয়েছে। ইডি সূত্রের খবর, বাকিবুরের এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়কে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর নথিও উদ্ধার হয়েছে। ওই আত্মীয় লিখিত বয়ান দিয়ে জানিয়েছেন, তাঁর নামে সম্পত্তি হলেও টাকা বিনিয়োগ করেছেন বাকিবুর।
তদন্তকারীদের দাবি, এনপিজি গ্রুপ অব কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর তথা মালিক বাকিবুর। আর ওই সংস্থার নামেই অধিকাংশ সম্পত্তি এবং বিদেশি গাড়ি কেনা হয়েছে বলে ইডি সূত্রের দাবি।
প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে তদন্তকারীদের অনুমান, রেশন বণ্টন দুর্নীতির কালো টাকা হাওয়ালা মারফত দুবাইতে পাচার করা হয়েছে। তার পর সেখানে বেনামে সম্পত্তি কিনে বণ্টন দুর্নীতির কালো টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। ইডির দাবি, বাকিবুরকে জেরা করে রেশন বণ্টন দুর্নীতিতে বেশ কয়েক জন সরকারি আধিকারিক জড়িত রয়েছেন তথ্যসূত্র হাতে এসেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy